Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৬ মঙ্গলবার, মে ২০২৫ | ২৩ বৈশাখ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

ঘূর্ণিঝড় তিতলি: প্রাণ গেল ৮ জনের, ঘরছাড়া ৩ লাখ মানুষ

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১ অক্টোবর ২০১৮, ০৪:৪৬ PM
আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০১৮, ০৪:৪৬ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


ভারতের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের অন্ধ্রপ্রদেশে ঘূর্ণিঝড় তিতলির আঘাতে অন্তত ৮ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। বৃহস্পতিবার সকালে প্রদেশের শ্রীকাকুলাম ও বিজয়নগরাম জেলায় ঘূর্ণিঝড় তিতলি আঘাত হানলে এ প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।

ভারতের ওদিশার দক্ষিণ উপকূলে আজ সকালে আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় তিতলি। প্রাণঘাতী এ ঝড়ের আঘাতে প্রতিবেশী অন্ধ্র প্রদেশের দুজন নিহত হয়েছেন। ঝড়ো বাসাত উঁপড়ে ফেলেছে গাছ আর বিদ্যুতের খুঁটি। ভারতের ন্যাশনাল ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথোরিটি এসব তথ্য জানায়।

ঙ্গোপসাগরের 'তীব্র মাত্রর সাইক্লোন ঝড়' হিসেবে গণ্য হয়েছে তিতলি। সঙ্গে ছিল তীব্র বৃষ্টি। ওদিশার উপকূলীয় অঞ্চলের তিন লাখের বেশি সংখ্যক মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। 

সৈকতের আশপাশের এলাকা থেকে সবাকে নিরাপদে সরে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ। এখানে তিতলি সম্পর্কে কিছু তথ্য তুলে ধরেছে কর্তৃপক্ষ। 

ভারতীয় বার্তাসংস্থা এএনআই বলছে, অন্ধ্রপ্রদেশের এ দুই জেলায় তিতলি আঘাত হানার পর বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। প্রদেশের উপকূলীয় এলাকার গ্রামগুলোর সঙ্গে রাজ্যের যোগাযোগব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় তিতলির তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশের পালাসা রেলস্টেশন।

এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৪টা থেকে সাড়ে ৫টার মধ্যে অন্ধ্রপ্রদেশের পার্শ্ববর্তী উড়িষ্যায় আঘাত হানে তিতলি। এ সময় ঘণ্টায় ১২৫ কিলোমিটারের বেশি বেগে বাতাসের পাশাপাশি ভারি বৃষ্টিপাত হয়। তবে উড়িষ্যায় তিতলির আঘাতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি বলে দাবি করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নবীন পাটনায়েক।

এনডিটিভি বলছে, অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীকাকুলামে ১৪০ থেকে ১৬০ কিলোমিটার বেগে আঘাত হেনেছে তিতলি। ঘূর্ণিঝড় তিতলি আঁছড়ে পড়ায় অন্ধ্রপ্রদেশ এবং উড়িষ্যার মধ্যে বিমান ও রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। ভূবনেশ্বর থেকে বিমানের পাঁচটি ফ্লাইটের উড্ডয়ন এবং অবতরণ বাতিল করেছে ইন্ডিগো এয়ারলাইন্স।

উড়িষ্যার গ্যাঞ্জাম, গজপতি, ক্ষুরদা, জগৎসিংপুর, কেন্দ্রপাড়া, ভদ্রক ও বালাসোর জেলায় আঘাত হেনেছে ঘূর্ণিঝড় তিতলি। এসব জেলার বিভিন্ন স্থানে ঝড়ের আঘাতে গাছ উপড়ে পড়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ও টেলিফোন সংযোগ বিঘ্নিত হয়েছে। রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার খবরও এসেছে।

এর আগে বুধবার উড়িষ্যার রাজ্য সরকার উপকূলীয় জেলাগুলোর প্রায় তিন লাখ মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়েছে। আবহাওয়া পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত স্থানীয় স্কুল, কলেজ ও অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

উড়িষ্যা এবং অন্ধ্রপ্রদেশে আঘাত হানার পর ঘূর্ণিঝড় তিতলি ক্রমান্বয়ে দূর্বল হয়ে পড়ছে। বর্তমানে এ দুই প্রদেশে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ থেকে ৬০ কিলোমিটার বলে জানিয়েছেন বিশাখাপত্তমের ঘূর্ণিঝড় সতর্ক কেন্দ্রের দায়িত্বরত কর্মকর্তা শ্রীনিবাস।

ওদিশার ৫টি উপকূলীয় শহর থেকে কমপক্ষে ৩ লাখ মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নিয়েছে রাজ্য সরকার। ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে মারাত্মক বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে। বাড়িছাড়া মানুষগুলোকে আশ্রয়কেন্দ্রে স্থান দেয়া হয়েছে। গর্ভবতী নারীদের রাখা হয়েছে হাসপাতালে। 

ভারতের আবহাওয়া দপ্তর জানায়, এই সাইক্লোনের উপকূলীয় অঞ্চলে আঘাত হানা শেষ হয়েছে। স্থলভাগে রয়েছে এর 'সেন্টার অব আই অব সাইক্লোন'। 

এখন তিতলি পশ্চিমবঙ্গের দিকে ধাবিত হচ্ছে। তবে ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। 

Bootstrap Image Preview