Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৭ বুধবার, মে ২০২৫ | ২৪ বৈশাখ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

সমুদ্রের ওপর নির্মিত বিশ্বের দীর্ঘতম সেতুর উদ্বোধ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক-
প্রকাশিত: ২৩ অক্টোবর ২০১৮, ০৯:৫৩ AM
আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০১৮, ০৯:৫৩ AM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


সমুদ্রের ওপর নির্মিত বিশ্বের দীর্ঘতম সেতুর উদ্বোধ করেছে চীন। ২০০০ কোটি ডলার ব্যয়ে সমুদ্রের ওপর নির্মিত ৫৫ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতু আজ মঙ্গলবার উদ্বোধন করেছে দেশটি। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এর উদ্বোধন রেন।

সেতুটি তৈরিতে সময় লেগেছে ৯ বছর। চীনের বৃহত্তর সামুদ্রিক এলাকার জন্য সেতুটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

সেতুটি দক্ষিণ চীনের ৫৬ হাজার ৫০০ বর্গকিলোমিটার এলাকা, হংকং ও ম্যাকাউসহ ১১টি শহরকে যুক্ত করেছে। এই এলাকায় প্রায় ৬৮ মিলিয়ন জনসংখ্যা রয়েছে।

এই সেতু দিয়ে ম্যাকাও ও হংকংয়ের যাত্রী ও যানবাহনগুলো সরাসরি এক অঞ্চল থেকে আরেকটিতে যাওয়া–আসা করতে পারবে। চীনের নদী পার্ল রিভারের ওপর দিয়ে সেতুটি বিস্তৃত। হংকং থেকে ম্যাকাওয়ে সড়কপথে যাতায়াতের জন্য তৈরি এ সেতু ৫৫ (৩৪ মাইল) কিলোমিটার দীর্ঘ। যাত্রাপথে সেতুটি আরও ১১টি বড় শহরকে যুক্ত করেছে। দক্ষিণ চীনের ৫৬ হাজার ৫০০ বর্গকিলোমিটার এলাকার ৬ কোটি ৮০ লাখ মানুষ এ সেতুর উপকারভোগী। এ সেতু চালু হলে হংকং ও ম্যাকাওয়ের মধ্য দূরত্ব আড়াই ঘণ্টা কমে আসবে। আগের তিন ঘণ্টার পথ এখন আধা ঘণ্টায় যাতায়াত করা যাবে।

এই সেতুতে চলতে হলে প্রাইভেট কারকে বিশেষ অনুমতি নিতে হবে। সেতুটি ব্যবহারের ক্ষেত্রে পর্যটকদের সুবিধার কথা চিন্তা করে ম্যাকাও ও ঝুহাইয়ের মধ্যে কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স বা ছাড়পত্র নিতে হবে। অর্থাৎ এই সেতু ব্যবহার করে পর্যটকদের এক অঞ্চল থেকে আরেক অঞ্চলে যেতে চাইলে ওই ছাড়পত্র দেখাতে হবে। এই প্রক্রিয়া হতে পারে অটোমেটিক বা সেমি-অটোমেটিক বা ম্যানুয়াল। পর্যটকদের জন্য দুই ধরনের সরকারি যানবহন থাকবে। এর মধ্য একটি নিয়মিত বাস সার্ভিস। অন্যটি শাটল সার্ভিস। এক চেক পয়েন্ট থেকে আরেক চেক পয়েন্টে যেতে-আসতে এই শাটল সার্ভিস ব্যবহার করতে পারবেন পর্যটকেরা।

হংকং-ঝুহাই-ম্যাকাও ব্রিজ অথরিটি সাত বছর আগে সেতুর নির্মাণকাজ শুরু করে। এখন সবার জন্য খুলে দেওয়া হচ্ছে। ২ হাজার কোটি ডলার ব্যয়ে তৈরি সেতুতে ৪ লাখ টন স্টিল ব্যবহার করা হয়েছে। সেতুটি তৈরির বিস্তর বিতর্ক হয় চীনে। কিন্তু দেশটি সমালোচনাকে পাশ কাটিয়ে তৈরি করে ফেলে সেতুটি।

চীনের নদী পার্ল রিভারের ওপর দিয়ে সেতুটি বিস্তৃত। ২০১৬ সালেই সেতুটি উদ্বোধনের কথা ছিল। কিন্তু পুরোপুরি কাজ শেষ না হওয়ায় তা সম্ভব হয়নি। সেতুটি বানাতে খরচ হয়েছে ২ হাজার কোটি ডলার। সেতুটি তৈরির সময়েই সাতজনের মৃত্যু হয়েছিল। এ জন্য নিরাপত্তা নিয়ে উঠেছিল প্রশ্ন। গত শুক্রবার চীনের সরকারি গণমাধ্যম জানায়, শেষ পর্যায়ে সেতুটির পরিকাঠামো এবং নিরাপত্তার দিকটি খতিয়ে দেখার কাজ চলছে।

ইংরেজি বর্ণমালার ‘ওয়াই’ আকৃতির মতো দেখতে সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০১১ সালে। প্রায় সাত বছর ধরে সেতুর কাজ চলার পর চলতি বছরেই তা সবার জন্য খুলে দেওয়া হচ্ছে। ৮ মাত্রার ভূমিকম্পরোধক এই সেতু তৈরির একটি রাজনৈতিক গুরুত্বও আছে। হংকংয়ে রাজনৈতিক আন্দোলনকে পাশ কাটানোও লক্ষ্য।

উন্নয়নের কথা বলে কঠোর হাতে হংকংয়ের আন্দোলন দমনের কারণে চীনের সমালোচনা আছে বিশ্বজুড়ে। এ সেতু উদ্বোধনের ফলে সেটিকে পাশ কাটানো যাবে বলে মনে করছে চীনা কর্তৃপক্ষ।

৪ লাখ টন স্টিলে তৈরি এ সেতু হওয়ার কারণে সেতুর সঙ্গে যুক্ত ১১টি শহরে আনন্দ শোভাযাত্রা ও মিছিল হয়েছে।

Bootstrap Image Preview