সম্প্রতি আয়ারল্যান্ডের কিশোরীকে ধর্ষণের দায়ে এক তরুণকে বেকসুর খালাস দেওয়ার প্রতিবাদে উত্তপ্ত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো।
আসামি পক্ষের আইনজীবীর অদ্ভুত যুক্তির কারণে এই রায় দেন আদালত। এলিজাবেথ ও’কনেল নামে ওই আইনজীবী আদালতকে বলেন, ‘আপনাকে দেখতে হবে ওই কিশোরী কী রকম পোশাক পরে ছিল।’ এ সময় একটি লেইস লাগানো অন্তর্বাস দেখিয়ে আদালতকে তিনি বলেন, ‘এই অন্তর্বাসটি ধর্ষিতা পরে ছিলেন। ওই সময় ধর্ষণের শিকার নারী তার নিম্নাঙ্গের ‘নজরকাড়া’ অন্তর্বাস পরে প্রলোভন দেখিয়েছেন ওই যুবককে।’
অভিযুক্ত ব্যক্তিও এ সময় নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন। আদালতকে তিনি জানান, ওই কিশোরীর মত নিয়েই শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন তারা। এর পর প্রায় দেড় ঘণ্টা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে ১২ জনের জুরি প্যানেল অভিযুক্তকে নির্দোষ ঘোষণা করে।
এই রায়ের জের ধরে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নারীদের অন্তর্বাসের ছবিতে ভেসে যাচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো। শেয়ার করা ছবিতে নারীরা ‘হ্যাশট্যাগ দিস ইজ নট কনসেন্ট’ লিখে একে পোস্ট করছেন নিজেদের ওয়ালে।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ‘ডেইলি মেইলের’ খবর, আদালতের রায়ের পর আয়ারল্যান্ড জুড়ে শুরু হয় বিতর্ক। জনগণের প্রশ্ন, একটি অন্তর্বাস দেখে কী করে আদালত একজন ধর্ষককে বেকসুর খালাস দিতে পারে?
সুসান ডিলন যিনি ‘আই বিলিভ হার—আয়ারল্যান্ড’ টুইটার পেজের প্রতিষ্ঠাতা তিনি সিএনএন কে বলেন, ‘আমরা ভেবেছিলাম ধর্ষিতকেই দোষী করার পুরোনো সামাজিক মানসিকতা থেকে আমাদের উত্তরণ ঘটেছে।’
তার পরে তিনি হ্যাশট্যাগ ‘দিস ইজ নট কনসেন্ট’ আন্দোলন শুরু করেন। এর পর থেকেই বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের নারীরা নিজেদের অন্তর্বাসের ছবি পোস্ট করছেন।
আইরিশ রাজনীতিবিদ রুথ কোপিঙ্গার রয়্যাল হাউস অফ পার্লামেন্টে প্রতিবাদ করেন। সেখানে একটি কালো লেসের অন্তর্বাস দেখিয়ে কপিনগার বলেন, ‘পার্লামেন্টে যদি অন্তর্বাস দেখালে লজ্জিত হন, তা হলে আদালত কক্ষে ওই নারীর অন্তর্বাস নিয়ে এসে দেখানো তার মানসিক পরিস্থিতি কোন পর্যায় পৌঁছেছিল আপনাদের জানা উচিত।’ তিনি ওই অন্তর্বাসটির ছবিও শেয়ার করেন টুইটারে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমি শুনেছি যখন অন্তর্বাস দেখাই তখন ক্যামেরায় আমায় কেটে দেওয়া হয়েছিল। আদালতে ধর্ষিতার অন্তর্বাস দেখানো আইনসিদ্ধ হলে ক্যামেরায় কেন নয়?’