বরগুনায় রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেছেন। রোববার (১৬ অক্টোবর) বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে আবেদনটি উপস্থাপন করা হয়।
২০১৯ সালের ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে নয়ন বন্ডের নেতৃত্বে একদল যুবক প্রকাশ্যে রিফাতকে কুপিয়ে জখম করেন। ইন্টারনেট ব্যবসায় জড়িত রিফাত সেদিনই বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান।
বর্বরোচিত হামলার একটি ভিডিও ক্লিপ সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে ক্ষোভ তৈরি হয়। ভিডিওতে দেখা যায় মিন্নি তার স্বামীকে হামলাকারীদের হাত থেকে রক্ষার চেষ্টা করছেন। হামলার সময় তাকে চিৎকার করতে দেখা যায়। ওই ঘটনায় হওয়া মামলায় মিন্নিকে প্রধান সাক্ষী করা হলেও পরে মামলার তদন্ত নাটকীয় মোড় নেয়। ১৬ জুলাই মিন্নিকে তার বাবার বাসা থেকে বরগুনা পুলিশ লাইনে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে এ হত্যায় সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে মনে হওয়ায় ওইদিন রাতেই মিন্নিকে গ্রেফতার দেখায় পুলিশ।
পরে একই বছরের ২৯ আগস্ট হাইকোর্ট মিন্নিকে জামিন দেন। ১ সেপ্টেম্বর ২৪ জনকে অভিযুক্ত করে প্রাপ্ত ও অপ্রাপ্তবয়স্ক—দুভাগে বিভক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়। এর মধ্যে প্রাপ্তবয়স্ক ১০ জন এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ জন রয়েছেন। ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়। পরে সাক্ষ্যগ্রহণ, যুক্তিতর্ক শেষে ৩০ সেপ্টেম্বর রায় ঘোষণা করা হয়।
অপরদিকে, বিচার শেষে ২০২০ সালের ২৭ অক্টোবর অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ জনের বিষয়ে রায় ঘোষণা করেন বরগুনা জেলা নারী ও শিশু আদালতের বিচারক মো. হাফিজুর রহমান। রায়ে ছয় জনকে ১০ বছরের কারাদণ্ড, চার জনকে পাঁচ বছর এবং এক জনকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেন। বাকি তিন জনকে খালাস দিয়েছেন আদালত।