Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৬ সোমবার, মে ২০২৪ | ২৩ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

ব্যালটেও কারচুপি হলে মামলা করে কেউ জিততে পারবে না: সিইসি

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৪:৪৮ PM
আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৪:৪৮ PM

bdmorning Image Preview


ব্যালট পেপারের নির্বাচনেও কারচুপি হলে মামলা করে জিতে কেউ সংসদে আসতে পারবেন না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।  

বুধবার (৭ জুলাই) নির্বাচন ভবনের নিজ দপ্তরে ৩৯ নাগরিকের দেওয়া বিবৃতির পরিপ্রেক্ষিতে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ব্যালট পেপারে নির্বাচন হলে যদি কারচুপি হয়, তারপরও কেউ মামলা করে জয়ী হয়ে সংসদে আসতে পারবেন না। গত ৫০ বছরে এমনটি দেখিনি।

৩৯ বিশিষ্ট নাগরিক এক বিবৃতিতে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ‘ভোটার ভেরিফায়েড পেপার অডিট ট্রেইল’ (ভিভিপিএটি) না থাকাসহ এ যন্ত্রের নানা দুর্বলতা ও ফাঁক-ফোকর নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

সিইসি বলেন, ভিভিপিএটি দিয়ে কে কাকে ভোট দিল জানা যায়, যেটা ভারতের ইভিএমে আছে। ভারতের যতো নির্বাচন হয়েছে, ওই পেপার ট্রেইল দিয়ে হেরে যাওয়ার পর কেউ এমপি পদে নির্বাচিত হয়েছেন, এমন নজির নেই।

তিনি বলেন, আমাদের দেশে যে ব্যালটে নির্বাচন হয়েছে গত ৫০ বছরে, আদালতে মামলা করে পুনর্গণনার পর সংসদে এসেছেন এই তথ্য আছে কি না? যদি না থাকে, তাহলে এই একটা জিনিস নিয়ে আপনারা এতো উঠেপড়ে লাগলেন কেন? বিগত ৫০ বছরে কোনো নির্বাচনে দেখা গেছে কী? আমাদের দেশে কারচুপি হয়, তাহলে মামলার পর কেউ তো জয়ী হয়ে আসেনি। কাজেই নির্বাচনটা সুষ্ঠুভাবে করাটাই বড় কথা।

তিনি বলেন, আমরা যদি ইভিএম তুলে দিই। আর যদি কারচুপি হয়, আমি নিশ্চিতভাবেই বলতে পারি, কেউ পরাজিত হয়ে মামলা করে পুনর্গণনা করে জয়ী হয়ে সংসদে আসতে পারবেন না। এটা গ্রাউন্ড রিয়েলিটি। আমরা এটাকে আমলে নিয়েছি।

সিইসি আরও বলেন, ভারত কিন্তু বায়োমেট্রিক দিতে পারেনি আমাদের ইভিএমের মতো। ইউরোপের কথা বলা হচ্ছে। সেটা আমি জানি না কী জন্য তারা ইভিএম তুলে দিয়েছে। ওদের ওখানে সভ্যতা ও নিয়মতান্ত্রিকতা এমন একটা পর্যায়ে এসেছে যে ইভিএম হলেই কি আর ব্যালট হলেই কি।

তিনি বলেন, জাফর ইকবাল বলেছিলেন এটা খুব জটিল মেশিন নয়। ওই হিসেবে অনেকেই বলছেন যে এটা দুর্বল যন্ত্র। যন্ত্র দুর্বল কি সবল, এটা আমার বিবেচনা করার বিষয় নয়। সবল হওয়ারও দরকার নেই, দুর্বল হওয়ারও দরকার নেই। যন্ত্র কাজ করছে কিনা, এটাই আসল বিষয়।

দেশে হাজার হাজার নির্বাচনে ইভিএম কোনো সমস্যা করেনি জানিয়ে তিনি বলেন, ডিজিটাল জালিয়াতি সম্ভব, এই কথা তো প্রথম দিন থেকেই বলা হচ্ছে, ডিজিটাল জালিয়াতি হবে, এটা ভোট চুরির মেশিন। আমরা এটা নিরসন করার জন্য প্রচুর সময় নিয়েছি। সব দলকে প্রযুক্তিবিদ নিয়ে এসে যাচাই করে দেখতে বলেছি। কিন্তু ডিজিটাল জালিয়াতি যে সম্ভব, এর পক্ষে আমরা কোনো প্রমাণ পাইনি। দলগুলো যদি নির্দিষ্ট করে না বলতে পারে, কিভাবে জালিয়াতি সম্ভব, কেউ যদি বলতে না পারে, দেখাতে না পারে, আমরা দৃঢ়ভাবে বলতে চাচ্ছি ডিজিটাল জালিয়াতি সম্ভব নয়।

তিনি বলেন, ইভিএমের পক্ষে যারা বলেছেন, তারা একেবারেই কম নয়। আমরা তাদের ভোটাভুটির জন্য ডাকিনি, মতামতের জন্য ডেকেছিলাম। আমরা সুবিধাগুলো তুলে ধরেছি। কারচুপি ও সহিংসতা নিঃসন্দেহে কমে যাবে। আমরা স্টাডি করেছি, ওখানে আমার ভোট আপনি, আপনার ভোট আমি দিতে পারবো না। ওখানে জোরাজুরি, সহিংসতা অনেকখানি কমে যাবে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ইভিএম নিয়ে কোনো সংকট দেখছি না। রাজনৈতিক অঙ্গনে যে সংকট দেখছি তা ইভিএম নিয়ে নয়, আরো মোটাদাগের সংকট। আমরা আশা করি এই সংকট কেটে যাবে। যদি ফয়সালা হয় সব ভোট ব্যালটে হবে। রাজনৈতিকভাবে শতভাগ সমঝোতা যদি হয় অসুবিধা নেই। তখন আমরা সিদ্ধান্ত নেবো।

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আর্থিক সংকটের কথা আমি আপ্রিশিয়েট করি। এটা মনে করলে মন্ত্রণালয় দেখবে। এটা দেখার দায়িত্ব আমার না। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আমার যা লাগবে, আর্থিক সঙ্কটের কারণে সরকার যদি তা না দিতে পারে, তাহলে তো আর জোর করা যাবে না।

তিনি বলেন, আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি ১৫০টি আসনে ইভিএম আর ১৫০টি আসনে ব্যালটে ভোট করার। কোনো পরিবর্তন করতে হলে আমাদের পুঙ্খানুপুঙ্খ আলোচনা করতে হবে।

Bootstrap Image Preview