ভোট নির্বাচন কমিশনের কাছে আমানত। কাজেই ভুল গণনার মধ্য দিয়ে সেই আমানত নষ্ট করা যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদা।
বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে যারা ভোটের ফল ঘোষণা করবেন, তাদের এক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় কথা বলেন সিইসি নুরুল হুদা।
এ সময় কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, দেশব্যাপী নির্বাচনী পরিবেশ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এর মাধ্যমে একটা নতুন সরকার গঠন হবে ৩০ তারিখের পরে সেটার পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। আমরা অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গে বলতে পারি, একটি সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেটার নিয়ামক হিসেবে আপনারা যে যার অবস্থান থেকে সঠিকভাবে দায়িত্বপালন করবেন।
‘যেসব কর্মকর্তাকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে- তাদের ওপর আমাদের আস্থা বেড়েছে। নির্বাচন পরিচালনার ক্ষেত্রে এটি তাদের অবশ্যই সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। আমরা প্রশিক্ষণের এমন কোনো স্তর বাদ রাখিনি যে, মাঠপর্যায়ে গিয়ে নির্বাচন পরিচালনার ক্ষেত্রে তাদের কোনো ঘাটতি থাকে।’
প্রশিক্ষণ কর্মশালায় তিনি বলেন, ভোটারদের যে ইচ্ছা, ভোট প্রদানের যারা প্রার্থী, তাদের যে প্রাপ্তি-সেগুলো আপনাদের হাতে থাকবে, তা সঠিকভাবে বিশ্লেষণ ও বিতরণ করার দায়িত্ব অত্যন্ত কঠিন এবং সেখানকার গুরুদায়িত্ব আপনাদের ওপরেই।
তিনি আরও বলেন, আপনাদের একটু ভুলের কারণে অনেক দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। অনেক সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। সঠিকভাবে ফলাফল বিতরণ ও বিশ্লেষণ করা অত্যন্ত কঠিন। অত্যন্ত সতর্কার সঙ্গে সঠিকভাবে আপনাদের এই দায়িত্বপালন করতে হবে।
নির্বাচনের সার্বিক কার্যক্রম নিয়ে কে এম নূরুল হুদা বলেন, নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণ হয়ে রিটার্নিং, সহকারী রিটার্নং, প্রিজাইডিং অফিসারের কাছে চলে গেছে। এসব দেখভাল করার জন্য কতগুলো কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
‘এসব কমিটির একটি হচ্ছে- ইলেকটোরাল ইনকুয়ারি কমিটি। সারাদেশে ১২২টি ইনকুয়ারি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা সারাদেশে নির্বাচনে কোনো অনিয়ম হলে, আচরণবিধি ভঙ্গ হলে অথবা নির্বাচন সংক্রান্ত কোনো আইন বিচ্যুতি কর্মকাণ্ড ঘটলে সেগুলো সংশোধন করবেন। তারা অনুসন্ধান করবেন ও ব্যবস্থা নেবেন। জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন চার দিন। তারা মূলত কোনোটা আচরণবিধি ভঙ্গের কারণ তা প্রার্থী ও সমর্থকদের ধরিয়ে দিয়ে তা শোধরে দেবেন। যদি সেগুলো না শুনেন তাহলে বিচার করার তাদের সুযোগ থাকবে। অপরাধ আমলে নেওয়ার ক্ষমতা আছে তাদের হাতে। দায়িত্ব পালন করবেন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটরাও।’
মাঠপর্যায়ে অভিযোগ জমা দেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে সিইসি বলেন, আমাদের যেটা অসুবিধা হয়, সেটি হলো অভিযোগগুলো নির্বাচন কমিশনের কাছে কেন্দ্র থেকে চলে আসে। এই অভিযোগগুলো আমাদের কাছে না এসে, যদি তাৎক্ষণিকভাবে রিটার্নিং অফিসার এবং ইলেকটোরাল ইনকুয়ারি কমিটির কাছে গেলে তড়িৎগতিতে সমাধান পাবেন। আমাদের কাছে পাঠালে তাদের জন্য একটা বাড়তি অসুবিধা হয়। সেখানে এসব পাঠানোর জন্য অনুরোধ থাকবে সবার কাছে।
প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানে ইটিআই মহাপরিচালক মোস্তফা ফারুকসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।