শুল্কমুক্ত (বন্ড) সুবিধায় চট্টগ্রাম বন্দরে আসা চালানে বিপুল পরিমাণ বিদেশি ব্রান্ডের সিগারেট জব্দ করেছে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস। এ চালানে সাড়ে ১৪ কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকির অপচেষ্টা রুখে দিয়েছেন শুল্ক কর্মকর্তারা।
কাস্টম হাউস সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীর ঢাকার অদূরে সাভারের রাজ ফুলবাড়িয়া এলাকার আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ভারসেটাইল লিমিটেড চীন থেকে ক্লথিং অ্যাক্সেসরিজ ঘোষণায় একটি কনটেইনারে ২ লাখ ৪১ হাজার ৫০০ পিস প্লাস্টিক হ্যাংগার আমদানি করে।
গত ২৮ মে চীনের সাংহাই বন্দর থেকে এমভি অ্যালিয়ন জাহাজ যোগে কনটেইনারটি (GVCU 2210575) চট্টগ্রাম বন্দরে আসলে পণ্য খালাসের লক্ষ্যে আমদানিকারকের মনোনিত সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট চট্টগ্রামের জয়িতা ট্রেড করপোরেশন গত ১ জুন বিল অব এন্ট্রি (সি-৮৮৫২৯৫) জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমে নোটিং করে।
এরপর বৃহস্পতিবার (৩ জুন) পণ্য চালানের শুল্কায়ন কার্যক্রম শেষে চট্টগ্রাম বন্দরের এনসিটি ইয়ার্ড থেকে খালাসের চেষ্টাকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের অডিট, ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড রিসার্চ (এআইআর) টিম পণ্য চালানটির ডেলিভারির কাভার্ড ভ্যান তল্লাশি করে।
এ সময় কাস্টম কর্মকর্তারা পণ্যের কার্টনের গায়ে অপসারণযোগ্য স্টিকারে গাজীপুরের তুরাগ গার্মেন্টস অ্যান্ড হোশিয়ারি (BIN: 000122276-0103) মুদ্রিত অবস্থায় ভেতরে অপর দুইটি ইনার কার্টন দেখতে পান। যার ভেতরে লুকানো অবস্থায় বিদেশি বিভিন্ন ব্রান্ডের সিগারেট পাওয়া যায়। বিষয়টি তাৎক্ষণিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়ে মিথ্যা ঘোষণায় আমদানি করা সিগারেট ভর্তি কাভার্ডভ্যান ( ঢাকামেট্রো-ট-২২-৬৫৩১) বন্দরের ভেতরে আটক করেন।
সন্ধ্যা ৬টায় সংশ্লিষ্ট সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের জেটি সরকার মো. জাকির হোসেন ও জেটি সরকারের সহকারী মো. নেছার উদ্দিন, বন্দর নিরাপত্তা কর্মকর্তা ও অন্যান্য সংস্থার সদস্য ও প্রতিনিধির উপস্থিতিতে এআইআর কর্মকর্তা কর্তৃক পণ্য চালানটির শতভাগ কায়িক পরীক্ষা করা হয়। এ সময় কাভার্ডভ্যান থেকে সব পণ্য বের করে আনার পর দেখা যায়, ৩০০টি কার্টনের প্রতিটিতে সিগারেটের দুইটি ইনার কার্টন রয়েছে।
এতে বিদেশি ৩টি ব্যান্ডের মধ্যে ২০ লাখ শলাকা Esse, ২০ লাখ শলাকা Mond ও ২০ লাখ শলাকা Oris সহ মোট ৬০ লাখ শলাকা সিগারেট পাওয়া যায়। যার মোট নেট ওজন ৩ হাজার কেজি এবং আনুমানিক বাজার মূল্য সাড়ে ৪ কোটি টাকা। পণ্য চালানটিতে শর্ত সাপেক্ষে আমদানিযোগ্য পণ্য সিগারেট আমদানি করে আনুমানিক প্রায় সাড়ে ১৪ কোটি টাকা সরকারি রাজস্ব ফাঁকির অপচেষ্টা করা হয়।
কাস্টম হাউসের সহকারী কমিশনার (এআইআর) রেজাউল করিম জানান, এ ঘটনায় দোষী ব্যক্তিদের দ্রুত চিহ্নিত করে কঠোর ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিয়েছেন চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার।
এর আগেও চট্টগ্রাম কাস্টস কর্তৃপক্ষের কঠোর নজরদারি ও দৃঢ় প্রচেষ্টায় অভিনব কায়দায় মিথ্যা ঘোষণার মাধ্যমে আমদানি করা একাধিক সিগারেটের চালান বন্দরের ভেতরেই আটক করা হয়।