ভিসায় নতুন শর্ত আরোপ করায় অনেক মুসল্লির এবার বিশ্ব ইজতেমায় যোগ দেয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছেন তাবলিগ মুরব্বিরা। বিশেষ করে ভারতীয় ৬০ শতাংশ মুসল্লি এবার বিশ্ব ইজতেমায় অংশ নিতে পারবেন না।
আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ৪ দিনব্যাপী বিশ্ব ইজতেমা শুরু হচ্ছে টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে। একই ময়দানে আসন্ন ১৫-১৬ ফেব্রুয়ারি দু’দিন জোবায়েরপন্থী এবং ১৭-১৮ ফেব্রুয়ারি দু’দিন সাদপন্থীদের তত্ত্বাবধানে বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠানের জন্য নির্ধারণ করা হয়। তবে মাঠ প্রস্তুতির জন্য জোবায়েরপন্থীরা দায়িত্ব পালন করছেন।
ইজতেমার প্রস্তুতি কমিটির মুরব্বি ইঞ্জিনিয়ার মো. মাহফুজুর রহমান বলেন, বিশ্ব ইজতেমার বিদেশি মুসল্লিদের ভিসা দেয়ার ক্ষেত্রে বিভিন্ন শর্ত আরোপ করা হয়েছে। এত অল্প সময়ে সব শর্ত পূরণ করে মুসল্লিদের বিশ্ব ইজতেমায় অংশগ্রহণ প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া কোনো মুসল্লি টুরিস্ট ভিসায় ইজতেমায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। বিশ্ব ইজতেমায় যোগ দিতে বিদেশি মুসল্লিদের শর্ত সহজীকরণ না করলে মুসল্লি সংখ্যা কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, বিভিন্ন দেশ থেকে যারা অন-অ্যারাইভাল ভিসা পাবেন তাদেরকে তাবলিগের ক্ষেত্রে যেসব শর্ত দেয়া হয়েছে তা শিথিল করলে তাবলিগের মেহমান অনেক বেড়ে যাবে। ১০ শর্তে বিশ্ব ইজতেমার অনুষ্ঠানে জোবায়েরপন্থী এবং সা’দপন্থী তাবলিগ জামাতের মুরব্বিরা এবারের বিশ্ব ইজতেমায় অংশ নিতে রাজি হলেও জোবায়েরপন্থীরা সা’দ কান্ধলভির সঙ্গে তার ছেলে ইউসুফ কান্ধলভি ইজতেমায় অংশ নিক তাতে রাজি নন।
টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানে গিয়ে দেখা গেছে, মাওলানা জুবায়েরপন্থীদের নেতৃত্বে বিভিন্ন শ্রেণী ও পেশার লোকজন স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে প্যান্ডেল নির্মাণের কাজ শুরু করেছেন। কেউ বিদ্যুতের লাইন টানছেন, কেউ চট টানাচ্ছেন, কেউ খুঁটি পুঁতছেন। সেখানে সাদপন্থী কাউকে দেখা যায়নি। ১৫ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ইজতেমা শুরুর আগেই মাঠের প্রস্তুতির কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন জোবায়েরপন্থী মুরব্বি মেজবাহ উদ্দিন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাদপন্থী এক শীর্ষ মুরব্বি জানিয়েছেন, ইজতেমা ময়দানের প্রস্তুতি কাজে সাদপন্থীরাও অনুমতি পেলে কাজ দ্রুত সম্পন্ন করা সম্ভব হতো। ইজতেমা শুরুর আগে এই ক’দিনে বিরাট ময়দানের প্রস্তুতি তাদের পক্ষে সম্পন্ন করা সম্ভব না-ও হতে পারে।
তাবলিগের ভিসার ব্যাপারে তিনি জানান, সাদ ও জোবায়েরপন্থী উভয় মার্কাজের পক্ষ থেকে স্পন্সর করার বিষয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত হয়েছে। এতে ভারতের মুসল্লিদের টঙ্গী ইজতেমায় আগমনে কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়। তবে সাদ কান্ধলভি না এলে ভারত থেকে এমনিতেই অনেক মুসল্লির ইজতেমায় যোগ না দেয়ার আশঙ্কা রয়েছে।