নানা চড়াই-উতড়াইয়ের পর আবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়েছে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। গতকাল সকালে জাতীয় সংসদ ভবনে নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এরপর শেখ হাসিনাকে সরকার গঠনের আমন্ত্রণ জানিয়েছে রাষ্ট্রপতি।
আগামী সোমবার নতুন মন্ত্রীসভার শপথ অনুষ্ঠিত হবে। এদিন বিকাল সাড়ে ৩টায় রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বঙ্গভবনে এ শপথ বাক্য পাঠ করাবেন।
এদিকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফল নির্ধারণে তরুণের ভূমিকা ছিল মূখ্য। দেশের প্রায় ২২ শতাংশ ভোটারের বয়স ১৮ থেকে ২৮ বছরের মধ্যে ছিল। এসব তরুণের বড় অংশ, প্রায় ১ কোটি ২৩ লাখ এবারই প্রথম ভোট দিয়েছেন। তাই মন্ত্রীসভার শপথগ্রহণের পূর্বে দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণকারী এই তরুণরা কেমন মন্ত্রীসভা চায় তা তুলে ধরা হল বিডিমর্নিংয়ের পাঠকদের জন্য।
"দেশে এমন এক মন্ত্রীসভা দেখতে চায়- যারা স্বাধীনতার চেতনায় বিশ্বাসী। পাশাপাশি যে স্বপ্নগুলোকে সামনে রেখে স্বাধীনতা এসেছিল তা বাস্তবায়নে উদ্বুদ্ধ হবে৷ দূর্নীতিমুক্ত,স্বচ্ছ জবাবদিহিতা এবং জনগনের স্বার্থকে সর্বোচ্চ অবস্থানে রেখে কাজ করবে। ডিজিটালাইজেশন এবং তরুণ প্রজন্মের হাত ধরে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। কিন্তু সেটি যেন প্রশ্নপত্র ফাঁস কিংবা এই ধরনের কোন ফলাফলের সম্মুখীন না হয়। নারী-স্বাধীনতা এবং নারীদের নিরাপত্তা,যৌন-হয়রানি রোধ ইত্যাদি বিষয়কে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে কাজ করবে। উন্নয়নশীল দেশ থেকে খুব শীঘ্রই উন্নত দেশ হবার যোগ্যতা অর্জনের পথকে সুগম করবে এমন মন্ত্রীসভাই কাম্য বলে জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী তাসনিম তানহা মিম।
মন্ত্রী সভা তরুন নেতাদের সুযোগ বেশি দেওয়া উচিত। বিগত ১০ বছর থেকে সম্পূর্ণ আলাদাভাবে মন্ত্রীসভা সাজানো উচিত। অবশ্যই মন্ত্রীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা যথেষ্ট হওয়া উচিৎ, যেমন : যিনি রাষ্ট্রবিজ্ঞান নিয়ে পড়াশুনা করেছেন সে যেন আবার সাস্থ্য মন্ত্রি না হয়ে যায়। এবং বিতর্কিত নেতাদের মন্ত্রিসভা থেকে দূরে রাখা উচিত বলে জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ সরকারি তোলারাম কলেজের ইংরেজি বিভাগ শিক্ষার্থী জৈবুননেছা চৈতী।
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাবসায় প্রশাসনে স্নাতক বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী নুসরাত ইসলাম পূর্ণ বিডিমর্নিংকে বলেন, দেশে তরুণ ও প্রবীণদের সমন্বয় একটি মন্ত্রীসভা হওয়া উচিত। মন্ত্রী হয়ে তাদের দেশের মানুষের সুবিধা অসুবিধা নিয়ে কাজ করা উচিত। যেহেতু তারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত সুতারাং জনস্বার্থকেই সবচেয়ে বেশি প্রাধাণ্য দেওয়া উচিত। দেশেকে উন্নতির শিখরে পৌছে দিতে এবং দেশের মঙ্গলের জন্য যারা কোনো কিছুর সাথে আপোশ করবে না তেমন মন্ত্রীসভা চাই।
হাবীবুল্লাহ বাহার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অনিক রায় বিডিমর্নিংকে বলেন, বিজয়ের মাসে আরও একটি বিজয় হলো স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তির নিরঙ্কুশ বিজয়। আমি বিশ্বাস করি বিগত ১০ বছর ধরে এ সরকার যেভাবে দেশের উন্নয়নে কাজ করেছেন সামনেও উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে একটি কার্যকর ও কর্মঠ মন্ত্রীসভা গঠন করবে। যারা নিজ স্বার্থকে তুচ্ছজ্ঞান করে আত্নমানবতার কল্যাণে নিজেকে বিলিয়ে দেবে। এবারের ইশতেহারে যে স্বপ্ন দেখানো হয়েছে এবং যে কাজগুলো এখনো সম্পন্ন হয়নি সে কাজগুলো করার মত যোগ্য মানুষকেই মন্ত্রীত্বের আসনে বসানো উচিত। মোটকথা যে বিষয়ে যার অবিজ্ঞতা আছে তাকে সে বিষয়ের মন্ত্রীই করা উচিত।
অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে অবস্থিত গ্রুপ কলেজের তৃতীয় বর্ষের বাংলাদেশি শিক্ষার্থী রেদওয়ান হক বিডিমর্নিংকে বলেন, বিগত সময়ে দেখা গেছে মন্ত্রীসভায় অনেক অযোগ্য লোককে মন্ত্রীত্ব দেওয়া হয়েছিল। যাদের অনেকেই তাদের দায়িত্ব ঠিকমতো পালন করতে পারেনি। আমি মনে করি বর্তমানে সবচেয়ে সুন্দর সরকার ব্যবস্থার মধ্যে একটা হচ্ছে কানাডার সরকার ব্যবস্থা। তারা প্রতিটি মন্ত্রণালয় যে মানুষটিকে মন্ত্রীত্ব দিয়েছেন সে সবচেয়ে বেশি পারফেক্ট। যেমন তাদের খাদ্যমন্ত্রী নিজে একসময় কৃষক ছিলেন। কানাডায় অভিবাসন মন্ত্রী বানানো হয়েছে এমন একজন ব্যক্তিকে যিনি নিজেও একজন উদ্বাস্তু ছিলেন। আমি বিশ্বাস করি, বাংলাদেশেও যদি এরকম যিনি যে বিষয়ে অভিজ্ঞ, তাকে সে বিষয়ের মন্ত্রীত্ব দেয়া হয় বাংলাদেশ যে সমস্যাগুলো আছে সে সমস্যা গুলোর সঠিক সমাধান পাওয়া যাবে।