নরসিংদী জেলার ৭২ টি ইউনিয়নে র্যাব, পুলিশ, গোয়েন্দা সংস্থাসহ ১৪ শত স্টাফের সদস্যদের মোতায়েন, টহল, তল্লাশি, গ্রেফতার অভিযানসহ অতিমাত্রায় তৎপরতার কারণে গা-ঢাকা দিচ্ছে সব ধরনের অপরাধী।
অবরোধ-হরতালে পেট্রোলবোমার আগুনে পুড়িয়ে মারার রাজনৈতিক অপরাধের ঘটনা দমন করতে গিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অতিমাত্রায় তৎপরতায় চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, খুনখারাবি, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, প্রতারণা, অজ্ঞানপার্টি, মলমপার্টি, মাদক ব্যবসাসহ নানা ধরনের অপরাধ কমে আসছে।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ক্রমেই উন্নতি হচ্ছে। তবে অতীতের মতো এখন আবার পুলিশের কিছু সুযোগ সন্ধানী অসৎ, দুর্নীতিবাজ সদস্য ভয়ভীতি প্রদর্শন করে নির্দোষ নিরপরাধ মানুষের কাছ থেকে টাকা পয়সা আদায় ও উৎকোচ গ্রহণ করছে বলে অভিযোগ পেয়েছে এই জেলার গোয়েন্দা শাখা।
একটি সূত্র থেকে জানা যায়, নরসিংদী জেলার বিভিন্নস্থানে গোয়েন্দা শাখার সদস্যরা ব্যাপকসংখ্যক দিনে-রাতে ডিউটি দিচ্ছে সড়ক-মহাসড়কে। চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, খুন, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, অপহরণ, জিম্মিকরণ, প্রতারণা, মাদক ব্যবসা, অজ্ঞান পার্টি, মলমপার্টিসহ নানা ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে পালানোর চেষ্টা করলেই ধরা পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের চ্যালেঞ্জ করে অনেকেই বন্দুকযুদ্ধে মারা যাওয়ায় দুর্বৃত্ত ও অপরাধীদের মধ্যেও আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
নরসিংদী মডেল থানার ওসি সৈয়দুজ্জামান এর হিসাব অনুযায়ী, গত এক মাসে নরসিংদীতে বিভিন্নস্থানে পুলিশের অভিযানে সহিংস সন্ত্রাসী ঘটনা এবং এর সঙ্গে জড়িত দুর্বৃত্তদের তাণ্ডব ও তৎপরতা উভয়ই কমে এসেছে এবং চলতি মাসে ৫৬ মামলা ও একটি অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে ।
নরসিংদী শিবপুর থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ বিডিমর্নিংকে বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে ১২ টি মামলা হয়েছে এবং পুলিশের বিশেষ অভিযান ও তৎপরতার কারণে মাধক অনেকটা কমে এসেছে। এই এলাকার সাধারণ মানুষদের নিরাপত্তা দিতে পুলিশ সর্বদা তৎপর রয়েছে। তাই জনসাধারণও এখক মাদক কমে আসাতে অনেকটা স্বস্তি অনুভব করছে।
এই ধরনের অপরাধ হয়তো শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনা সম্ভবপর না হলেও আশানুরূপ পর্যায়ে দমন করা যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন উধর্ধতন পুলিশ কর্মকর্তারা।
অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, মৃত্যু ভয় কার না আছে? ছাত্রদল, যুবদল, শিবির ক্যাডার মৃত্যু ভয়ে প্রকাশ্যে আসছে না। চোরাগোপ্তা হামলা চালানোর সময়ে ধরা পড়লে তো কথাই নেই, এমনকি পরবর্তীতে এলাকাবাসীর কাছ থেকে যদি পরিচয় পাওয়া যায় তাহলে ধরে এনে কঠোর শাস্তি দেয়া হয়। এই জন্যই হয়তোবা দুর্বৃত্ত, অপরাধী ও রাজনৈতিক দলের সশস্ত্র ক্যাডাররা গা-ঢাকা দিয়েছে। মৃত্যু ভয় তাড়া করায় এখন আর টাকা পয়সা দিয়েও ভাড়াটিয়া দুর্বৃত্ত, সন্ত্রাসী পাওয়া যাচ্ছে না।
এদিকে এই জেলার গোয়েন্দা শাখার কর্মকর্তারা মাদকবিরোধী ও অস্ত্র উদ্ধার করতে সফলতার পরিচয় দিয়েছেন। এমনকি রাষ্ট্রীয় সম্মানও পেয়েছে বলে জানান। তাই এসমস্ত রাষ্ট্রীয় সম্মান পাওয়া কর্মকর্তারা আরও তৎপরতা বাড়িয়ে দিলে অপরাধ প্রবণতা শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনা যাবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
নরসিংদী জেলার পুলিশ সুপার সাইফুল্লাহ আল-মামুন বিডিমর্নিং এর এই প্রতিবেদককে জানান, অন্যান্য জেলার চেয়ে এ জেলার অপরাধ একটু ভিন্ন। তাই আমরা প্রকৃত অপরাধীকে ধরতে তৎপর রয়েছি। এই জেলায় সম্প্রতি সময়ে ভয়াবহ টেটাযুদ্ধ হ্রাস করতে ইমিমধ্যেই বিভিন্ন ইউনিয়নে কার্যক্রম শুরু করেছি।