প্রেমের শুরুটা ছিলো ভিন্ন। রং নাম্বার থেকে অপরচিত কন্ঠ, কথা বলতে বলতে সে অপরিচিত সম্পর্ক গড়িয়ে যায় প্রেমের সম্পর্কে। কেটে যায় দীর্ঘ ৯ মাস। আর সেই প্রেমের সম্পর্কই যেন কাল হয়ে দাড়ায় প্রেমিকার জন্যে। এমনই এক মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলায়। অভিযোগ উঠেছে ১৬ বছরের এক কিশোরীকে প্রেমের সূত্র ধরেই প্রেমিক জহিরুল ইসলাম ওরফে জহির শেখ ধর্ষণ করে। শুধু তাই নয়, ধর্ষণের পর ঐ কিশোরীকে হত্যাও করে জহিরুল।
এ ঘটনায় গত বুধবার ঢাকার রামপুরা এলাকা থেকে পুলিশ অভিযুক্ত আসামি জহিরুলকে গ্রেফতার করেছে।
জানা যায়, নিহত কিশোরী কলমাকান্দা উপজেলার কৈলাটী ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর গ্রামের বাসিন্দা। গ্রেফতার জহিরুল ইসলাম নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার বাকলজোড়া ইউনিয়নের চারিগাঁও গ্রামের মৃত আবদুল খালেকের ছেলে এবং সে এক সন্তানের জনক।
নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, নিহত কিশোরীর সঙ্গে প্রায় ৯ মাস আগে মোবাইল ফোনে রং নাম্বারে জহিরুল ইসলামের পরিচয় হয়। পরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরই সুবাদে গত ১৭ জুলাই ঐ কিশোরীকে ফুঁসলিয়ে বাড়ি থেকে নিয়ে যায় জহির। বিবাহিত থাকার বিষয়টি গোপন করে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তাকে ধর্ষণ করে। পরে বিয়ের বিষয়টি জানাজানি হলে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে তাকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে। পরে গ্রামের জনৈক এমদাদের নিচু জমিতে মরদেহ মাটি চাপা দেয়। ঘটনার পর জহির কাজের সন্ধানে ঢাকায় চলে যায় এবং ঐ কিশোরীর মোবাইলটি বন্ধ রাখে। প্রায় এক মাস পর তার মোবাইলটি চালু করে জহির।
এদিকে বিভিন্ন স্থানে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও ঐ কিশোরীকে না পেয়ে তার বাবা ৩০ জুলাই কলমাকান্দা থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করেন। পরে কলমাকান্দা থানা পুলিশ মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে জহিরের অবস্থান শনাক্ত করে তাকে গ্রেফতার করে কলমাকান্দা থানায় নিয়ে আসে। পরে তার দেয়া তথ্যমতে ও তার দেখানো জায়গায় মাটি খুঁড়ে প্রেমিকার চুল ও কাপড়ের অংশ উদ্ধার করে পুলিশ।
কলমাকান্দা থানা পুলিশের এসআই মারুফুজ্জামান জানান, জহিরুল ইসলামের দেয়া তথ্য মতে মাটি খুঁড়ে চুল ও কাপড়ের অংশ সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে।
কলমাকান্দা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল করিম বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জহিরুল ইসলাম হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি স্বীকার করেছে। এ ঘটনায় ধর্ষিতার বাবা বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে একটি মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ জহিরুল ইসলামকে নেত্রকোনা আদালতে পাঠিয়েছে।