সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের মৃত্যুতে শোকাহত হয়ে পড়েছেন তাঁর দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সহযোদ্ধারা। তারা বলছেন, নির্মোহ, পরিচ্ছন্ন ব্যক্তিত্বের অধিকারী সৈয়দ আশরাফ দুঃসময়ে ঢাল হয়ে আগলে রেখেছিলেন দলকে।
পরিছন্ন রাজনীতিবিদ হিসেবে যিনি সবার কাছে, সব রাজনৈতিক দলের কাছে সমাদৃত ছিলেন সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। কথা ছিল সুস্থ হয়ে দেশে ফিরে আবারও সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেবেন তিনি। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার রাত ১০টায় ফুসফুসের ক্যান্সারে ব্যাংককের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৬৮ বছরে মারা যান তিনি।
জাতীয় চার নেতার একজন সৈয়দ নজরুল ইসলামের ছেলে ৫ বারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফ ছিলেন নির্মোহ, মৃদুভাষী, সুদক্ষ এবং পরিচ্ছন্ন একজন রাজনীতিবিদ। রাজনীতির মাঠে কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি হলেও নিজেকে সর্বদাই রেখেছিলেন এসবের অন্তরালে।
সৈয়দ আশরাফের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, পার্টির বাইরেও বিভিন্ন দল, শ্রেণি-পেশার মানুষ সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের নামটি শ্রদ্ধার সঙ্গে উচ্চারণ করছে।
মোহাম্মদ নাসিম বলেন, তিনি নিষ্ঠাবান, সৎ ও নির্লোভ একজন মানুষ ছিলেন। আমির হোসেন আমু বলেন, তিনি সবাইকে সাথে নিয়ে কাজ করতে জানতেন, সবার কাছেও তার গ্রহণযোগ্যতা ছিল।
স্বাধীনতার স্বপক্ষের দল আওয়ামী লীগের দুইবারের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক হওয়ার আগে ও পরে দল যখনই দুর্যোগ-দুর্বিপাকে পড়েছে তখনই প্রাচীরের মতো সামনে দাঁড়িয়েছেন তিনি।
কামরুল ইসলাম বলেন, সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে যখন মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার করা হয়, আওয়ামী লীগের অনেক নেতাই তখন কারাগারে। তখন তিনি যেভাবে শক্ত হাতে দলের হাল ধরেছিলেন, তা অবিস্মরণীয়।
আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, তিনি শুধু নেতৃত্ব দেন নাই, আওয়ামী লীগের সমস্ত নেতা কর্মীর কাছে তিনি ছিলেন ভরসার জায়গা। তরুণ রাজনীতিবিদদের কাছে অনুকরণীয় হয়ে থাকবেন একজন আশরাফ।
হাসানুল হক ইনু বলেন, সৈয়দ আশরাফ কখনও পদের পেছন ঘোরেননি, অর্থ বা ক্ষমতার পেছনে ছোটেননি। রাশেদ খান মেনন বলেন, নিজেকে জাহির করার প্রবণতা সৈয়দ আশরাফের কখনোই ছিল না। নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, মানুষের দেয়া দায়িত্বকে তিনি নিজের কাজ বলে মনে করেছেন। মানুষের জন্য তার ছিল ভালোবাসা, দরদ ও নিষ্ঠা।
আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, নবীন প্রজন্মের কাছে আবেদন, সৈয়দ আশরাফের মতো নির্লোভভাবে দেশকে কিছু দেয়ার কথা যেন অন্যান্যরাও চিন্তা করেন।
কীর্তিমানদের জীবনে মৃত্যুই শেষ কথা নয়। নশ্বর জীবনে প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির বাইরে অবিনশ্বর কর্মে তারা বেঁচে থাকেন কোটি মানুষের মনে। তেমনি বেঁচে থাকবেন বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ সৈয়দ আশরাফ।