Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১২ সোমবার, মে ২০২৫ | ২৯ বৈশাখ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

শীতে ৪ ডিগ্রিতে নামতে পারে তাপমাত্রা

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৭ নভেম্বর ২০১৮, ১২:৪৭ PM
আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০১৮, ১২:৫৯ PM

bdmorning Image Preview


দরজায় কড়া নাড়ছে শীত। এ ঋতুর মূল বৈশিষ্ট্য তাপমাত্রা কমে গিয়ে শীতের আলিঙ্গন। এবার বর্ষার অস্বাভাবিকতার পর প্রকৃতি ও জনজীবনে স্থান করে নিচ্ছে শীত। তবে এর মধ্যেই অনেকের জিজ্ঞাসা- কেমন হবে এবারের শীতের তাপমাত্রা।

আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, অক্টোবর মাসে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা বেশি থাকায় অগ্রিম শীত নামার কোনো সম্ভাবনা নেই। তবে তাপমাত্রা কমার ধারাবাহিকতায় জানুয়ারি মাসে দেশের বিভিন্ন স্থানে দেখা দিতে পারে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ। এই সময়ে তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে যেতে পারে বলেও জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। পৌষ মাসের শেষার্ধ ও মাঘ মাসের প্রথমার্ধ মিলে হবে জানুয়ারি মাস।

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক সামছুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমরা পর্যবেক্ষণে দেখেছি যে, অক্টোবরের তাপমাত্রা গত বছরের অক্টোবরের চেয়ে ২ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল। তাই বলা যায়, গত বছরের তুলনায় অক্টোবরটা বেশি গরম ছিল। এবার একটু আগেই শীত নামার সম্ভাবনাটা কম। শীত স্বাভাবিক নিয়মেই আসবে বলে আমরা মনে করছি।’

এখন রাতের ও দিনের তাপমাত্রা ক্রমান্বয়ে কমছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘তিন মাসের দীর্ঘমেয়াদের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ডিসেম্বর মাসের শেষার্ধে দেশের উত্তর, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে একটি মৃদু বা মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।জানুয়ারি মাসে দেশের উত্তর, উত্তর-পূর্বাঞ্চল, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে একটি মাঝারি বা তীব্র ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। অন্যান্য স্থানে এক থেকে দুটি মৃদু বা মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।’

৪ থেকে ৬ ডিগ্রি তাপমাত্রাকে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়। ৬ থেকে ৮ ডিগ্রি তাপমাত্রাকে মাঝারি এবং ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাকে মৃদৃ শৈত্যপ্রবাহ বলা হয় বলেও জানান সামছুদ্দিন আহমেদ।

গত মাসের শেষের দিকে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের মেঘ চলে আসায় প্রায় সারাদেশেই বৃষ্টি হয়, তখন তাপমাত্রা কিছুটা কমে যায়। মেঘ কেটে গেলে আবার তাপমাত্রা বেড়ে যায়। এখন আবার সাগরে লঘুচাপের প্রভাব পড়েছে। মেঘে ঢাকা থাকছে আকাশ, হচ্ছে হালকা বৃষ্টি। তাপমাত্রাও ওঠা-নামা করছে।

গত ২৫ অক্টোবর দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমে হয় ১৫ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ওইদিন পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় এই তাপমাত্রা ছিল। ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল সোমবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল তেঁতুলিয়ায় ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, মঙ্গলবার এটা খালিকটা বেড়ে হয়েছে ১৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

গতকাল সোমবার ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৪ দশমিক ৫ এবং সর্বোচ্চ ৩২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মঙ্গলবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কমে হয়েছে ২২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আবহাওয়াবিদ আরিফ হোসেন তাপমাত্রা কমে যাওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু (বর্ষা) দেশ থেকে চলে গেলে উত্তর দিক থেকে একটু একটু করে বাতাস প্রবাহিত হতে শুরু করে। এতে অক্টোবর থেকে তাপমাত্রা কমতে থাকে। শীতের বাতাস হিমালয় পর্বতমালা ও তিব্বত থেকে আসে। একটা বাতাস উত্তর-পূর্ব, আরেকটা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে আসে। এই বাতাস আমরা অলরেডি পাচ্ছি। বাতাসটা গতি নিয়ে প্রবাহিত হয় মূলত ডিসেম্বর থেকে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের অবস্থান বিষুব রেখার উত্তরে। কিন্তু শীতকালে অবস্থান পরিবর্তন করে সূর্য বিষুব রেখার দক্ষিণে চলে যায়। এখন সূর্যের দক্ষিণায়ন চলছে। ২৩ সেপ্টেম্বরের পর থেকে সূর্যের দক্ষিণায়ন শুরু হয়। সূর্য বাংলাদেশ ও হিমালয় অঞ্চলের ওপর থেকে দক্ষিণে সরে গিয়ে শ্রীলঙ্কা, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর বরাবর থাকবে। এতে আমাদের দেশসহ হিমালয়ের দিকে সূর্যের তাপটা কম পড়বে।’

‘হিমালয় পর্বতমালার কারণে সেখানকার পুরো ঠান্ডা বাতাস আমাদের এখানে আসে না। এটা আসলে আমাদের এখানে বরফ পড়তো। বাধা পেয়ে হিমালয় পর্বতমালার দক্ষিণ দিক দিয়ে অল্প একটু প্রবাহিত হয়’- বলেন আবহাওয়াবিদ আরিফ।

শীতকালে অবস্থান পরিবর্তন করে সূর্য বিষুব রেখার দক্ষিণে চলে যাওয়ায় তখন বাংলাদেশে দিন ছোট হয়। রাত হয় দীর্ঘ। বাংলাদেশের উত্তরে হিমালয় পর্বতমালা। সেখান থেকে বরফশীতল বায়ু এ দেশের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। কখনও কখনও তা তীব্র শীতের শৈত্যপ্রবাহে পরিণত হয়। সাধারণত হাড়কাঁপানো শীতের দেখা মেলে মাঘ মাসে।

আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও কাছাকাছি শ্রীলঙ্কায় একটি লঘুচাপের সৃষ্টি হয়েছে। এটি আরও ঘণীভূত হয়ে একই এলাকায় সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়েছে।

Bootstrap Image Preview