ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ড উপজেলা পল্লী বিদ্যুতের সহকারী মহাব্যবস্থাপক শেখ আবদুর রহমান ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার জন্য নিয়েছেন এক ব্যতিক্রম উদ্যোগ। গ্রাহক বিদ্যুৎ সংযোগ নিতে চাইলে মাত্র পাঁচ মিনিটেই পেয়ে যাবেন সংযোগ। কোনো হয়রানি নেই, দিত হবেনা কোনো বাড়তি অর্থ। ব্যতিক্রমধর্মী এই উদ্যোগের নাম দেওয়া হয়েছে ‘আলোর ফেরিওয়ালা।'
এ ব্যাপারে মহাব্যবস্থাপক শেখ আবদুর রহমান বলেন, গত ২৪ ডিসেম্বর শুরু হওয়া এই কার্যক্রম গোটা উপজেলার সব বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ না পৌঁছানো পর্যন্ত চলবে। শুরুর পর প্রথম চার দিনে তারা ৫৪ টি নতুন সংযোগ দিয়েছেন।
তিনি বলেন, দেশে এখনো বিদ্যুৎ নিতে গিয়ে গ্রাহকেরা নানা ভাবে হয়রানির শিকার হন। একটা সংযোগের জন্য দিনের পর দিন ঘুরতে হয়। অনেক সময় বাড়তি পয়সাও খরচ হয়, যেটা কোনো ভাবেই কাম্য নয়।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ ডিসেম্বর এই কর্যক্রম উদ্ধোধন করে ঝিনাইদহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার মো. আলতাফ হোসেন বলেন, প্রথম দিনই ১৩টি নতুন সংযোগ দেওয়া হয়। এরপর ২৫ ডিসেম্বর ১৫টি, ২৬ ডিসেম্বর ১৬টি ও ২৭ ডিসেম্বর ১১টি সংযোগ দেওয়া হয়েছে। নির্বাচনের কারণে তাদের কার্যক্রম তিনদিন বন্ধ ছিল, যেটা আবার শুরু হয়েছে।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভ্যানে মিটার, তারসহ সব ধরনের সরঞ্জাম থাকছে। দুজন লাইনম্যান ও একজন ওয়্যারিং পরিদর্শক থাকছেন ওই। তারা গ্রামে গ্রামে ঘুরছেন। যে এলাকায় বাসাবাড়িতে এখনো। বিদ্যুৎ নেই, সেই এলাকায় বেশি যাচ্ছেন। যারা নতুন সংযোগ নিতে আগ্রহী, তাদের সদস্যফি বাবদ ভ্যাটসহ ১১৫ টাকা আর জামানত হিসেবে ৪০০ টাকা জমা দিয়ে নতুন সনযোহ নিচ্ছেন। ফেরিওয়ালাদের কাছে টাকা জমা নেওয়ার রসিদ বই থাকছে, তারা সেখানে বসেই টাকা জমা করছেন। এরপর ওয়্যারিং পরিদের্শক ওয়্যারিং যাচাই করে আবেদনের পাঁচ মিনিটেই সংযোগ দিচ্ছেন।
নতুন সংযোগ পাওয়া এমন একজন হরিণাকুণ্ডু উপজেলার বাকচুয়া গ্রামের রাসেল বলেন, পল্লী বিদ্যুতের এই কার্যক্রম তাদের অনেক সুবিধা এনে দিয়েছে। সংযোগ নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট অফিসে গিয়ে সময় নষ্ট করতে হয়না। টাকা জমা দেওয়ার জন্য লাইনেও দাঁড়াতে হচ্ছে না। মাত্র পাঁচ মিনিটেই নতুন সংযোগ পেয়ে যাচ্ছেন, যা এর আগে ভাবতেও পারেননি তারা।
পাঁচ মিনিটে সংযোগ পাওয়া আর এক গ্রাহক মো. টুলু মিয়া বলেন, পল্লী বিদ্যুতের এই কর্যক্রম দেখে মনে হচ্ছে, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাছ থেকে জনগণ প্রকৃত সেবা পাচ্ছেন।
জেলা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহাব্যবস্থাপক মো. আলতাফ হোসেন বলেন, হরিণাকুণ্ডু সমিতি যে কর্মসূচি নিয়েছে, তা অনুকরণীয়। ইতিমধ্যে তিনি এই কার্যক্রম চালুর জন্য অন্য অফিসগুলোকেও নির্দেশ দিয়েছেন।