গত কয়েক সপ্তাহের টানা উত্তেজনার পর ইউক্রেনের চূড়ান্ত সামরিক অভিযান শুরু করেছে রাশিয়া। বৃহস্পতিবার টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে পুতিন ইউক্রেনে রুশ সৈন্যদের অভিযানের নির্দেশ দেওয়ার দেশটির প্রধান প্রধান কয়েকটি শহরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়েছে। এছাড়া দেশটির উত্তর উপকূলীয় সীমান্তের বেলারুশ থেকে রাশিয়ার সৈন্যরা ইউক্রেনে ঢুকতে শুরু করেছে।
ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে বিশেষ সামরিক অভিযান পরিচালনায় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন নির্দেশ দেওয়ার পর ওই সৈন্যরা বেলারুশ থেকে প্রতিবেশী এই দেশটিতে প্রবেশ করছে বলে স্থানীয় কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন।
কিয়েভের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বেশ কিছু গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, বেলারুশের সৈন্যরা রাশিয়ার আক্রমণে যোগ দিতে শুরু করেছে। এর অর্থ হচ্ছে ইউক্রেনের উত্তরাঞ্চলীয় এলাকা থেকেও আক্রমণ চলছে।
রাশিয়ার দীর্ঘদিনের মিত্র ইউক্রেনের উত্তরাঞ্চলীয় প্রতিবেশী বেলারুশ। বিশ্লেষকরা ছোট এই দেশটিকে রাশিয়ার ‘খদ্দের রাষ্ট্র’ হিসেবে অভিহিত করে থাকেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, উত্তরাঞ্চল থেকে হামলার মানে রাশিয়া ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চল আক্রমণ করছে এবং রাশিয়ার সৈন্যরা দক্ষিণের ওডেসা অঞ্চলের দিকেও অগ্রসর হচ্ছে।
রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনে প্রেসিডেন্ট পুতিন ভাষণ দেওয়ার পরপরই বৃহস্পতিবার ভোরের দিকে কিছুটা শান্ত ও নীরব ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে কয়েক দফায় বিস্ফোরণ ঘটেছে। এছাড়া কিয়েভের প্রধান বিমানবন্দরের কাছে গোলাগুলির শব্দও শোনা গেছে বলে রুশ বার্তাসংস্থা ইন্টারফ্যাক্স জানিয়েছে।
এদিকে, রাশিয়ার আগ্রাসনের মুখে দেশে মার্শাল ল জারি করতে ইউক্রেনের জাতীয় নিরাপত্তা এবং প্রতিরক্ষা পরিষদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ভ্লোদিমির জেলেনস্কি। এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে ইউক্রেনের নিরাপত্তা এবং প্রতিরক্ষা পরিষদ আজ আরও পরের দিকে জরুরি বৈঠকে বসতে পারে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
অন্যদিকে, ইউক্রেন-রাশিয়ার সামরিক সংঘাত বন্ধের সব পক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস। রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের প্রতি শান্তির আহ্বান জানিয়ে এক টুইট বার্তায় গুতেরেস বলেছেন, আজ রাতে আমার হৃদয় থেকে একটি কথাই বলার আছে:
‘প্রেসিডেন্ট পুতিন, ইউক্রেন আক্রমণ থেকে আপনার সৈন্যদের থামান। শান্তির সুযোগ দিন। ইতোমধ্যে অনেক মানুষ মারা গেছেন।’