বলিউডে বর্তমানে প্রভাবশালী তারকাদের অন্যতম একজন আনুশকা শর্মা। একজন সর্বোচ্চা পারিশ্রমিক পাওয়া অভিনেত্রী। একজন প্রযোজকও। সেইসঙ্গে ভারতীয় ক্রিকেটের সবচেয়ে দামি তারকা ও অধিনায়ক বিরাট কোহলির স্ত্রী তিনি।
তাকে চলতে হয় অনেক নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে। তাছাড়া অগনিত ভক্ত রয়েছে তার। জনসমক্ষে প্রিয় তারকাকে পেলেই সবাই সেলফি ও অটোগ্রাফ নেওয়ার জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়েন।
এইসব সামলাতে আনুশকার রয়েছে একজন বডিগার্ড। তার নাম সোনু। তার প্রকৃত নাম প্রকাশ সিং। নয় বছর ধরে আনুশকার ছায়াসঙ্গী হয়ে আছেন তিনি। দেশ হোক বা বিদেশ, এই অভিনেত্রী যেখানেই যান না কেন সঙ্গে সনুকে নিয়ে যান।
এ অভিনেত্রীর শুটিং কিংবা বাইরে বেরানো থেকে সবকিছুই দেখভাল করেন তার দেহরক্ষী। আনুশকার বিশ্বাস অর্জন করে তার পরিবারের সদস্য হয়ে উঠেছেন সনু।
এই সনুর জন্য প্রতি মাসে ১০ লাখ রুপিরও বেশি গুনতে হয় আনুশকাকে। বছর শেষে সেই অংকটা প্রায় দেড় কোটিতে গিয়ে ঠেকে।
বিরাট-অনুষ্কার চিফ বডিগার্ড প্রকাশ সিং (prakash singh) ওরফে সোনুর বার্ষিক মাইনে হল প্রায় ১.২ কোটি টাকা অর্থাৎ মাসে ১০ লক্ষ টাকা। প্রশ্ন উঠতেই পারে একজন বডিগার্ডের কেন এত মাইনে? প্রথমত: এই বডিগার্ডরা আসেন বিখ্যাত সিকিউরিটি এজেন্সি থেকে।
এই এজেন্সি থেকে সাধারণতঃ তারকাদের বডিগার্ড ও বাউন্সার সরবরাহ করা হয়। এইসব বডিগার্ড ও বাউন্সারদের রীতিমতো ট্রেনিং প্রাপ্ত হতে হয় এবং ফিট থাকতে হয়। যেহেতু তাঁরা এই এজেন্সিগুলির থেকে কাজ পান, সুতরাং এজেন্সিগুলির একটি কমিশন থাকে।
ফলে সেলিব্রিটি বডিগার্ডদের মানের বেশ কিছুটা অংশ দিয়ে দিতে হয় এজেন্সিগুলিকে। এই টাকাতেই এজেন্সিগুলির শ্রীবৃদ্ধি হয়। তাঁদের অফিসিয়াল কাজকর্মেও এই টাকা ব্যবহৃত হয়। এজেন্সিগুলির নিজস্ব কিছু উন্নত সিকিউরিটি সার্ভিস থাকে। এইধরনের এজেন্সিগুলি কিন্তু আইনত।
এদের প্রোভাইড করা সিকিউরিটি গার্ডরাও বিশ্বস্ত হন। যদি সমীক্ষা করা হয়, তাহলে দেখা যাবে, তারকাদের যতগুণ বার্ষিক আয়, তার অনেকটাই কম কিন্তু তাঁদের বডিগার্ডদের মাইনে। এইসব বডিগার্ডরা প্রয়োজনে প্রাণ বিসর্জন দিয়ে তারকাদের রক্ষা করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকেন। কিন্তু বহু বছর একই তারকার কাছে কাজ করতে করতে তাঁদের পরিবারের সদস্য হয়ে ওঠেন বডিগার্ডরা। বিরাট-অনুষ্কার সঙ্গেও প্রকাশের সম্পর্ক পারিবারিক হয়ে উঠেছে। প্রতি বছর প্রকাশের জন্মদিন পালন করেন বিরুষ্কা। অনুষ্কার মা হওয়ার সময় ও কোভিড পরিস্থিতিতে পিপিই কিট পরে একা হাতে ভিড় সামলেছেন প্রকাশ।
হয়তো অনেকেই বলবেন, তাহলে এইসব বডিগার্ডরা তারকাদের সিক্রেটও জানেন। একদমই নয়। যতই জন্মদিন পালন করা হোক, তারকারা কিন্তু নিজেদের সিক্রেট কাউকে জানতে দেন না। তবে নিরাপত্তার স্বার্থে কখনও কখনও চিফ বডিগার্ডদের কিছু সিক্রেট জানাতে হয়। কিন্তু তা চিফ বডিগার্ড অবধি সীমাবদ্ধ থাকে। চিফ বডিগার্ড কৌশলে নিরাপত্তা বেষ্টনীর পুনর্বিন্যাস করেন। এই প্রসঙ্গে জর্ডনের প্রয়াত কিং হুসায়েনের একটি কথা মনে পড়ে যায়, ‘মুকুট আসলে কাঁটা দিয়ে তৈরি’।