Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ সোমবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৫ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

বিএনপির সমাবেশের কথা শুনে বাস মালিকরা ভয় পেয়েছে: কাদের

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২২ অক্টোবর ২০২২, ০২:২১ PM
আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০২২, ০২:২১ PM

bdmorning Image Preview


বিএনপি এমন একটা দল, তাদের সমাবেশের কথা শুনলে যদি কেউ ভয় পায়, বাস মালিকরা যদি বাস না চালায়, ড্রাইভার-হেলপাররা যদি বাসে উঠতে না চায়, তাহলে সরকারের কিছু করার নেই বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

শুক্রবার রাতে রাজধানীর একটি হোটেলে আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক উপকমিটি আয়োজিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর ‘মাইন্ড বিহাইন্ড দি মিরাকল’ অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

আগামীকাল শনিবার খুলনায় বিভাগীয় গণসমাবেশ করবে বিএনপি। সমাবেশের আগে জেলায় বাস-লঞ্চসহ অন্য সব গণপরিবহন বন্ধ করে দিয়েছে জেলা পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সমিতি। হঠাৎ করে শুক্রবার ও শনিবার দুদিন এসব পরিবহন বন্ধের বিষয়ে নিজেদের ব্যাখ্যাও দিয়েছে পরিবহন নেতারা।

তবে বিএনপির দাবি, তাদের সমাবেশ বন্ধ করতেই সরকার চাপ দিয়ে মালিক ও শ্রমিকদের দিয়ে গণপরিবহন বন্ধ করেছে।

বিএনপির দাবিকে উড়িয়ে দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি এমন একটা দল, তাদের সমাবেশের কথা শুনলে যদি কেউ ভয় পায় বাস মালিকরা যদি বাস না চালায়, ড্রাইভার হেলপাররা যদি বাসে উঠতে না চায়, তাহলে আমরা কি করব!

‘সরকার তো এটা বন্ধ করেনি। এই বিষয়ে সরকারের কোনো নির্দেশনা নাই, আমাদের কি করার আছে এখানে? বাস মালিক-শ্রমিকদের নিজস্ব সিদ্ধান্ত এটা। বাস মালিক-শ্রমিকরাও তো সরকার বিরোধী ধর্মঘট এবং অবরোধ করেছে।’

তিনি বলেন, ‘আসলে বিএনপির সমাবেশ নিয়ে তারা ভয় পেয়েছে এবং তাই তারা বাস বন্ধ রেখেছে। সরকারের এখানে কোনো হাত নাই। আমরা বিআরটিসিকে বাস বন্ধ রাখার কোনো নির্দেশ দেই নাই। বেসরকারি মালিকদের ওপর আমাদের কোনো হাত নাই এবং আমরা সেখানে হস্তক্ষেপও করি না।’

অনুষ্ঠানে বিএনপির ১০ ডিসেম্বর নিয়ে লাগাতার বক্তব্যকে রঙিন খোয়াব বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।

কাদের বলেন, ‘এটা বিএনপির রঙিন খোয়াব। যা অচিরেই কর্পূরের মত উড়ে যাবে। ডিসেম্বর এলে খোঁজই থাকবে না তাদের, তখন রাজপথ বিজয়ের চেতনায় উজ্জীবিত থাকবে।’

ডিসেম্বর বিএনপির নয়, বরং দেশের বিজয়ের মাস, মানুষের মাস বলে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বিজয়ের মাসের যে চেতনা, বাংলাদেশ রাষ্ট্রের যে চেতনা, সেই চেতনা বিএনপি ধারণ করে না। কাজেই ডিসেম্বর আমাদের মাস, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষের শক্তির মাস। বিএনপি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা লালন করে না, ধারণ করে না, কাজেই ডিসেম্বর মাসে তারা রাজপথ দখল করবে তাদের রঙিন খোয়াব ছাড়া আর কিছুই না।’

চট্টগ্রামে বিএনপির জনসভায় অনেক জনসমাগম হয়েছে বলে স্বীকার করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী। তবে সেটাকে তিনি আহামরি লোক নয় বলেও জানিয়েছেন। বলেছেন, ‘বিএনপির আগের জনসভায় (চট্টগ্রাম) কি ১০ লাখ লোক হয়েছে? তবু আমি বলেছি, লক্ষাধিক লোক হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে কি তাই হয়েছে, আমি তো তাও লক্ষাধিক বলেছি।

‘তাদের এসব লক্ষ লক্ষ সংখ্যাতত্ত্ব...! তারা আবার বলেছিল আওয়ামী লীগ ৩০ সিটও পাবে না। বিএনপি এসব আজব আর উদ্ভট সব হিসাব করে। এর আগে ২০০৮ সালে নির্বাচনে দেখা গেল, নির্বাচনে বিএনপি ৩o সিট পেয়েছে, কাজেই তাদের এই হিসাবে কোনো লাভ নেই।’

খুলনায় শনিবার বিএনপির জনসভাকে কেন্দ্র করে জেলায় পরিবহন বন্ধ করেছে বলে যে অভিযোগ করেছে দলটি তারও ব্যাখ্যা দেন আওয়ামী লীগের এই শীর্ষ নেতা।

এ ছাড়া গত কয়েকদিন খুলনায় বিএনপি নেতাকর্মীদের ব্যাপক ধরপাকড় করা হচ্ছে বলে যে অভিযোগ দলটির পক্ষ থেকে করা হয়েছে, সেটি নিয়েও কথা বলেন ওবায়দুল কাদের। বলেন, ‘প্রকৃত অর্থে যারা দাগী আসামি, যারা মাদক ব্যবসায়ী, যাদের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট আছে, পুলিশ তাদেরকে ধরপাকড় করছে। অথচ বিএনপি এটাকে ভিন্ন খাতে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে।

‘সরকারের কাছে বার্তা আছে যে, বিএনপি খুনি আর সন্ত্রাসীদেরকে খুলনার সমাবেশে জড়ো করার চেষ্টা চালাচ্ছে। আর দলটির তো অতীত ইতিহাস আছেই যে, তারা আগুন সন্ত্রাস করে। সে জন্য খোঁজ পেলে তল্লাশি তো করতেই হবে।’

জাতীয় পতাকা লাঠি সঙ্গে বেঁধে রাখাকে অশনী সংকেত হিসেবে দেখেন কাদের। এজন্য বিষয়টি নিয়ে জনগণের কাছেই বিচার চেয়েছেন ওবায়দুল কাদের।

অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, ফ্রান্স, জার্মান, তুরস্ক, পাকিস্তান, কোরিয়া, ইতালি, চীন, স্পেন, অস্ট্রেলিয়াসহ বাংলাদেশে নিযুক্ত একাধিক দেশের কূটনীতিক উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের উন্নয়ন নিয়ে একটি ভিডিও চিত্র উপস্থাপন করা হয়। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহম্মদ হোসেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সবুর খান, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ও দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়াসহ অনেকেই।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সাবেক রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জমির।

Bootstrap Image Preview