‘হাইড্রোফ্লুরিক’ অ্যাসিড ও অন্যান্য রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করা হয়েছে সাংবাদিক জামাল খাসোগি হত্যায়। হত্যার পর তাঁর লাশ পুড়িয়ে ফেলতে ও এসব তথ্যপ্রমাণ মুছে ফেলতে ওই রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করা হয়। তুরস্কের অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ের বরাত দিয়ে এসব খবর প্রকাশ করেছে আল-জাজিরা।
সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে হত্যার পর তাঁর লাশ পুড়িয়ে ভস্মীভূত করার জন্য রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়েছিল বলে এর আগে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়েছে। এরপর সৌদি কনসাল জেনারেলের বাসায় রাসায়নিক দ্রব্য সন্ধানের খবর প্রকাশ করা হলো।
আল–জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তুরস্কের সৌদি কনস্যুলেটের পাশে কনসাল জেনারেলের বাড়িতে তুরস্কের তদন্ত দল ‘হাইড্রোফ্লুরিক’ অ্যাসিড ও অন্যান্য রাসায়নিক দ্রব্যের উপস্থিতি পেয়েছে।
তুরস্ক থেকে আল-জাজিরার প্রতিবেদক অ্যান্ডু সিমনস বলেন, খাসোগি হত্যার দুই সপ্তাহ পর সৌদি কনসাল জেনারেলের বাসায় তল্লাশি চালায় তুরস্কের তদন্তকারী দল। তখনই তদন্ত দল এসব রাসায়নিকের সন্ধান পেয়েছিল। একটি সূত্রের বরাত দিয়ে সিমনস বলেন, ‘ওই দুই সপ্তাহের মধ্যে জামাল খাসোগির দেহ ভস্মীভূত করার জন্য রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়েছিল।’
জামাল খাসোগি গত ২ অক্টোবর তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেট ভবনে ঢোকার পর থেকে নিখোঁজ ছিলেন। প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সৌদি আরব স্বীকার করে, খাসোগিকে কনস্যুলেট ভবনের ভেতরে হত্যা করা হয়েছে। তবে খাসোগিকে হত্যা করা হয়েছে বলে স্বীকার করলেও এতে রাজপরিবার জড়িত নয় বলে দাবি করছে সৌদি আরব। এখনো পর্যন্ত খাসোগির মৃতদেহের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। সৌদি আরবও এ বিষয়ে কোনো তথ্য দেয়নি।
জামাল খাসোগির নিখোঁজ হওয়ার দিন মাহির মুতরিব ইস্তাম্বুল থেকে ব্যক্তিগত বিমানে করে সৌদি আরবে গিয়েছিলেন। ওই বিমানে করেই খাসোগির লাশের টুকরাগুলো নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে। মাহির মুতরিবের ব্যক্তিগত বিমানটি তুরস্কের কামাল আতাতুর্ক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়ন করে। সেদিন বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জে তাঁর ব্যাগ পরীক্ষা করতে দেননি তিনি। ব্যক্তিগত ওই বিমানটির কোনো ফ্লাইট শিডিউল, বিমান ও ফ্লাইটের কোনো তথ্যও তিনি বিমানবন্দরে রাখেননি। সেদিন কূটনৈতিক পাসপোর্টধারী মুতরিবকে বিমানবন্দরে দ্রুত চলাচল করতে দেখা যায়।
আল-জাজিরার সাংবাদিক অ্যান্ড্রু সিমনস বলেছেন, এত কিছুর পরও কেউই জানেন না কোথায় জামাল খাসোগির লাশ নেওয়া হয়েছে। তুরস্কের কর্মকর্তারা বলছেন, জামাল খাসোগির মরদেহ অ্যাসিডে ঝলসে দেওয়া হয়েছে। কোনো কোনো গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, সৌদি কনসাল জেনারেলের বাসার আঙিনায় মরদেহ পুঁতে রাখা হয়েছে। তবে ঠিক কী হয়েছে, তা পরিষ্কার নয়। তুরস্ক আর সৌদি আরবের তদন্ত দল খাসোগি হত্যার ঘটনা তদন্ত করছে।