Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১০ শনিবার, মে ২০২৫ | ২৬ বৈশাখ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র আল-কায়েদা, আইএসকে সরবরাহ করেছে সৌদি, আমিরাত

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ০৬:০১ PM
আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ০৬:০১ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি অস্ত্র ইয়েমেনে আল-কায়েদার সঙ্গে সম্পৃক্ত বিভিন্ন দল এবং সালাফি জিহাদীদের সরবরাহ করেছে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএনের অনুসন্ধানে এসব তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানানো হয় একটি প্রতিবেদনে।

সালাফিদের নেতা একসময় আইএসের ইয়েমেন শাখার হয়ে লড়াই করেছিলেন।

কাতারের সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার আগের একটি প্রতিবেদনকে সমর্থন করে সিএনএনের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিনীদের অস্ত্র হুথি বিদ্রোহীদের হাতেও পৌঁছেছে। হুথিরা সিরিয়ার নিয়ন্ত্রণ নেয়ার জন্য সৌদি ইয়েমেন জোট বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করছে।

সৌদি আরব ও আরব আমিরাত জোট ২০১৫ সালে ইয়েমেনের যুদ্ধে সামরিক হস্তক্ষেপ শুরু করে । দেশ দু’টি হাদির সমর্থক ও হুথি বিদ্রোহীদের মধ্যে গৃহযুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার পর আন্তর্জাতিক ভাবে স্বীকৃত মনসুর হাদির সরকারকে ফের ক্ষমতায় বসানোর চেষ্টা করে।

কিন্তু সিএনএন বলছে, জোট বাহিনী যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি অস্ত্রকে মুদ্রার মতো ব্যবহার করে জিহাদী গোষ্ঠী ও উপজাতিদের আনুগত্য কিনে নিচ্ছিল। তারা বাছাই করা কিছু সশস্ত্র দলকে শক্তিশালী এবং জটিল একটি রাজনৈতিক এলাকাকে প্রভাবিত করছিল, বলেন স্থানীয় কমান্ডার ও বিশ্লেষকরা।

পেন্টাগনের মতে সৌদি আরব ও আমিরাতের রাজপরিবারগুলো ওয়াশিংটনের সঙ্গে স্বাক্ষরিত অস্ত্রচুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করেছে।

একজন মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা সিএনএনকে বলেন, এ বিষয়ে একটি তদন্ত চলছে।

তাইজের যুদ্ধক্ষেত্রের পরিস্থিতি উল্লেখ করে সিএনএন জানায়, আল-কায়েদা সৌদিপন্থি জিহাদীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলে একসঙ্গে যুদ্ধ করছিল।

আবু আল আব্বাস ব্রিগেডের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি ওশকশ সাঁজোয়া যান ছিল। ২০১৫ সালে শক্তি প্রদর্শন করতে এগুলো শহরের মাঝখান দিয়ে চালিয়ে নেয়া হয়।

একটি জিহাদী গোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা আবু আল আব্বাসের ওপর ২০১৭ সালে যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। আব্বাস আল-কায়েদা ও আইএসের ইয়েমেন শাখাকে অর্থ যোগান বলে অভিযোগ রয়েছে।

ডিসেম্বরে এক সাক্ষাৎকারে আব্বাস মার্কিন পত্রিকা ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেন, ‘জোট বাহিনী এখনও আমাকে সমর্থন করছে। আমি সত্যিই সন্ত্রাসী হলে ওরা আমাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যেত।’

সিএনএনের মতে এই গোষ্ঠী এখনও সৌদি জোট বাহিনীর সমর্থন পাচ্ছে এবং তাদেরকে জোট সমর্থিত ইয়েমেনের সেনাবাহিনীর ৩৫তম ব্রিগেডের সঙ্গে একীভূত করে ফেলা হয়েছে।

‘আমাদের অস্ত্র ইয়েমেনের ভিতরে কোনও দলকে পুনরায় স্থানান্তর করার অনুমতি সৌদি আরব ও আরব আমিরাতকে দেয়নি যুক্তরাষ্ট্র,’ সিএনএনকে বলেন পেন্টাগনের মুখপাত্র জনি মাইকেল।

এবিষয়ে তদন্ত চলতে থাকায় সরকারের পক্ষ থেকে মিত্র দেশগুলোর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পর্কে মন্তব্য করা এখনও সম্ভব নয় বলে জানান তিনি।

সিএনএন আরও জানায় যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি অস্ত্র হুথি বিদ্রোহীদের হাতেও পৌঁছেছে।

২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে হুথি নিয়ন্ত্রিত একটি টিভি চ্যানেলে মোহাম্মদ আলি আল-হুথি নামে এক উচ্চ পর্যায়ের হুথি নেতার ছবি প্রচার করা হয়। ছবিতে দেখা যায় তিনি শত্রু পক্ষের কাছ থেকে জব্দ করা একটি মার্কিন সাঁজোয়া জানের চালকের আসনে বসে আছেন, পিছনে আমেরিকা বিরোধী শ্লোগান শোনা যাচ্ছে।

সিএনএন আরেকটি ছবি পেয়েছে যাতে দেখা যায়, আরেকটি মাইন নিরোধক এমআরএপি সাঁজোয়া যানের সিরিয়াল নাম্বার রয়েছে একজন হুথি কর্মকর্তার হাতে। ছবিটি গত বছর হুদাইদায় তোলা হয়েছিল।

২০১৪ সালে আমিরাত ২৫০ কোটি ডলার মূল্যের যেসব অস্ত্র কিনেছিল তার মধ্যে ছিল এই সাঁজোয়া যানগুলো।

বিক্রির শর্তে লেখা ছিল, ‘স্পর্শকাতর এসব প্রযুক্তিকে গ্রাহক দেশ যুক্তরাষ্ট্রের মতোই সুরক্ষিত রাখতে পারবে তা নিশ্চিত হওয়া গেছে’।

এমআরএপি সাঁজোয়া যানগুলো এখনও হুথিদের হাতে রয়েছে বলে সিএনএনকে নিশ্চিত করেছেন হুথির পলিটিকাল কাউন্সিলের সদস্য হিরাম আল আসাদ।

সৌদি ও আমিরাতকে সবচেয়ে বেশি অস্ত্র সরবরাহ করে যুক্তরাষ্ট্র। ইয়েমেনে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের লড়াইয়ে মার্কিন সমর্থন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথম বিদেশ সফরে গিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সৌদি আরবের সঙ্গে ১১ হাজার কোটি ডলারের অস্ত্র বিক্রির চুক্তি স্বাক্ষর করেন।

সৌদি আরব অত্যাধুনিক মার্কিন অস্ত্র কেনার মতো দায়িত্বশীল কিনা সেই বিষয়ে নতুন করে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে সিএনএনের এই প্রতিবেদনের পর।

ইয়েমেনে হস্তক্ষেপ শুরুর পর থেকে সৌদির ১৮ হাজারেরও বেশি বিমান হামলার এক তৃতীয়াংশ বমাই আঘাত হেনেছে বেসামরিক লক্ষ্যে।

অন্যদিকে সাংবাদিক জামাল খাসোগির হত্যাকাণ্ডের পর রিয়াদকে সহায়তা দেয়া বন্ধ করার জন্য চাপ বাড়ছে ট্রাম্পের প্রশাসনের ওপর।

Bootstrap Image Preview