ইউক্রেনে রাশিয়ার চলমান আগ্রাসনের মধ্যে মাতৃভূমি রক্ষায় ইউক্রেনীয়দের বীরত্বের অগুণিত ঘটনা সামনে আসছে। ট্রাক্টর দিয়ে ট্যাঙ্ক সরানো, খালি হাতে ল্যান্ড মাইন সরানো বা রাশিয়ান বাহিনীর গতিরোধ করতে গিয়ে ব্রিজ উড়িয়ে দিতে গিয়ে নিহত হওয়ার মতো দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে ইউক্রেনীয়রা।
কিন্তু, যতো দিন যাচ্ছে ভ্লাদিমির পুতিনের ভয়ংকর সব যুদ্ধাস্ত্র ব্যবহারের আশঙ্কাও বাড়ছে। সাবেক কেজিবি এজেন্ট পুতিনের আছে ব্যক্তিক্রমী যুদ্ধাস্ত্রের বিশাল সরবরাহ। এরমধ্যে আছে রোবটিক ট্যাঙ্ক আর ক্র্যাক ডগ ইউনিট।
কী ধরনের যুদ্ধাস্ত্র ব্যবহার করতে পারে রাশিয়ান বাহিনী?
রোবট ট্যাঙ্ক
উরান-৯ মিলিতারি রোবট। ছবি: টিএএসএস
আরও আগেই রাশিয়ান বিজ্ঞানীরা সেন্সর, রকেট, মেশিন গান ও আগুন নিক্ষেপকের সুবিধা সম্পন্ন চালকবিহীন রোবট ট্যাঙ্ক তৈরির ঘোষণা দিয়েছিল। এই ট্যাঙ্ক যুদ্ধক্ষেত্রে শত্রুপক্ষের ট্রেঞ্চের অবস্থান ধূলিস্মাৎ করে দিতে পারে।
ক্রেমলিনের প্রতিরক্ষা কর্মকর্তাদের দাবি, সিরিয়ায় উরান-৯ নামের এই যুদ্ধাস্ত্রের সফল টেস্টিংয়ের পর এটি যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহারের জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত।
আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স আর রিমোট কন্ট্রোল ব্যবহার করে দলবদ্ধভাবে বা নিজেই কাজ করতে সক্ষম এই রোবটিক ট্যাঙ্ক।
ফ্লায়িং কালাশনিকোভ
ল্যানসেট ড্রোন। ছবি: মারিয়ানা লেয়স্তেভা/টিএএসএস
চালকবিহীন যুদ্ধ বিমান ধ্বংস করতে 'ফ্লায়িং কালাশনিকভ' নামের ল্যানসেট ড্রোন ব্যবহার করতে পারে রাশিয়া।
যুদ্ধক্ষেত্রে নজরদারি বিমানের ওপর আঘাত হানতে এটি ব্যবহার করা হবে। এর ব্যবহারের মধ্য দিয়ে আধুনিক সময়ের যুদ্ধক্ষেত্রে প্রথম ড্রোন ডগফাইট দেখা যেতে পারে। রাশিয়া এই অস্ত্র ব্যবহার করলে ব্রিটেন ও যুক্তরাষ্ট্র তাদের নৌ-যানে এই হামলা নিয়ে চরম উদ্বেগে পড়বে।
ডগট্রুপারস
রাশিয়ান ন্যাশনাল গার্ড স্পেশাল ফোর্সের সদস্যদের সঙ্গে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্যারাটুপার কুকুর ব্যবহার করা হতে পারে।
বডি আরমর পরিয়ে প্যারাট্রুপার কুকুরদের ১৩ হাজার ফুট ওপর থেকে নামার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। বলা হচ্ছে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এই কুকুরগুলো রাশিয়ান সেনাদের নিরাপত্তা দেওয়া, উদ্ধার কাজে সহায়তা করাসহ যুদ্ধে অংশগ্রহণে সক্ষম।
ল্যান্ড-ওয়াটার ট্যাঙ্ক
রাশিয়ার উভচর ট্যাঙ্ক আছে। ছবি: সংগৃহীত
শুধু কুকুর না, উপর থেকে মাটি বা পানিতে আঘাত হানতে সক্ষম এমন ট্যাঙ্কও তৈরি করেছে রাশিয়ানরা।
স্প্রাট-এসডিএম১ নামের ১৮ টন ওজনের হালকা এই যুদ্ধাস্ত্র তিন মাইল দূর থেকে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে।
স্বয়ংক্রিয় বন্দুক
স্বয়ংক্রিয় রাইফেল। ছবি: এএফপি
ভবিষ্যতে ইউরোপিয়ান যুদ্ধক্ষেত্রে নিজ থেকে গুলি ছুড়তে সক্ষম আল কালাশনিকভ রাইফেল দেখা যেতে পারে।
শুটার ছাড়াই লক্ষ্যবস্তুকে চিহ্নিত করে ট্রিগার চাপতে পারে এই অস্ত্র।
এই অস্ত্রের প্রধান ডিজাইনার সারগে আরজুমতসেভ জানিয়েছেন, এই অস্ত্র ব্যবহারের জন্য রাশিয়ান সেনাদের শুধু ওপরের নির্দেশ পাওয়ার অপেক্ষা।
অদৃশ্য ড্রোন
চালকবিহীন এস-৭০ অখোন্তিক ড্রোন। ছবি: টিএএসএস
এস-৭০ অখোন্তিক বা হান্টার নামের স্টিলথ ড্রোনটি এর ভিন্ন এয়ারফ্রেমের কারণে শত্রুপক্ষের রাডারে ধরা পড়ে না।
বলা হচ্ছে, ড্রোনটি এক অভিযানেই মস্কো থেকে লন্ডন গিয়ে আবার ফিরে আসতে পারে।
এই ড্রোনে মিসাইল, স্পায়িং রাডার আর শত্রুপক্ষের এলাকা পর্যবেক্ষণের যন্ত্রপাতি আছে।
সূত্র: ডেলিস্টার.কো.ইউকে / tbsnews.net/bangla/