বিদেশে থাকা বাংলাদেশিদের ভোগান্তির কথা চিন্তা করে দেশগুলোতে থাকা বাংলাদেশের দূতাবাসগুলো ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখার কথা বলছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
শনিবার বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে আয়োজিত এক বিতর্ক প্রতিযোগিতায় বক্তব্য রাখেন তিনি। এ সময় রফতানি ও শ্রমবাজার সম্প্রসারণে দূতাবাসগুলোকে মূখ্য ভূমিকা পালন করার তাগিদ দেন পরিকল্পনামন্ত্রী।
বিদেশে বাংলাদেশের দূতাবাসগুলোকে শ্রমিকবান্ধব হতে হবে বলে মন্তব্য করে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘অভিবাসীদের কল্যাণে দূতাবাসগুলো কাঙ্ক্ষিত সেবা দিচ্ছে না। আমাদের দূতাবাসগুলোকে আরও অভিবাসীবান্ধব হতে হবে। একইসঙ্গে দূতাবাসগুলোকে ২৪ ঘণ্টা প্রবাসীদের সেবা দেওয়া উচিৎ। এ জন্য দূতাবাসে কর্মরতদের আরও বেশি সেবমূলক মনোভাব নিয়ে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। বর্তমান সরকার বিদেশ গমনইচ্ছুক ও প্রবাসীদের কল্যাণে নানামুখি উদ্যোগ নিয়েছে।’
পরিকল্পনামন্ত্রী আরও বলেন, দূতাবাসগুলো হবে শ্রমিক বাজারের প্রধানকেন্দ্র। আমাদের রফতানি বাজারের প্রধান অফিস। মধ্যপ্রাচ্যের যে সব দেশে বাংলাদেশি শ্রমিকেরা আছেন ২৪ ঘণ্টা সেসব দেশের অ্যাম্বাসি অফিস খোলা রাখতে হবে।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান আরও বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে নারীকর্মী পাঠানো স্পর্শকাতর একটি বিষয়। ভবিষ্যতে বাস্তবতার আলোকে এ বিষয়ে নতুন করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। অন্যান্য দেশের সঙ্গে সমন্বয় করে আমাদের প্রবাসী কর্মীদের বেতন নির্ধারণ করতে হবে। একইসঙ্গে প্রশিক্ষিত ও দক্ষ কর্মী প্রেরণে আমাদের জোর দিতে হবে।
এদিকে বাংলাদেশি শ্রমিকদের কয়েক মাসের বেতন বকেয়া বিষয়ে দেশটির লেসকো কোম্পানির মালিককে কুয়েতে বাংলাদেশ দূতাবাসে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। বৈঠকে ওই কোম্পানি ৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বেতন পরিশোধ ও আকামা নবায়নসহ সকল সমস্যা সমাধানে রাজি হয়।
বৈঠক শেষে কোম্পানির মালিকপক্ষ বের হয়ে এলে শ্রমিকদের রোষানলে পড়ে। এ সময় বাংলাদেশি শ্রমিকদের আক্রমণে কুয়েতে বাংলাদেশ দূতাবাসের কাউন্সেলরসহ তিনজন আহত হয়। এমন পরিস্থিতি যাতে আর কোথায়ও না ঘটে সেজন্য বিদেশে বাংলাদেশের সকল দূতবাস ও প্রবাসীদের আহ্বান জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন সংশ্লিষ্টদের এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার জন্য তাগিদ দিয়েছেন। কুয়েতের মতো পরিস্থিতি যেন বিদেশে বাংলাদেশের কোনো দূতাবাসে আর না ঘটে সেজন্য সতর্কও করেছেন। খবর ইউএনবির
প্রসঙ্গত, কুয়েতের লেসকো কোম্পানিতে কর্মরত বাংলাদেশি শ্রমিকদের আক্রমণে কুয়েতে বাংলাদেশ দূতাবাসের কাউন্সেলরসহ তিনজন আহত হয়। স্থানীয় পুলিশ আসার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। এসময় বেশ কিছু সংখ্যক শ্রমিককে পুলিশ গ্রেফতার করে।
ইতোমধ্যে কুয়েতে বাংলাদেশ দূতাবাস ও বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে তাদেরকে দ্রুত মুক্ত করার পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।