১৯৯৪ সালে বাংলাদেশ থেকে র্যাঙ্কিংয়ে পিছিয়ে থাকা দেশটাই এখন কাতার বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে। সেই সময়টাতে লাল-সবুজের র্যাঙ্কিংয়ে ছিলো ১১৫ আর ক্রোয়েশিয়ার ছিলো ১২২। অথচ ক্রোয়াটদের বর্তমান অবস্থান সেরা ১২ তে। আর বাংলাদেশ পেছাতে পেছাতে দেয়ালে পিঠ ঠেকেছে।
ফুটবল নিয়ে বাংলাদেশের মানুষের উন্মাদনা, উত্তেজনার কোনো কমতি নেই। চার বছর পর পর আসা ফিফা বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ফুটবল ভক্তদের আনন্দের রেশটা ছাড়িয়ে যায় সবকিছুতে। ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা নিয়ে মাতামাতি করলেও বাংলাদেশ যে বিশ্বমঞ্চের ধারে কাছেও ঘেষতে পারেনি কখনো। কিন্তু ১৯৯৪ সালে বাংলাদেশের চেয়ে র্যাঙ্কিংয়ে পিছিয়ে থাকা দলটাও যে এবার খেলছে বিশ্বকাপের সেমিতে।
১৯৯৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ১২২ নম্বর দল ছিলো ক্রোয়েশিয়া। এরপর মাত্র ১০ মাসের ব্যবধানে ওই বছরের ডিসেম্বরে তারা উঠে আসে ৬২ তে। অপরদিকে, ১৯৯৪ সালের ফেব্রুয়ারীতে বাংলাদেশের অবস্থান ছিলো ১১৫ তে। আর ডিসেম্বরে সেখান থেকে ১৫ ধাপ পিছিয়ে অবনমন হয় ১৩০ এ।
সেখান থেকেই ১৯৯৬ সালে ক্রোয়েশিয়ার র্যাঙ্কিংয়ে অবিশ্বাস্য উন্নতি। দুই বছরের ব্যবধানে তারা উঠে আসে ৪০ ধাপ ওপরে ২২ নম্বরে! এরপর ১৯৯৮ বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো খেলার সুযোগ পায় ক্রোয়াটরা। আর ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে তখন বাংলাদেশের অবস্থান আরো ধাপ কয়েক পিছিয়ে ১৩৯ এ।
১৯৯৮ থেকে ২০২২; মাঝে ২০১০ বাদে বিশ্বকাপের বাকি ৬ আসরেই অংশ নিয়েছে ক্রোয়েশিয়া। ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ১২২ এ থাকা সেই ক্রোয়াটদের অবস্থান এখন ১২ তে। খেলেছে ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপের ফাইনালও, এমনকি চমক দেখিয়ে উঠে এসেছে কাতার বিশ্বকাপের সেমিতে।
আর মুদ্রার ঠিক উল্টো পীঠে বাংলাদেশ হারিয়ে গেছে ব্যর্থতার সাগরে। পেছাতে পেছাতে বিশ্বের সবচেয়ে বাজে ফুটবল খেলুড়ে দেশগুলোর তালিকায় নাম লিখিয়েছে লাল-সবুজের দেশটা।
একদিকে পর্যায়ক্রমে সফলতার সিড়ি বেয়ে ক্রোয়েশিয়ার উপড়ে উঠে আসা, আরেকদিকে, বাংলাদেশের ফুটবলের ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া। মাত্র ৪১ লাখ জনসংখ্যার দেশ যখন পর পর দুই বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে, তখন, ১৮ কোটির জনসংখ্যার বাংলাদেশের ফুটবল পাগল সমর্থকরা আশায় বুক বেঁধে আছে স্রেফ দেশের ফুটবলকে একদিন বিশ্বমঞ্চে দেখবে বলে।