নোয়াখালীর সুবর্ণচরে ঘরে ঢুকে স্বামী-সন্তানদের বেঁধে পিটিয়ে আহত করে তাদের সামনে গৃহবধূকে গণধর্ষণের ঘটনায় ক্ষুব্ধ, উদ্বিগ্ন ও মর্মাহত হয়েছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন।
আজ শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘এ ঘটনায় গণতন্ত্র ও মৌলিক মানবাধিকার নির্যাতিত হয়েছে। এই ঘটনায় আমরা ক্ষুব্ধ, উদ্বিগ্ন ও মর্মাহত।’
বিবৃতিতে কামাল হোসেন বলেন, ‘ভোটের দিন রাতে সুবর্ণচরের ধর্ষণের শিকার হওয়া ওই নারীর ওপর মধ্যযুগীয় কায়দায় বর্বরোচিত লোমহর্ষক ঘটনা ঘটেছে। জাতি হিসেবে এ ঘটনা সবাইকে অত্যন্ত হেয় প্রতিপন্ন করেছে। কোনো গণতান্ত্রিক দেশে এমন ঘটনা কল্পনা করা কঠিন।’
তিনি বলেন, ‘এই ঘটনা আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার, মৌলিক মানবাধিকার ও মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে হুমকির সম্মুখীন করেছে এবং এতে আমরা ভীষণ ভাবে ক্ষুব্ধ, উদ্বিগ্ন ও মর্মাহত।’
পুনরায় এমন ঘটনা যাতে না ঘটে তার জন্য দেশের জনগণকে উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ড. কামাল। তিনি আরও বলেন, ‘এই লজ্জা সমগ্র জাতির। ওই নারী নির্যাতিত নয়, বরং নির্যাতিত হয়েছে গণতন্ত্র ও মৌলিক মানবাধিকার।’
বিবৃতিতে গণফোরাম সভাপতি বলেন, ‘নির্যাতনের শিকার ওই নারী তার নিজ এলাকার একটি ভোট কেন্দ্রে নিজের পছন্দের প্রতীকে ভোট দিতে চাইলে, ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে কথা-কাটাকাটির জেরে তাকে দেখে নেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়।
সরকার এ ঘটনাকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে সন্ত্রাসী ধর্ষকদের পালিয়ে যেতে সাহায্য করছে বলে অভিযোগ করেন ড. কামাল। এ ঘটনায় দ্রুত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন ধানের শীষে ভোট দেয়ার জের ধরে রাত ১১টার দিকে নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার চরজুবলি ইউনিয়নের মধ্যম বাগ্যা গ্রামে সিএনজিচালকের স্ত্রী (৪০) গণধর্ষণের শিকার হন। এ সময় আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের সন্ত্রাসীরা গৃহবধূর স্বামী, ছেলেমেয়েকে পিটিয়ে আহত করে। ঘটনার পরপরই গোপনে গৃহবধূ ও আহতদের নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
হাসপাতালে গৃহবধূর দাবি, নৌকার সমর্থকদের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডার জেরে তিনি ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। তবে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা এ ঘটনার সঙ্গে দলীয় সম্পৃক্ততার অভিযোগ অস্বীকার করেন।