ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি গ্রেফতার হওয়ায় বাদী আত্মীয়স্বজনকে আটকে রেখে নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে আসামির পক্ষের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে মাদারীপুর সদর উপজেলার রাস্তি ইউনিয়নে পশ্চিম রাস্তি গ্রামে। নির্যাতনের স্বীকার হয়ে এলাকা ছাড়া হয়েছে বাদীর আত্মীয় স্বজনরা।
ভুক্তভোগী পরিবার জানায়, সাব্বির নামে এক বখাটে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে প্রেমের সর্ম্পক করে একাধিকবার ধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ করেছে এক কিশোরী। দুই বছর হয়ে গেলেও বিয়ে না করায় বৃহস্পতিবার (১৯ জুলাই) রাতে সদর মডেল থানায় সাব্বিরকে প্রধান আসমি করে ৪জনের নামে একটি নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করেছে ভুক্তোভুগী কিশোরী। মামলা নং-৫৮/৪৮৭। এরপর বিভিন্ন গনমাধ্যমে সংবাদ প্রচার হওয়ায় দুপক্ষে সম্মতিতে বিয়ে হলেও মেয়েটিকে মেনে নেয়নি ছেলের পরিবার। তাই মামলাও তুলে নেয়নি বাদী পক্ষ। এর পরিপ্রেক্ষিতে মামলার দেড়মাস পর প্রধান আসামি গ্রেফতার হলে আসামি পক্ষ থেকে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি দিচ্ছে মামলা তুলে নেয়া জন্য। তবে বৃহস্পতিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সকালে আসামির পক্ষের স্বজনেরা বাদীর মামা বারেক মোড়ল ও তার পরিবারের সকল সদস্যকে আটকে রেখে অমানবিক নির্যাতন করেছ বলে অভিযোগ রয়েছে। এরপর পুলিশকে বিষয়টি জানালে তার ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে নিয়ে আসে। তারপর থেকে নির্যাতনের ভয়ে বারেক মোড়ল(বাদীর মামা)সহ তার পরিবার এলাকাছাড়া হওয়ার পর থেকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
ধর্ষণ মামলার বাদী বলেন, প্রধান আসামি গ্রেফতারে পর থেকে আমার দুলাভাইকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি-ধামকি দিচ্ছে মামলা তুলে নেয়ার জন্য। আমি সাব্বিরের ৯মাসের সন্তান গর্ভে নিয়ে অসহায় হয়ে দুলাভাইয়ের বাসায় আশ্রয় নিয়েছি। আমি ও আমার গর্ভের সন্তানের ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা চাই।
ধর্ষণ মামলার বাদীর ভগ্নীপতি সেলিম আহম্মেদ বলেন, আমাদের মামলা তুলে নেয়ার জন্য বিভিন্ন ভাবে হুমকি-ধামকি দিচ্ছে আসামীর পক্ষের লোকজন। এবং বৃহস্পতিবার সকালে সদর উপজেলার রাস্তি এলাকায় মামা- মামি ও তার মেয়েকে পাশ্ববর্তী একটি ইটের ভাটায় আটকে রেখে বিভিন্নভাবে নির্যাতন করেছে, এরপর ৩-৪ ঘন্টাপর পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে। এবং তারা ভয়ে এলাকা ছেড়ে সবার সাথে যোগাযোগ বন্ধ রেখেছে। তাই কোন অভিযোগ করতে পারছি না। তাদের পেলেই অভিযোগ দেয়া হবে।
এব্যাপারে ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত সাব্বিরের বাবা মতলেব সরদার বলেন, আমিতো সবকিছু মেনে নিয়েছি, তারপরও কেন আমার ছেলেকে গ্রেফতার করলো। তাছাড়া আমরা কাউকে মারধর করি নাই। শুনছি স্থাণীয় একটি ক্লাবের লোকজন ওদেরকে নিয়ে গিয়েছিল এর বেশী আমি জানি না।
মাদারীপুর সদর থানা এসআই বিল্টু দাস জানান, ধর্ষণের অভিযোগে থানায় একটি মামলা হওয়ার পর গত ৭ সেপ্টেম্বর আসামী সাব্বিরকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। বাদী পক্ষের মামা-মাকিকে বেধে রেখে মারধর করে নাই। শুনেছি ঐ এলাকা একটি শালিস বসেছিল সেখানে একটু হাতাহাতি হয়েছে, আমরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে এনে বাদীপক্ষের লোকজনকে ঐখান থেকে নিয়ে আসি।
মাদারীপুর পুলিশ সুপার সুব্রত হালদার জানান, যদি এরকম ঘটনা ঘটে থাকে তাহলে তারা থানা মামলা করলে আমরা আইগত সহয়তা করবো।