উত্তম পুরুষে লেখা বুদ্ধদেব বসুর ‘রাত ভ’রে বৃষ্টি’ আসলে এক রাতের আখ্যান। অনেক আশা নিয়ে ঘর বেঁধেছিল দুই নর-নারী। কিন্তু বৃষ্টিস্নাত সেই রাতে একই ছাদের নিচে দুজন দুই বিছানায় শুয়ে আছে। তাদের মধ্যকার অন্তর্দ্বন্দ্ব এবং সেই রাতে তাদের দীর্ঘদিনের দাম্পত্য জীবনের মনোবিশ্লেষণ উপন্যাসটির মূল উপজীব্য।
নয়নাংশুর কাছে শরীরের সঙ্গে শরীরের সম্পর্ক থাকতে পারে না যদি মন সরে দাঁড়ায়; যে কারণে সে বলে, ‘...যত জ্বালা এই শরীর নিয়ে অথচ ওটাকে না হলেও চলে না। ’ উপন্যাসটি অশ্লীল তকমা পেয়েছিল। আসলে এটা নতুন সময়ে দাম্পত্যের এক করুণ আখ্যান; যে কারণে লেখক নায়কের মুখ দিয়ে বলিয়েছেন, ‘দাম্পত্যের নামে লাম্পট্য চলছে ঘরে ঘরে। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ভালোবাসা না থাকলে তাদের একত্র সহবাস গর্হিত। ’
অন্যদিকে অভিমানের সুরে মালতী বলছে, ‘কয়েক মিনিট সময়ের মধ্যে, বিনা চিন্তায় বিনা ইচ্ছায় বিনা ভালোবাসায় কি স্ত্রীলোকের গর্ভে সন্তান আসে না? আমি এখন বুঝতে পারছি যে সাত সন্তানের মা হয়েও কোনো মহিলা কুমারী থেকে যেতে পারেন—হয়তো ঘরে ঘরে এমন গৃহিণী অনেক আছেন, যাঁরা একটা বোবা শরীর নিয়ে কাটিয়ে দিয়েছেন তিরিশ বছরের বিবাহিত জীবন, আর তা তাঁরা জানেন না পর্যন্ত। ’
অনুলিখন : পিন্টু রঞ্জন অর্ক