ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সিগারেট নিষিদ্ধ করে আইন পাস করেছে নিউজিল্যান্ড। এতে করে প্রশান্ত মহাসাগরীয় এই দেশটিতে তামাক প্রায় সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ হয়ে যাবে। মঙ্গলবার (১৩ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিউজিল্যান্ড আগামী বছর থেকে প্রায় সম্পূর্ণরূপে তামাক নিষিদ্ধ করবে। মঙ্গলবার দেশটির পার্লামেন্টে এ সংক্রান্ত যে আইনটি পাস করা হয়েছে, তার অর্থ হলো- নিউজিল্যান্ডে ২০০৮ সালের পরে জন্মগ্রহণকারী কেউ আর কখনোই সিগারেট বা তামাকজাত দ্রব্য কিনতে পারবেন না।
এর মানে হচ্ছে, তামাক কিনতে সক্ষম বা অনুমতি আছে এমন লোকের সংখ্যা প্রতি বছর সংকুচিত হবে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, ২০৫০ সালের মধ্যে ৪০ বছর বয়সীরা সিগারেট কেনার জন্য খুব কম বয়সী হবে।
নিউজিল্যান্ডের স্বাস্থ্যমন্ত্রী আয়েশা ভেরাল দেশটির পার্লামেন্টে এই বিলটি উত্থাপন করেছিলেন। তিনি বলছেন, এই আইন ধূমপানমুক্ত ভবিষ্যতের দিকে একটি পদক্ষেপ।
ডা. ভেরাল আরও বলেন, ‘হাজার হাজার মানুষ দীর্ঘজীবী হবে, স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন করবে এবং ধূমপানের কারণে সৃষ্ট অসুস্থতার চিকিৎসার প্রয়োজন না হওয়ার কারণে দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ৫ বিলিয়ন নিউজিল্যান্ড ডলার বাঁচাতে পারবে।’
বিবিসি বলছে, নিউজিল্যান্ডের ধূমপানের হার ইতোমধ্যেই ঐতিহাসিকভাবে সর্বনিম্ন পর্যায়ে রয়েছে। গত নভেম্বর মাসে প্রকাশিত সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রাপ্তবয়স্কদের মাত্র ৮ শতাংশ দৈনিক ধূমপান করে থাকে, যা গত বছরের ৯.৪ শতাংশ থেকে কম।
আশা করা হচ্ছে, স্মোকফ্রি এনভায়রনমেন্টস বিল নামের এই আইনটি ২০২৫ সালের মধ্যে এই সংখ্যাটিকে ৫ শতাংশেরও নিচে কমিয়ে আনবে। মূলত শেষ পর্যন্ত ধূমপানের এই অভ্যাসটি সম্পূর্ণভাবে নির্মূল করার লক্ষ্যে এই আইনটি পাস করা হয়েছে।
অবশ্য এই আইনের যে সমালোচনা হচ্ছে না এমনটি নয়। নিউজিল্যান্ডের পার্লামেন্টে ১০টি সিটের অধিকারী অ্যাক্ট পার্টিসহ এই বিলের সমালোচকরা সতর্ক করে বলেছেন, নতুন এই আইন তামাকজাত দ্রব্যের কালোবাজারিকে উস্কে দিতে পারে এবং সেটি হলে ছোট দোকানগুলো ধ্বংস হয়ে যাবে।
অ্যাক্ট পার্টির ডেপুটি লিডার ব্রুক ভ্যান ভেল্ডেন বলেন, ‘কেউ লোকদের ধূমপান করতে দেখতে চায় না, কিন্তু বাস্তবতা হলো- (তামাকের ওপর) রাষ্ট্রীয় এই নিষেধাজ্ঞা কিছু সমস্যার কারণ হতে চলেছে।’