মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু বলেছেন, মেধাবী জাতি গড়তে হলে প্রাণিজ আমিষের বিকল্প নেই। এজন্য গবেষণা কার্যক্রমকে আরো জোরদার করতে হবে।
বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএলআরআই) আয়োজিত “Experience Sharing on Research Achievement of Scavenging (Deshi) Poultry Conservation and Development Project” শীর্ষক দিনব্যাপী কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
কর্মশালায় বক্তারা বলেন, দেশ খাদ্যে স্বয়ম্পূর্ণ হলেও প্রাণিজ আমিষের চাহিদায় এখনো ঘাটতি রয়েছে। তাই গবেষণার অভিজ্ঞতার মাধ্যমে নতুন নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করে এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হবে। সার্বিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে আন্ত:ইনস্টিটিউট গবেষণা কার্যক্রমের সমন্বয় থাকা একান্ত জরুরি।
তারা বলেন, পোল্ট্রি সেক্টরের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে প্রযুক্তি উদ্ভাবনে গবেষণাধর্মী কর্মসূচি হাতে নেয়ার প্রয়োজনের ওপর তারা জোর দেন। ইতিমধ্যে বিএলআরআই উদ্ভাবিত বেশকিছু প্রযুক্তি প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে, যা মাঠপর্যায়ে সম্প্রসারণও করা হচ্ছে বলে কর্মশালায় জানানো হয়।
বিএলআরআই কর্তৃক উন্নয়নকৃত দেশি মুরগীর জাত ডিম ও মাংসের চাহিদাপূরণে ভূমিকা রাখবে বলে তারা আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, স্বল্পজায়গায় অধিক নিরাপদ আমিষের উৎপাদনবৃদ্ধির লক্ষ্যে অঞ্চলভিত্তিক সমস্যানিরুপন করে নতুন-নতুন গবেষণাকার্যক্রম গ্রহণ করা বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত জরুরি ও প্রয়োজনীয়।
প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. নাথু রাম সরকারের সভাপতিত্বে কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু এমপি এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন দুর্যোগব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান এমপি।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ রইছউল আলম মণ্ডল, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. হীরেশ রঞ্জন ভৌমিক, সদ্যসমাপ্ত 'দেশী মুরগি সংরক্ষণ ও উন্নয়ন প্রকল্প' এর প্রকল্পপরিচালক শাকিলা ফারুক।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, মেধাবী জাতি গড়তে হলে প্রাণিজ আমিষের বিকল্প নেই। এজন্য গবেষণা কার্যক্রমকে আরো জোরদার করা হবে। প্রাণিসম্পদখাতের অব্যাহত প্রচেষ্টায় এ পর্যন্ত প্রাণিসম্পদখাতে প্রত্যক্ষভাবে ২০% এবং পরোক্ষভাবে ৫০% লোকের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে। গবেষণালব্ধ অভিজ্ঞতায় নতুন-নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবনের মাধ্যমে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় করতে হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি দেশিজাতের গরু, ছাগল, ভেড়া প্রভৃতির কৌলিক মান উন্নয়ন করা হয়েছে উল্লেখ করে আশাপ্রকাশ করেন, বিএলআরআই দেশের আবহাওয়ার সাথে মিল রেখে ব্রয়লার মুরগি, টার্কি এবং হাঁসের জাত উদ্ভাবন ও সংরক্ষণ, খাদ্যপ্রযুক্তি, ভ্যালু এডিশন, বর্জ্যব্যবস্থাপনা, ডিম-মাংস ও দুধ প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং সংরক্ষণসহ স্বাস্থ্যব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। তিনি পশুপাখির রোগপ্রতিরোধের জন্য উন্নতমানের ভ্যাক্সিন এবং দেশেই পর্যাপ্ত ভ্যাক্সিন উৎপাদনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার কথাও তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার শিক্ষক, বিজ্ঞানী ও সম্প্রসারণকর্মীগণ উপস্থিত ছিলেন।