কাজী ওয়াসিমুল হক।। জাস্ট কিউরিয়াস, আমাদের দেশে ঘরজামাইদের এতো হীন চোখে দেখা হয় কেন? মেয়ের চেয়ে ছেলের পরিবারের আর্থিক অবস্থা খারাপ হতেই পারে, অন্য ইস্যুও থাকতে পারে। মনে করুন মেয়ের বাড়ি উত্তরার তিন নম্বর সেক্টরে, ছেলের বাড়ি পুরনো ঢাকার আগা মাসিহ লেনে, ছেলের অফিস গুলশানে, তো এখন যাতায়াতে সুবিধা পেতে হলে ছেলেকে হয় গুলশানে বা কাছাকাছি কোথাও বাড়ি ভাড়া করে থাকতে হবে, উত্তরাও একেবারে খারাপ না, তো এখন সেই ছেলের কি উত্তরাতে মেয়ের বাসায় থাকা উচিত নাকি তথাকথিত লোকলজ্জার ভয়ে আলাদা বাড়ি ভাড়া করে গুলশানে?
কোনটা বেশি প্র্যাকটিক্যাল? অন্য সমস্যাও থাকতে পারে, ছেলের বাবা-মা অতি বৃদ্ধ, নিজেরাই হাঁটতে চলতে পারেন না, ছেলে-পুত্রবধূ দুজনেই অফিস করে, এখন তারা ছেলের বৃদ্ধ পিতা-মাতার ঘাড়ে বাচ্চাদের দেখভাল চাপাবে নাকি মেয়ের কম বয়সী বাবা-মাকে দায়িত্বটা দেবে? উহু, বুয়া দিয়ে বাচ্চা পালানোর কথা বলতে যাবেন না আবার, এটা কতোখানি ঝুঁকিপূর্ণ, সেটা কেবল বাচ্চার বাবা-মায়েরা জানে!
আমার অভিজ্ঞতা বলে, মানুষ ঘরজামাইদের হীন চোখে দেখে কারণ তারা ধরে নেয় যে আর্থিক সক্ষমতা থাকলে কেউ ঘরজামাই হয় না, কথাটা বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে অনেকাংশে সত্য, কিন্তু তার মানে কি এটা দাঁড়ালো না যে কেবল অনুমিত আর্থিক দুরবস্থার কারণে একজন মানুষকে ঘৃণা বা হেয় করা হচ্ছে? এমন একটা সামাজিক মনোভাব কি নৈতিক বা ধর্মীয় দৃষ্টিতে আদৌ গ্রহণযোগ্য?
তবে এখানে একটা ব্যাপার আসলেই আছে, প্রায় সময় খরগোশের মতো বংশবৃদ্ধিকারী বাংলাদেশিদের মেয়ে জামাইদের ঘরজামাই রাখার মত রুম থাকে না, তো এই টাইপ চাপাচাপি বাসায়, যেখানে রাতে মেয়ের সঙ্গে একটু ‘ভালোবাসাবাসি’ করতে গেলে খাটের ক্যাচকোচ শব্দ শ্বশুর টু শালা সবার কানেই যায়, সেখানে ঘরজামাই হিসেবে থাকতে গেলে আসলেই দুই কান কাটা টাইপ নির্লজ্জ হতে হবে।
এনিওয়ে, আমার এই পোস্টের মূল বক্তব্য হচ্ছে ঘরজামাইদের প্রতি ঘৃণাটা নেহায়াত আমাদের সামাজিক সংস্কার, এর পেছনে কোনো যৌক্তিক, নৈতিক বা ধর্মীয় কারণ নেই।