Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৯ সোমবার, মে ২০২৫ | ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

১৫ জানুয়ারী থেকে শুরু হচ্ছে তিস্তা ব্যারেজের সেচ কার্যক্রম

এম এ মোমেন, নীলফামারী প্রতিনিধিঃ 
প্রকাশিত: ০৭ জানুয়ারী ২০১৯, ০১:২১ PM
আপডেট: ০৭ জানুয়ারী ২০১৯, ০১:২১ PM

bdmorning Image Preview


চলতি রবি ও খরিপ-১ মৌসুমে দেশের সর্ববৃহৎ তিস্তা ব্যারেজ সেচ প্রকল্প সেচ কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে। আগামী ১৫ জানুয়ারী সেচ প্রকল্পটির কমান্ড এলাকায় আনুষ্ঠানিকভাবে সেচ কার্যক্রমের উদ্ধোধন করা হবে বলে। তিন জেলা নীলফামারী, রংপুর ও দিনাজপুরে ২৯ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে সেচ প্রদানের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। 

সেচ নির্ভর বোরো আবাদে তিস্তার পানির ব্যাপক চাহিদা। আর অন্যদিকে উজানের পানি প্রবাহের উপর উত্তরাঞ্চলের হাজার হাজার কৃষকের ভাগ্য সেচের উপর নির্ভর করে। বর্তমানে উজানের জোয়ারে তিস্তা পানি প্রবাহ রয়েছে পাঁচ হাজার কিউসেক।

সরেজমিনে গেলে নদী অববাহিকার জেলে ও নৌকা মাঝিরা বলছে নদীতে ভালই পানি আসছে। শুস্ক মৌসুমে উজান হতে পানি প্রাপ্তিতায় নদীজুড়ে চলছে স্রোতধারা। গত এক পক্ষকাল হতে নদীতে পানির গড় হিসাব ছিল দেড় হাজার কিউসেক। যা বুধবার(২ জানুয়ারী) হতে বৃদ্ধি পেয়ে দাড়িয়েছে ৫ হাজার কিউসেক। 

তিস্তা ব্যারাজ সেচ প্রকল্পের কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা রাফিউল বারী জানান, চলতি রবি ও খরিপ-১ মৌসুমে তিস্তা ব্যারেজ থেকে আগামী ১৫ জানুয়ারি হতে আনুষ্ঠানিকভাবে সেচ প্রদান কার্যক্রম শুরু করা হবে। সেচ প্রদানের কমান্ড এলাকা তৈরি রয়েছে ৭৯ হাজার হেক্টর। উজানের পানি প্রাপ্তিতার উপর নির্ভর করবে আমরা কতখানী এলাকায় সেচ দিতে পারবো।

তিনি বলেন, এরপরেও চলতি মৌসুমে নীলফামারী, রংপুর ও দিনাজপুর জেলায় ২৯ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে সেচ প্রদানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এরমধ্যে নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলা ৫ হাজার হেক্টর, জলঢাকা উপজেলায় ৮ হাজার হেক্টর ও নীলফামারী জেলা সদরে ৭ হাজার হেক্টর, কিশোরীগঞ্জ উপজেলায় ৫ হাজার হেক্টর, সৈয়দপুর উপজেলায় ২ হাজার হেক্টর, রংপুর জেলার গঙ্গাচরা উপজেলায় ৩ হাজার হেক্টর ও দিনাজপুর জেলার খানসামা এবং চিরিরবন্দর উপজেলায় ১ হাজার ৫০০ হেক্টর।

তিনি আরো জানান, বর্তমানে নদীতে উজানের পানির যে জোয়ার রয়েছে এই জোয়ার অব্যাহত থাকলে আমরা ৫০ হাজার হেক্টর জমি পর্যন্ত সেচ দিতে সক্ষম হবো। পানির জোয়ার আরো বৃদ্ধি পেলে কমান্ড এলাকার ৭৯ হাজার হেক্টর জমি সেচ দেয়া হতে পারে। 

সূত্র মতে, তিস্তায় যখন পূর্ণমাত্রায় পানি আসত তখন শুষ্ক মৌসুমে প্রায় ৬৫-৭০ হাজার হেক্টর জমিতে ধান চাষ করতো কৃষকরা। সাধারণভাবে ধান চাষ করলে যে ব্যয় হয়, সেচ প্রকল্পের সুবিধা নিয়ে সেই ধান চাষ করলে ব্যয় হয় অনেকাংশে কমে যায়। এছাড়া ধানের ফলনও হয় বেশি। উত্তরের জীবনের জন্য তিস্তার পানির কোনো বিকল্প নেই।

বিগত বছরের এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০১৪ সালে সেচ নির্ভর রবি ও খরিপ-১ মৌসুমে নীলফামারী, রংপুর ও দিনাজপুর জেলায় ৬৫ হাজার ৫শত হেক্টর জমিতে সেচ প্রদানের লক্ষ্যমাত্রা ছিল, কিন্তু সেখানে তিস্তা নদীর পানির অভাবে সেচ প্রদান সম্ভব হয়েছিল মাত্র ২৫ হাজার হেক্টর জমিতে। ২০১৫ সালে ৩৭ হাজার ৫শত হেক্টর জমি সেচের আওতায় থেকে কমিয়ে আনা হয়েছিল ২৮ হাজার ৫শ হেক্টর জমিতে। কিন্তু পানি কম থাকার কারণে সেচ সরররাহ করা হয়েছে ৮ হাজার ৩২০ হেক্টর জমিতে। এবার সেচ ক্যানেলগুলো পানিতে ভরে আছে ক্যানেলে এমন পানি থাকলে এবার বোরো ধান আবাদে কৃষকদের কোন দুঃশ্চিন্তা থাকবে না। কিন্তু এমন পানি আদৌ থাকবে কিনা এমন আশংঙ্কাও রয়েছে।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, তিস্তায় এবার উজানের জোয়ার ভালই রয়েছে। এই জোয়ার অব্যাহত থাকলে আমরা টার্গেটের বেশি জমিতে সেচ দেয়া সম্ভব হবে।
 

Bootstrap Image Preview