Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৪ রবিবার, মে ২০২৫ | ২১ বৈশাখ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

খাশোগি হত্যার ২৪ দিনঃ মরদেহ কোথায়?

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৭ অক্টোবর ২০১৮, ০৯:৫৭ PM
আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০১৮, ০৯:৫৭ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে রিয়াদের গুপ্তচরদের হাতে সাংবাদিক জামাল খাশোগি খুন হওয়ার ২৪ দিন পরও তুরস্ক এবং যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা এখনও একটি প্রশ্নের জবাব খুঁজছেন : মরদেহ কোথায়?

এদিকে, শুক্রবার খাশোগির মরদেহ ফেরতের দাবি জানিয়ে দেয়া এক বক্তৃতায় সৌদি সরকারের ওপর চাপ জোরাল করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। তুর্কি এই প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ‘একটি ঘোষণা এসেছে যে, সাংবাদিক জামাল খাশোগি খুন হয়েছেন। কিন্তু তার মরদেহ কোথায়? সৌদিকে অবশ্যই এই মরদেহ প্রকাশ্যে আনতে হবে।’

গত কয়েকদিন ধরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও তার সহযোগীদের কাছে খাশোগির মরদেহ সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। এ ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মার্কিন কূটনীতিক ও শীর্ষস্থানীয় কূটনীতিকরা বলেছেন, এ ব্যাপারে ওয়াশিংটন এখনও অন্ধকারে রয়েছে।

গত সপ্তাহে সৌদি কর্মকর্তারা বলেছেন, খাশোগির মরদেহ কার্পেটে মুড়িয়ে স্থানীয় এক সহযোগীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তবে তুর্কি কর্তৃপক্ষ বলছে, ভয়ানক এক অভিযানের মাধ্যমে খাশোগির মরদেহ কেটে টুকরো টুকরো করে বড় সুটকেসে ভরেছে সৌদি গুপ্তচররা।

ব্রুকিংস ইনস্টিটিউশনের তুরস্ক সম্পর্কবিষয়ক বিশেষজ্ঞ আমানডা স্লোত বলেছেন, খাশোগির মরদেহের যে কোনো অঙ্গপ্রত্যঙ্গ যদি পাওয়া যায়, তাহলে তুরস্কের দাবিকে বিশ্বাসযোগ্য করে তুলবে সেটি। আর তাই যদি হয় তাহলে সৌদি শানসনব্যবস্থা অত্যন্ত বাজে পরিস্থিতির মুখোমুখি হবে।

অন্যদিকে, বৃহস্পতিবার মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর পরিচালক গীনা হ্যাস্পেল তার তুরস্ক সফর সম্পর্কে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অবহিত করেছেন। তুরস্কের এ সফরে খাশোগি হত্যাকাণ্ডের অডিও রেকর্ড শুনেছেন তিনি। তবে সৌদি আরবের বিরুদ্ধে যে কোনো ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার আগে আরো অতিরিক্ত তথ্য-উপাত্ত দরকার বলে মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র রবার্ট প্যাল্যাদিনো বলেছেন, আমরা প্রতিনিয়ত এ ঘটনার সব প্রাসঙ্গিক তথ্যের ওপর নজর রাখছি। আমরা আরো তথ্য পাওয়ার পর এ ব্যাপারে অতিরিক্ত ব্যবস্থা নেব।

পররাষ্ট্র দফতরের এক কর্মকর্তা বলেছেন, খাশোগির মরদেহ থাকা উচিত এবং যত দ্রুত সম্ভব তার পরিবারের কাছে তা ফেরত দিতে হবে।

ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে সাংবাদিক জামাল খাশোগির হত্যার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ১৮ সৌদি নাগরিকের ব্যাপারে আরো তথ্য পাওয়ার দাবি করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। তুরস্কের আধা-সরকারি সংবাদসংস্থা আনাদোলু নিউজ অ্যাজেন্সি বলছে, সন্দেহভাজন খুনিদের ফেরত চাইছেন তুর্কি প্রসিকিউটর। 

এরদোয়ান বলেছেন, ‘আমাদের কাছে ঘাতকদের হস্তান্তর করুন। ঘটনাটি ইস্তাম্বুলে ঘটেছে। আমরাই তাদের বিচার করবো।’ নাম প্রকাশ না করার শর্তে তুরস্কের জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তা বলেছেন, সৌদিদের হাতে খাশোগি খুন হয়েছেন। যে কারণে ঘাতকদের হস্তান্তরের অনুরোধ জানিয়েছে তুরস্ক। আর এটা পরিষ্কার যে, তুরস্কের বিচারব্যবস্থা অত্যন্ত ভালো।

গত ২ অক্টোবর তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে প্রবেশের পর মার্কিন দৈনিক ওয়াশিংটন পোস্টের কলামনিস্ট ও সাংবাদিক জামাল খাশোগি নিখোঁজ হন। সেখান থেকে আর বেরিয়ে না আসায় সন্দেহ দানা বাঁধতে থাকে যে, কনস্যুলেটে খুন হয়েছেন সৌদি রাজপরিবারের কট্টর সমালোচক হিসেবে পরিচিত যুক্তরাষ্ট্রে স্বেচ্ছা নির্বাসনে থাকা এই সাংবাদিক।

সৌদি আরব প্রতিনিয়ত এই অভিযোগ অস্বীকার করে এলেও ১৭ দিন পর গত শনিবার বৈশ্বিক চাপ ও সমালোচনার মুখে সৌদি সরকারের এক বিবৃতিতে খাশোগি কনস্যুলেটে মারামারিতে মারা গেছেন বলে স্বীকার করে।

Bootstrap Image Preview