ঢাকা থেকে দুবাইগামী বাংলাদেশ বিমানের ছিনতাইকারী কথিত মাহাদীর পরিচয় মিলেছে। তার নাম মাহমুদ পলাশ (২৪)। নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের দুধঘাটা গ্রামের পি আর জাহানের ছেলে পলাশ।
এই ঘটনায় যখন দেশ জুড়ে আলোচনা সমালোচনার ঝড় ঠিক সেই মুহুর্তেই বেরিয়ে আসল থলের বিড়াল। নিহত সেই বিমান ছিনতাই চেষ্টাকারীর সাথে নায়িকা সিমলার ঘনিষ্ট ছবি সামাজিক যোগাযোক মাধ্যমে প্রকাশ পায়। ছবিটি ঘিরে শুরু হয়েছে মিডিয়া পাড়ায় ঝড়। ছবিতে দেখা যায় নিহত পলাশ ও চিত্রনায়িকা সিমলার হাস্যজ্জল মুখ।
এই ঘটনার বিবরণ জানিয়ে পিরোজপুর ৩নং ওয়ার্ড সদস্য (মেম্বার) মোঃ মজিবুর রহমান ভুইয়া বলেন, আমরা জানি নায়িকার সাথে তার সম্পর্ক ছিল। গত ৬ মাস আগে ওই নায়িকা এখানে ছিল। আমাদের গ্রামে ছিল অনেক দিন।
এমন ঘটনার সতত্যা নিশ্চিত করার জন্য চিত্রনায়িকা সিমলার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, ২০১১ সালের দিকে স্থানীয় তাহিরপুর দাখিল মাদ্রাসা থেকে দাখিল পাস করে। এরপর সোনারগাঁও ডিগ্রি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হলেও পড়াশোনা শেষ করতে পারেনি।
পলাশের বাবা ১৯৯০ সাল থেকে বিদেশে থাকতেন। প্রথমে কুয়েত এবং পরে সৌদি আরবে ছিলেন তিনি। প্রবাসী বাবার দেওয়া টাকা-পয়সা নিয়ে উচ্ছৃঙ্খল জীবন যাপন করতেন পলাশ। এর মধ্যে নাচগান থেকে শুরু করে চলচ্চিত্র শিল্পে জড়ান তিনি। কয়েকটি শর্টফিল্মও তৈরি করেন। একটা সময় বাসা ছেড়ে ঢাকায় চলে আসেন পলাশ। বাড়িতে তেমন যেতেন না। মাঝে মধ্যে টাকার প্রয়োজন হলে বাড়ি যেতেন বলে জানায় পরিবার।
পলাশের বাবা পি আর জাহান বলেন, গত ২০-২৫ দিন আগে বাড়িতে আসে পলাশ। সাধারণত বাড়িতে সে এত দিন থাকতো না। গত ২০-২৫ দিনে অনেকটা পাল্টে যায় সে। মসজিদে যাওয়া-আসা করে, এমনকি আজানও দিয়েছে।
তিনি জানান, গত শুক্রবার বাসা থেকে বিদায় নেওয়ার সময় তার মাকে বলে যায়- ভ্রমণ ভিসায় আমি দুবাই যাচ্ছি। তবে দুবাই যাওয়ার বিষয়ে বাবাকে কিছু বলেননি পলাশ।
পলাশের বাবা আরও জানান, প্রায় ১০ মাস আগে চিত্রনায়িকা সিমলাকে বাড়িতে নিয়ে আসে পলাশ। বাবা-মায়ের সঙ্গে তার পরিচয় করিয়ে দেয়। সিমলার সঙ্গে তাদের কথাও হয়।
তিনি বলেন, এক-দেড় মাসের ব্যবধানে দু’বার আসে পলাশ ও সিমলা। দ্বিতীয়বার এসে পলাশ বলেছে- আমি সিমলাকে বিয়ে করেছি। সিমলাও বিষয়টি স্বীকার করেছে।
পি আর জাহান বলেন, 'আমি সিমলাকে তখন বলেছি- তোমার সঙ্গে বয়সের এত ব্যবধান, কীভাবে আমার ছেলেটাকে বিয়ে করেছো? যাহোক বিয়ে যেহেতু করেই ফেলেছো, আমার ছেলেটা যাতে ভালো হয়ে যায় একটু খেয়াল রেখো।'
তিনি জানান, পলাশের মা রেনু আক্তারের সঙ্গে এরপর তিন মাসের মতো সিমলার কথাবার্তা ও যোগাযোগ হয়। পরে আর যোগাযোগ হয়নি। হয়তো সম্পর্ক ভেঙে গিয়েছিল।
পলাশের বাবা বলেন, বিমান ছিনতাইয়ের ঘটনার বিষয়ে প্রথমে তারা কিছুই জানতেন না। পরবর্তীতে তারা ফেসবুকের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পারেন।
তিনি বলেন, 'সোনারগাঁও থানার এসআই আবুল কালাম আজাদ রাতে তাদের বাসায় এসে একটি ছবি দেখিয়ে জানতে বলেন- এটা আপনার ছেলে কিনা। পরে দুবাই যাওয়ার বিষয়টি এবং ছবি মিলে যাওয়ায় পলাশের পরিচয় নিশ্চিত হই।'