ফুটবলের ভীষণ ভক্ত বৃটিশ পর্নো তারকা তানিয়া তাটে। এবারের বিশ্বকাপ আয়োজন নিয়ে সন্তুষ্ট হতে পারেননি তিনি। কড়া সমালোচনা করেছেন আয়োজকদের। বলেছেন, কাতার হলো অতিমাত্রায় রক্ষণশীল। সাধারণত, বিশ্বকাপ ফুটবলে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিভিন্ন বিশ্বাসের মানুষ জমায়েত হয়। তাদের কালচার, চালচলন, পোশাকে থাকে নানা বৈচিত্র। কিন্তু কাতারে সেই স্বাধীনতা নেই। অথচ এই রক্ষণশীল মধ্যপ্রাচ্যের অনেক পুরুষ তার সঙ্গে এক্স-রেটেড ভিডিও চ্যাট করে। এর বিনিময়ে তারা তাকে মোটা অংকের অর্থ পরিশোধ করে। তানিয়া তাটে ১২ বার পর্নো জগতের ‘এমআইএলএফ অব দ্য ইয়ার’ বিজয়ী।
এ জগতে তার পরিচিতি বিশাল। তার সঙ্গে চুটিয়ে রগরগে টেলিসংলাপ করেন অসংখ্য আরব পুরুষ। ফোনালাপে তারা চরম মাত্রায় পৌঁছে যান। সীমা অতিক্রম করেন। অর্থের বিনিময়ে ওপার থেকে ফোনে তাদের সঙ্গী থাকেন তানিয়া তাটে।
কিন্তু সেই আরব বিশ্বে সবার একরকম স্বাধীনতা নেই বলে কড়া সমালোচনা করেছেন তিনি। বলেছেন, এসব দেশে পুরুষদের জন্য একরকম আইন। অন্যদের জন্য অন্যরকম আইন। এর মধ্য দিয়ে ওই অঞ্চলে যৌন নিষ্পেষণ করা হয়। কাতারে সমকামিতা নিষিদ্ধ। লিভারপুলের ভক্ত তানিয়া বিশ্বাস করেন, বিশ্বমানুষের জন্য আয়োজিত এই ফিফা উৎসব এমন একটি দেশে হওয়া উচিত যেখানে নারী ও এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়ের আরও বৃহত্তর অধিকার আছে।
তানিয়া বলেন, সৌদি আরবে আমার অনেক ভক্ত আছেন। টেলিফোন কল বা ভিডিও চ্যাটের মাধ্যমে তারা ভাচ্যুয়ালি আমার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন। আমার সঙ্গে তারা পুরনো সব ধারা ব্যবহার করেন। এমন পরিবেশে কাতার নারীদের মূল্যায়ন করতে ব্যর্থ হচ্ছে। এ দেশটিতে অংশীদারিত্বে সমতা নেই। নেই কোনো মুক্ত জীবন। কাতারের নারী জনগোষ্ঠীর জন্য এটা আমাকে ব্যথিত করে। কারণ, সেখানকার নারীরা তাদের নিজেদের মতো সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে মুক্ত নন। যদি তারা অনুগত না থাকেন তাহলে শাস্তি পেতে হয়। বিয়ে, পড়াশোনা, ভ্রমণ এবং সুনির্দিষ্ট কাজের জন্য তাদেরকে অনুমতি নিতে হয় পুরুষ অভিভাবকদের কাছ থেকে। একজন নারী কি করবেন, কখন করবেন- তা যখন তাকে বলে দেয়া হয় তখন এমন চিত্র কল্পনা করতে পারি না। অন্য পার্টনাররা যা করছেন, আমারও তো তা করার অধিকার আছে। কিন্তু আধুনিক সময়ে এসবই ঘটছে, এটা ভেবে বিস্মিত হই।
তানিয়া তাটে’র বয়স এখন ৪৩ বছর। তিনি জানেন ইংল্যান্ডের ফুটবল ভক্তরা থাকেন উত্তেজিত। তারা এ সময় ফুটবলের বাইরে কিছু চান। তারা থাকেন শিহরিত। তাদেরকে তিনি অভিহিত করেছেন ‘নো ফান কাপ’ হিসেবে। তিনি এসব ইংলিশভক্তদের পরামর্শ দিয়েছেন ঘরের মধ্যেই ‘আনন্দে’ মেতে উঠতে। এ অবস্থায় তিনি যদি দোহা’য় যেতেন তাহলে তার ফোন নিয়েই বড় সমস্যায় পড়ে যেতেন বলে মনে করেন তানিয়া।
শীতকালে বিশ্বকাপ আয়োজন নিয়েও তিনি কথা বলেছেন। তানিয়া বলেন, অন্য মানুষের মতোই আমিও ইংল্যান্ডের ম্যাচ দেখছি। আনন্দ করছি। কিন্তু নারী ও এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়ের প্রতি কাতারের নিষ্পেষণমূলক মনোভাব আমাকে বিরক্ত করছে। আমি ‘নটি মুভি’ করি। ভিডিও করি। আমি যদি কাতারে যেতাম, তাহলে ফুটবল দেখা কঠিন হতো। আমাকে নানা সমস্যায় পড়তে হতো। আমার ক্যারিয়ার গড়ে উঠেছে আমার ব্যক্তিগত পছন্দ, সন্তুষ্টি এবং আমার ব্যক্তিগত সীমার মধ্যে যৌন কর্মকাণ্ডে মিলিত হওয়ার চুক্তিতে। অন্যদের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনে আমি অবাধ। এতে কেউ বাধা দেয় না। এ জন্য আমি খুবই লাকি মানুষ।
কাতার বিশ্বকাপ আয়োজনের কারণে তিনি হতাশ। তা সত্ত্বেও তানিয়া বিশ্বাস করেন, শীতকালে বিশ্বকাপ আয়োজনে কিছু সুবিধাও আছে। এক্ষেত্রে তিনি তার প্রিয় লিভারপুল এফসি’র প্রসঙ্গ তোলেন। বলেন, ‘রেড’রা এখন প্রিমিয়ার লিগের ৬ষ্ঠ অবস্থানে আছে। তবে জুর্গেন ক্লোপের বাহিনী আগামী বছর আরও ভাল করবে বলে আশাবাদী আমি। বিশ্বকাপ উপলক্ষে প্রিমিয়ার লিগকে মাঝপথে থামিয়ে দিয়েছে ফিফা। এটা এক উদ্ভট ব্যাপার। তারপরও বিষয়টি লিভারপুলের জন্য আশীর্বাদ হয়ে এসেছে। কারণ, ক্লাবটিতে এখন বেশ কিছু খেলোয়াড় ইনজুরিতে। তারা বিশ্বকাপের এই সময়টাতে সুস্থ হয়ে উঠবেন। নতুন করে শুরু করবেন।