শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান বলেছেন, ‘দ্রুত সমস্যা সমাধান করা হবে। মজুরি কাঠামোতে কোনো আসামঞ্জস্যতা থাকলে তা দূর করা হবে।’
আজ বৃহষ্পতিবার সকালে প্রথম সভায় বসছে মজুরি পর্যালোচনা কমিটি। চলমান শ্রমিক অসন্তোষ নিয়ে বুধবার রাতে রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউতে ন্যাম ভবনে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
নতুন মজুরি কাঠামোতে বৈষম্য রয়েছে দাবি করে ঢাকা, গাজীপুর, আশুলিয়া, সাভারসহ বিভিন্ন স্থানে আন্দোলন করে আসছে পোশাক শ্রমিকরা। এই প্রেক্ষাপটে মঙ্গলবার শ্রম ভবনে সরকার-মালিক-শ্রমিক সমন্বয়ে ত্রিপক্ষীয় জরুরি বৈঠক হয়। সেখানে শ্রম প্রতিমন্ত্রী ছাড়াও বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি উপস্থিত ছিলেন।
সভায় মালিক পক্ষের ৫ জন, শ্রমিক পক্ষের ৫ জন এবং বাণিজ্য সচিব ও শ্রম সচিবকে নিয়ে মোট ১২ সদস্যের কমিটি করা হয়। এ কমিটি আগামী এক মাসের মধ্যে মজুরির অসঙ্গতিগুলো খতিয়ে দেখবে এবং সমস্যা সমাধানে পদক্ষেপ নেবে।
কিন্তু বুধবারও শ্রমিক অসন্তোষ অব্যাহত থাকে। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে একজন শ্রমিক নিহত হওয়ার খবরও এসেছে গণমাধ্যমে। বিভিন্ন স্থানে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে পোশাক কারখানা। তাই রাত ৯টার দিকে জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডাকেন শ্রম প্রতিমন্ত্রী।
মজুরি পর্যালোচনা কমিটি গঠনের কথা জানিয়ে মন্নুজান সুফিয়ান বলেন, ‘বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সহ মালিক শ্রমিক ও অন্যান্য স্টেক হোল্ডার যারা আছেন তারা এই কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত। তারা আগামীকাল প্রথম সভা করার দিন ধার্য করেছেন। বিকেল ৩টায় এই সভা হবে।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সকলের কথা ধৈর্য সহকারে শোনা হবে। শুনে যদি বেতন কাঠামোতে বেসিক বা গ্রসে কোনো অসামাঞ্জস্যতা থেকে থাকে তবে অবশ্যই মেটানো হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা দ্রুত সমস্যার সমাধান করতে চাচ্ছি। যে সমস্যা দেখা দিয়েছে, তা যোগ-বিয়োগের কোনো ভুল থাকতে পারে, মিটিংয়ে এসব বিষয় যাচাই-বাছাই করে সমস্যার সমাধান সম্ভব।’
শ্রমিক অসন্তোষের পেছনে কোনো তৃতীয়পক্ষ কলকাঠি নাড়ছে অভিযোগ করে শ্রমিকদের উদ্দেশে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ভাঙচুরে সমাধান আসবে না। আপনারা কাজে ফিরুন।’
বর্তমান সরকারের শেষ সময়ে পোশাক শ্রমিকদের নতুন ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করা হয় আট হাজার টাকা। গত ডিসেম্বর মাস থেকে এই মজুরি কার্যকর ধরা হয়েছে।
কিন্তু এরপর থেকেই অসন্তোষ সৃষ্টি হয় শ্রমিকদের মধ্যে। আগের শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু জানিয়েছিলেন, সাতটি গ্রেডের সব গ্রেডেই সর্বনিম্ন মজুরি বৃদ্ধির হার ৫১ শতাংশ। বিভিন্নভাবে ব্যাখ্যা দিয়ে শ্রমিকদের মধ্যে অসেন্তোষ সৃষ্টির চেষ্টা করছে।