মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু বলেছেন, বিশ্বের বৃহত্তম বঙ্গোপসাগরে ৪৭৫ প্রজাতির মাছসহ ৩৬ প্রজাতির চিংড়িমাছ এবং বিভিন্ন প্রকার অর্থনৈতিক ও জৈবগুরুত্বপূর্ণ সম্পদ রয়েছে। ২০১৭-১৮ সালে দেশের উৎপাদিত মোট ৪৩ লাখ ৩৪ হাজার মাছের মধ্যে সাড়ে ৬ লাখ মেট্রিক টনই এসেছে সমুদ্র থেকে, যা মোট মৎস্য উৎপাদনের ১৬ শতাংশ।
আজ মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং জাতিসংঘের 'ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশন' (FAO) এর যৌথ উদ্যোগে রাজধানী ঢাকার হোটেল সোনারগাঁওয়ে "বাংলাদেশ ব্রু ইকোনোমি ডায়ালগ অন ফিসিরিস অ্যান্ড লাইভস্টক" শীর্ষক দুদিনব্যাপী কর্মশালায় তিনি এসব কথা বলেন।
ব্লু-ইকোনমির বাস্তবায়নে বাংলাদেশ ইতিমধ্যেই পাইলট কান্ট্রি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর প্রচেষ্টায় ভারত ও মিয়ানমারের ১ লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গকিলোমিটার এলাকা বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় যুক্ত হয়েছে। এতে করে পরিবেশের ভারসাম্যরক্ষা, জলবায়ূর ক্ষতিকর প্রভাব থেকে উত্তরণ এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনে সামুদ্রিক সম্পদের গুরুত্ব ও অপার সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে।
খসরু বলেন, উপকূলীয় অঞ্চলের ৫ লক্ষাধিক জেলে প্রায় ৭০ হাজার যান্ত্রিক ও অযান্ত্রিক নৌযানের সহায়তায় জীবিকানির্বাহের সাথে-সাথে মৎস্য উৎপাদনে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে।
উপকূলীয় ও সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদের উন্নয়নে বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় মন্ত্রণালয় কর্তৃক ২৪০ মিলিয়ন মান ডলারের ‘সাসটেইনেবল কোস্টাল এন্ড মেরিন ফিশারিজ প্রজেক্ট’ শীর্ষক বৃহত্তম একটি প্রকল্প-গ্রহণের কথা উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী জানান, উপকূলীয় ও বঙ্গোপসাগরের জলজসম্পদ ও সুযোগ কাজে লাগাতে মন্ত্রণালয় নানামুখী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
আরভি মীন সন্ধানী নামক সমুদ্র গবেষণা ও জরিপ-জাহাজের মাধ্যমে সমুদ্রের চিংড়িসহ তলদেশীয় ও ওপরিস্থ মাছের জরিপের কাজও চলছে। ভারত, থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে মেরিকালচার লাভজনক হওয়ায় আমাদের দেশেও এই মেরিকালচারের প্রজনন-প্রযুক্তির গবেষণার মাধ্যমে মৎস্য-আহরণের সম্প্রসারণ ঘটানো জরুরি।
কর্মশালায় মূলপ্রবন্ধ পাঠ করেন FAO এর প্রতিনিধি জেকোলিন এল্ডার। মৎস্য ও প্রানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব রইছউল আলম মণ্ডলের সভাপতিত্বে এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন FAO এর বাংলাদেশের প্রতিনিধি রবার্ট ডৌলস সিম্পসন, পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের মেরিটাইম এফেয়ার্স ইউনিটের সচিব রিয়াল এডমিরাল (অব.) খুরশেদ আলম বিএন, নরওয়ের রাষ্ট্রদূত সিডসেল ব্লেকেন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব (ব্লু-ইকোনমি) তৌফিকুল আরিফ, মৎস্য অধিদফতরের ডিজি আবু সাইদ মোঃ রাশেদুল হক।