থিসারা পেরেরার বিধ্বংসী ইনিংসও জয় এনে দিতে পারল না সিংহলীদের। শনিবার নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৭৪ বলে ১৪০ রানের দানবীয় ইনিংস খেলেও ‘ট্র্যাজিক হিরো’ রয়ে গেলেন এই শ্রীলঙ্কান অল-রাউন্ডার। ফল যা হবার তাই হল। প্রথম ম্যাচের পর সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ হেরেও ওয়ান ডে সিরিজ হাতছাড়া হল দ্বীপ রাষ্ট্রের।
বে ওভালে দ্বিতীয় ওয়ান ডে-তে কিউয়িদের ছুঁড়ে দেওয়া ৩২০ রানের জবাবে একসময় ১২৮ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে কোণঠাসা হয়ে পড়ে শ্রীলঙ্কা। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে থিসারার অনবদ্য ইনিংস এক সময় জয়ের দিশা দেখায় সফরকারী দলকে। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। ৮টি চার ও ১৩টি ছয়েও দলকে জয় এনে দিতে ব্যর্থ হন এই শ্রীলঙ্কান অল-রাউন্ডার। তবে হেনরির ডেলিভারিতে বোল্টের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যাওয়ার আগে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে কোনও ব্যাটসম্যান হিসেবে দ্রুততম শতরান উপহার দিয়ে যান পেরেরা।
পেরেরা ছাড়া শ্রীলঙ্কার হয়ে এদিন ব্যাট হাতে সফল কেবল গুণাথিলাকা। এই ওপেনারের ব্যাট থেকে ৭১ রান এলেও একসময় তাসের ঘরের মত ভেঙে পড়তে থাকে লঙ্কান ব্যাটিং লাইন-আপ। সেখান থেকে একার কাঁধে দায়িত্ব তুলে নেন পেরেরা। ইশ সোধির অন্তিম ওভারে দুটি ছয় সহ ২০ রান তুলে নেন তিনি। সেইসঙ্গে ২৮ বলে অর্ধশতরান সম্পূর্ণ হয় তাঁর। পেরেরার পরের ৫০ রান আসে ২৯ বল থেকে।
অর্থাৎ মাত্র ৫৭ বলে কেরিয়ারের প্রথম ওয়ান ডে শতরান তুলে নেন এই শ্রীলঙ্কান। সেইসঙ্গে এক ইনিংসে সর্বাধিক ছক্কার নিরীখে নিজেকে চতুর্থস্থানে তুলে আনলেন তিনি। যদিও দেশোয়ালি সনথ জয়সূর্যকে টপকে শ্রীলঙ্কান ব্যাটসম্যান হিসেবে তালিকার শীর্ষে উঠে এলেন তিনি। এর আগে শ্রীলঙ্কান ব্যাটসম্যান হিসেবে এক ইনিংসে ১১টি ছয় হাঁকিয়ে শীর্ষে ছিলেন জয়সূর্য।
৪৬.২ ওভারে ব্যক্তিগত ১৪০ রানে পেরেরা আউট হতেই যবনিকা নামে শ্রীলঙ্কান ইনিংসে। তবে টেল এন্ডারদের নিয়ে তাঁর লড়াই বহুদিন মনে রাখবেন ক্রিকেট অনুরাগীরা। বে ওভালে এদিন প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৩১৯ রান তোলে কিউয়িরা। ওপেনার মুনরোর ৮৭, টেলরের ৯০ নিউজিল্যান্ডকে বড় স্কোর করার ভিত গড়ে দেয়। প্রথম ম্যাচের ধারা বজায় রেখে শেষদিকে ঝড় তোলেন নিশাম। তাঁর ৩৭ বলে ৬৪ রানে বড় স্কোর নিশ্চিত হয় কিউয়িদের।
জবাবে শুরু থেকেই বোল্ট-সোধিদের দাপটে নড়বড়ে দেখায় শ্রীলঙ্কান টপ অর্ডার ব্যটসম্যানদের। নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট হারাতে থাকায় বড় রান তাড়ার মত প্রয়োজনীয় বড় রানের পার্টনারশিপ তৈরি হয়নি শ্রীলঙ্কার। তাই শুরুর দিকে গুণাথিলাকা এবং শেষের দিকে টেল এন্ডারদের নিয়ে পেরেরার অসামান্য ইনিংসেও জয় অধরা রয়ে যায় শ্রীলঙ্কার। ২১ রানে হেরে তিন ম্যাচের সিরিজে ০-২ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ল শ্রীলঙ্কা। অন্যদিকে পেরেরা তান্ডবেও জয় আটকালো না কিউয়িদের। টানা দু’ম্যাচ জিতে সিরিজ মুঠোয় নিয়ে নিল তারা।