চকবাজারের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ঢাকাবাসীর উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ঢাকা শহরের কোথাও যদি এ ধরনের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড হয় তাহলে উৎসুক জনতা হওয়ার পরিবর্তে এক বালতি পানি অথবা কিছু বালু নিয়ে ঘটনাস্থলে গেলে আগুন নেভাতে সহযোগিতা করতে পারবেন।
আজ শনিবার সকাল ১০টা ২৫ মিনিটে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিট পরিদর্শন শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে করে বলেছেন, যে ঘটনা ঘটেছে, তখন উদ্ধারকর্মীদের উদ্ধার কাজ না করতে দিয়ে তাকে ঠেকিয়ে রেখে প্রশ্নের পর প্রশ্ন করাটা সমীচীন নয়। এ বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক।
তিনি আরও বলেন, অফিস খোলার পর পার্লামেন্টে আলোচনা করে চকবাজারের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করা হবে। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা আর যাতে না ঘটে তার জন্য ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এর আগে দগ্ধ ও আহতদের খোঁজ-খবর নেন প্রধানমন্ত্রী। রোগী ও তার আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। এ ছাড়া ডাক্তারদের সঙ্গেও রোগীদের অবস্থা নিয়ে কথা বলেন।
এ সময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. জাহিদ মালেক স্বপন, প্রতিমন্ত্রী ড. মুরাদ হাসান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন, এমপি হাজী মো. সেলিম, ঢাকা মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক ডা. সামন্তলাল সেন, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) ডা. আবুল কালাম প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন।
বার্ন ইউনিট সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগে অনেক আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়েছি। আশা করি, যারা চিকিৎসাধীন আছেন তাদের চিকিৎসার কোনো অসুবিধা হবে না। যে ঘটনা ঘটেছে এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। তাৎক্ষণিকভাবে যতটা সম্ভব আমরা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে সহযোগিতা দিয়েছি।
তিনি বলেন, ঢাকা শহরে অনেক খাল ও পুকুর ছিল। এগুলো ভরাট করার কারণে যে কোনো স্থানে আগুন লাগলে পানি পাওয়াটাও বড় সংকট হয়ে দাঁড়ায়।
গত বুধবার সারা রাত জেগে থেকে আগুনের প্রতি মুহূর্তের খোঁজ-খবর নেন প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশও দেন তিনি। এ ছাড়া পরবর্তীতে নিহতদের পরিবারকে সহায়তা এবং আহতদের যথাযথ চিকিৎসা দেয়ার জন্য তিনি নির্দেশ দেন।
উল্লেখ্য, পুরান ঢাকার চকবাজারের চুড়িহাট্টার ওয়াহেদ ম্যানশনে বুধবার (২০ ফেব্রুযারি) রাতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। রাত ১০টা ৩৮ মিনিটে আগুনের সংবাদ পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় শুক্রবার সকাল পর্যন্ত মোট ৬৭ জন নিহত হয়েছেন। আহত ও দগ্ধ অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৪১ জন। এদের মধ্যে দু’জনকে নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়েছে। বাকিদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক।