নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে রাজউকের অধীনে নির্মাণাধীন পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের অবশিষ্ট মূল আদিবাসিদের নামে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক ঘোষণার ২ বছর পরও প্লট বরাদ্দ না পেয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছে স্থানীয় আদিবাসিরা।
একই দাবিতে আজ মঙ্গলবার সকালে রাজউকের অধীনে উপজেলার মাঝিপাড়া এলাকায় স্থানীয় আদিবাসিরা এশিয়ান বাইপাস মহাসড়ক অবরোধ করে। এ সময় উত্তেজিত আদিবাসিরা রাজউকের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বন্ধের চেষ্টা চালিয়ে স্থানীয় ঠিকাদারদের একাধিক কার্যালয় আধাঘন্টা ঘেরাও করেন এছাড়াও ঘন্টাব্যাপী সড়কও অবরোধ করেন বিক্ষোভকারীরা। বিক্ষোভে অংশনেয় স্থানীয় মূল আদিবাসি ও তাদের পরিজনরা।
স্থানীয় আদিবাসিদের মাঝে সুলপিনা এলাকার দ্বীন ইসলাম জানান, তার ৩২ শতক জমির বিল উত্তোলন করে এলএল শাখা থেকে রাজউকে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু রহস্যজনক কারণে ওই প্লটটি বরাদ্দ দেয়নি রাজউক। এদিকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ৪ আগস্ট ২০১৩ইং সনে পূর্বাচল উপশহরের ভোলানাথপুর এলাকার বালু ব্রিজ উদ্বোধনের সময় স্থানীয় মূল আদিবাসিদের নামে পরবর্তী ৩ মাসের মধ্যে প্লট বরাদ্দ দেয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। দুঃখজনকভাবে ওই প্লট ২ বছর হয়ে গেলেও বরাদ্দ দেয়নি। এতে স্থানীয় আদিবাসিদেরমত তাকেও মানবেতর জীবন যাপন করতে হচ্ছে।
স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা মূল আদিবাসি মোস্তফা কামাল জানান, তার ১০০ শতক জমি ছিল মাঝিপারা এলাকায়। ওই জমির উপর রাজউক তার উন্নয়ন কাজ করলেও তার নামে প্লট বরাদ্দ দেয়নি। এসময় তিনি আরো জানান, সুলপিনা এলাকার মজিবুরের স্ত্রী সহিফার ২ বিঘা, ব্রাহ্মনখালী এলাকার আইজদ্দিনের ছেলে হারুন উর রশিদের ১ বিঘা, গুতিয়াবোর শফিকুর রহমানের ২৮ শতক, ইছাপুরা এলাকার আবুল হোসেনের দেড় বিঘা, ইছাপুরা এলাকার আলাউদ্দিন মেম্বারের ৯ বিঘা, ধামছি এলাকার আয়েশা গণের ৫৪ শতক জমি থাকলেও এভাবে ২শতাধিক আদিবাসি এখন স্থায়ী বাস্তুভিটাহীন মানববেতর দিন কাটাচ্ছে। তাদের দাবি অবিলম্বে প্লট বরাদ্দ না দিলে রাজউকের পূর্বাচল নতুন শহর এলাকায় কোন ঠিকাদারকে উন্নয়ন কাজ করতে দেবে না। প্রয়োজনে সড়ক অবরোধ, অনশণ, কাফন মিছিল করে প্রতিবাদ অব্যাহত রাখবেন তারা।
স্থানীয় বাসিন্দা আক্তারুজ্জামান জানান, পূর্বাচলের মূল আদিবাসিদের নামে প্লট বরাদ্ধ না দিয়ে দফায় দফায় রাজউকের উচ্ছেদ অভিযান হয়। এতে মানবাধিকার লঙ্ঘন হলেও কর্তৃপক্ষ রহস্যজনক কোন সুরাহা করছে না। এ বিষয়ে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের প্রজেক্ট পরিচালক (পিডি) উজ্জল মল্লিক বলেন, বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। রাজউক কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে ১৬০টি প্লটের বরাদ্দ বিষয়ে যাচাইবাচাই করছে। বাকিগুলোও পর্যায়ক্রমে উপযুক্ত হলে বরাদ্দ দেয়া হবে।