Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৬ মঙ্গলবার, মে ২০২৫ | ২২ বৈশাখ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

খুনের প্রায়শ্চিত্য করতে নিজের কিডনি দান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৮ অক্টোবর ২০১৮, ০৭:৩১ PM
আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০১৮, ০৭:৩১ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


রাগের মাথায় নিজের হাতে চাচাকে খুন করেছিলেন। চাচার শরীর থেকে রক্ত ছিঁটকে পড়েছিল তার গায়ে। তারপরই সম্বিৎ ফেরে। দুষ্কর্মের প্রায়শ্চিত্ত করতে নিজের কিডনি বিক্রির টাকায় বন্ধুর পরিবারের পাশে দাঁড়ালেন তিনি।

জানা গেছে, ওই ব্যক্তির নাম সুকুমার। তিনি ভারতের কেরালার পাত্তাম্বির বাসিন্দা। ১১ বছর আগে মোবাইলের টাওয়ার বসানোকে কেন্দ্র করে চাচার সঙ্গে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েন। রাগের মাথায় ধারালো অস্ত্রের কোপ মারেন তাকে। ফিনকি দিয়ে চাচার দেহ থেকে রক্ত বেরিয়ে পড়ে তার গায়ে। আর তারপরই সম্বিৎ ফেরে তার।

তিনি ভাবতে থাকেন, এ কি করলাম আমি! নিজেই ফোন করে পুলিশে খবর দেন। পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণও করেন। তার পর থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত কারাগারেই কাটিয়েছেন তিনি। আর প্রতি মুহূর্তে অন্যদের জন্য ভালো কিছু করতে নিজের জীবন উৎসর্গ করতে চেয়েছেন।

সুকুমার জানান, খবরের কাগজের প্রতিবেদনে একবার এক দম্পতির কথা পড়েছিলেন। যারা কিডনি দান করেছেন। সেই থেকে সুকুমারও নিজের কিডনি দান করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। ইচ্ছার কথা জানিয়ে কারা কর্তৃপক্ষতে চিঠিও লেখেন। কিন্তু একজন বন্দি কীভাবে কিডনি দান করতে পারেন? এমন কোনো আইন নেই বলেই প্রত্যুত্তরে সুকুমারকে জানায় জেল কর্তৃপক্ষ। এতে অবশ্য হাল ছাড়েননি তিনি। তৎকালীন কেরালার মুখ্যমন্ত্রীকেও চিঠি লেখেন। পাশাপাশি কেরালা হাইকোর্টে সাজা কমানোর মামলা শুরু করেন। যাতে মুক্ত হয়ে অন্তত ইচ্ছা পূরণ করতে পারেন।

২০১৭ সালে করাগার থেকে মুক্ত হন তিনি। কারাগার থেকে বের হওয়ার পর সুকুমার সাথী মেডিক্যাল ইনফরমেশন সেন্টারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। সেখান থেকেই কিডনির সমস্যায় ভোগা ২১ বছরের এক যুবকের খোঁজ পান তিনি। ওই মেডিক্যাল সেন্টারের মাধ্যমে নিজের কিডনি ওই যুবককে দান করেন সুকুমার।

এর মাঝে নিজের স্ত্রীর সঙ্গেও তার বিবাহবিচ্ছেদ হয়। জেলে থাকাকালীন আরেক বন্দির সঙ্গে বন্ধুত্ব হয় তার। সুকুমারের আগে সেও ছাড়া পেয়েছিল। এরপর সেই বন্দির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। কিন্তু তার স্ত্রী জানান, সেই বন্ধু কয়েকদিন আগেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। আর তিনিও খুবই অসুস্থ। অর্থের অভাবে নিজের চিকিৎসা করাতে পারছেন না।

সব জেনে আর নিজেকে স্থির রাখতে পারেননি সুকুমার। কিডনি দেওয়ার পর যে টাকা পেয়েছিলেন, তা দিয়ে বন্ধুর স্ত্রীর চিকিৎসা করান তিনি। সম্প্রতি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ওই নারী। তারপর থেকে দু’জনে পাত্তাম্বির একটি ভাড়া বাড়িতে একসঙ্গেই রয়েছেন। ওই নারীর চার বছরের এক সন্তানও রয়েছে। খুব তাড়াতাড়ি তারা বিয়েও করবেন বলে জানান সুকুমার। বর্তমানে পাত্তাম্বিতে লটারির টিকিট বিক্রি করে দিন গুজরান করেন তিনি।

Bootstrap Image Preview