Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১০ শনিবার, মে ২০২৫ | ২৭ বৈশাখ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

রূপগঞ্জে মাদরাসা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

লিখন রাজ, রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১৮ অক্টোবর ২০১৮, ০৫:১৩ PM
আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০১৮, ০৫:১৩ PM

bdmorning Image Preview


নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের কাঞ্চন পৌরসভা এলাকার রানীপুরা আলিম মাদরাসার অধ্যক্ষ শেখ মোঃ আতিকুল্লাহর বিরুদ্ধে অনিয়মসহ ছাত্রী হয়রানি অভিযোগ উঠেছে।

ছাত্রী হয়রানি অভিযোগ এনে রানীপুরা এলাকার বিলকিস বেগম নামে এক অভিভাবক জানান, তার মেয়ে সাদিয়া আক্তার রানীপুরা মাদরাসার ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী। গত ১০ অক্টোবর বুধবার ভুলক্রমে শ্রেণিকক্ষে কলম না নেয়ায় সাদিয়া আক্তারকে মেরে আহত করেন।এ সময় চোখে আঘাত করলে ব্যয়বহুল চিকিৎসায় সেরে ওঠে ছাত্রীটি। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে ম্যানেজিং কমিটি ও অভিভাবকরা প্রতিবাদ করলে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দেয়ার হুমকি দেয়।

এদিকে পূর্বেরগাঁও এলাকার ফিরোজ মিয়ার মেয়ে ৮ম শ্রেণির ছাত্রী আমেনা, রানীপুরা এলাকার ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী সুমা আক্তারসহ অনেক ছাত্রী অধ্যক্ষের ভয়ে তারা মাদরাসায় আসা যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে।

এবিষয়ে আরেক শিক্ষার্থী রুবিনা আক্তার জানান, অধ্যক্ষ আতিকুল্লাহ হুজুর নানাভাবে ছাত্রীদের গায়ে আদরের নামে হাত দেন। আবার শাস্তি দিতে চাইলেও স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিয়ে যৌন হয়রানী করে থাকেন। এসব কারণে আমি বাড়িতে লেখাপড়া করি শুধু মাত্র পরীক্ষার সময় আমি মাদরাসায় যাই।

মাদরাসা ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি রফিকুল ইসলাম বলেন, অধ্যক্ষের ছাত্রী নির্যাতনের বিষয়টি শালিসের মাধ্যমে সমাধান করেছি। তাছাড়া মাদরাসার লেখাপড়ার মান রক্ষা করতে কমিটির পক্ষ থেকে সব রকম পদক্ষেপ নেয়া হবে।

এছাড়া তার বিরুদ্ধে জামাতের সাথে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে। জানা যায়, গোপনে জামায়াতের সাথে মিটিংয়ে যোগদানের সুবিধার্থে মাদরাসায় না এসেও হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে রাখেন। এ নিয়ে শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির লোকজন সতর্ক করলেও তাতে তার কিছুই হবে না বলে জানিয়ে দেন।

তবে অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করে শিক্ষক শেখ মুহাম্মদ আতিকুল্লাহ বলেন, আমার জমি সংক্রান্ত বিষয়ে দৌড়ঝাপ থাকায় মাদরাসায় উপস্থিত হতে পারিনি। তবে যাই করি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও ম্যানেজিং কমিটিকে জানিয়ে করি। ছাত্রী হয়রানী বিষয়ে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা অপরাধ করলে কিছুটা শাস্তি দিতে হয়। এছাড়া তার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের করে নানাভাবে ঘুষ নেয়ার অভিযোগ পাওয়া যায়।

এবিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যালয়ের শিক্ষক জানান, জালিয়াতির মাধ্যমে বরিশালের উজিরপুর মাদরাসা থেকে চাকুরীচুত্য হয়েও মন্ত্রীর স্বাক্ষর জালিয়াতি করার অপরাধে শাস্তি পেয়েছেন। তথাপিও রানীপুরা মাদরাসায় যোগদান করার পর থেকেই বিভিন্নভাবে শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে নানাভাবে ঘুষ নেয়ার অভিযোগ রয়েছে।

এছাড়া তার বিরুদ্ধে রয়েছে জাতীয় পতাকা অবমাননা করার বিষয়ে। জানা যায়, প্রতিদিনের ন্যায় গত ১৪ অক্টোবর রবিবার দুপুরে উপজেলার রানীপুরা আলিম মাদরাসা ভবনের সামনে এই প্রতিবেদক উড্ডয়মান পতাকাটি পুরনো ও ছেড়া দেখে বিদ্যালয় অধ্যক্ষকে জানাতে গেলে তিনি উপস্থিত না থাকায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলামকে মুঠোফোনে বিষয়টি জানান। তিনি তা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ওমর ফারুক ভুইয়া মাধ্যমে সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আশরাফুল আলম সিদ্দিকীকে ঘটনাস্থলে পাঠিয়ে পুরনো ও ছেঁড়া পতাকা উদ্ধার করে তাৎক্ষনিক নতুন পতাকা উড়াতে বাধ্য করেন।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ওমর ফারুক ভুঁইয়া বলেন, সকল অনিয়ম বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম বলেন, একটি মাদরাসা প্রধানের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ দুঃখজনক। ঘটনা তদন্ত করে উপযুক্ত আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Bootstrap Image Preview