পদত্যাগ করে চলে গেছেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের ফাস্ট বোলিং কোচ চার্ল ল্যাঙ্গাভেল্ট। নিজ দেশ দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষ থেকে পেস বোলিং কোচের প্রস্তাব পাওয়ার পরই তিনি ছেড়ে দিয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের চাকরি। গত ২০ আগস্ট ঢাকায় আসার পর, ল্যাঙ্গাভেল্টের চাকরির বয়স চার মাসও পুরো হয়নি। এর মধ্যেই আবার নতুন বোলিং কোচ খুঁজতে হবে বিসিবিকে।
জাতীয় দলের কোচ হিসেবে বরাবরই বিদেশিদের প্রতি বেশি আগ্রহ বিসিবির। এবারও নতুন বোলিং কোচ হিসেবে বিদেশি কাউকে দেখতে পাওয়াই হবে স্বাভাবিক। সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে না হলেও, আগামী জানুয়ারিতে সম্ভাব্য পাকিস্তান সফরের আগেই নতুন ফাস্ট বোলিং কোচ নিয়োগ দেয়ার চেষ্টা করবে বোর্ড।
যেখানে বিদেশিদের অগ্রাধিকার পাওয়াটাই হবে স্বাভাবিক চিত্র। কেননা অতীতেও বারবার দেখা গেছে এমন ঘটনা। তবে বিসিবির গেম ডেভেলপমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান খালেদ মাহমুদ সুজন মনে করেন, এখন সময় এসেছে স্থানীয় কোচদের সুযোগ দেয়ার। শুরুতেই জাতীয় দলে না হলেও, যেনো অন্য দলগুলোর দায়িত্বে দেশিদেরই রাখা হয়।
এছাড়া জাতীয় দলের নতুন বোলিং কোচ হিসেবে সুযোগ দেয়া হলে তিনি নিজেও আগ্রহী বলে জানিয়েছেন। আজ (বুধবার) চট্টগ্রামের এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে ছিলো খুলনা টাইগার্সের ঐচ্ছিক অনুশীলন। সেখানে দলের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজনও।
উপস্থিত সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘সুযোগ পেলে তো সবাই আগ্রহী হবে। আমার পেশা তো কোচিং, এখানে আগ্রহের ব্যাপার অবশ্যই আছে। এর আগেও দুইবার আমি বাংলাদেশের হেড কোচ হিসেবে নিয়োগ পেয়েছি। বলাই ছিল যে, একটা নির্দিষ্ট সময়সীমার জন্য। তারপরও ধরেন যখন বাদ পড়ি, রেজাল্ট খারাপ হয় তখন খারাপ লাগে। আমি এর আগেও বলেছিলাম, হয়ত লংটার্মের জন্য করলে ভালো। শর্টটার্মের জন্য একটা ট্যুরে দলটাকে গোছানো কঠিন।’
এ সময় জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের স্থানীয় কোচেদের ব্যাপারে দৃষ্টিভঙ্গির বিষয়ে আলোকপাত করে সুজন আরও বলেন, ‘আমার দর্শন এবং অন্য কোচের দর্শন কিন্তু এক হবে না। প্রত্যেকটা কোচেরই ভিন্ন ভিন্ন দর্শন থাকে। তো ওটা নিয়ে কাজ করতে গেলে সময় লাগে। আপনাকে একটা টিমকে..., কারণ বাংলাদেশ টিমকে আমি খুব কাছ থেকে দেখি, ছেলেদের ভেতরটা জানি। খেলোয়াড়দের কাছেও কোচ হিসেবে আমাদের কতটা গ্রহণযোগ্যতা আছে স্থানীয়দের ব্যাপারে, বিদেশি কোচ আসলে একটা এক্সাইটমেন্ট থাকে সেটিও একটা ব্যাপার।’
স্থানীয় কোচদের আরও সুযোগ দেয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে সুজন বলেন, ‘বাংলাদেশে যারা ভালো কোচিং করাচ্ছে এখন তাদের একটা সুযোগ দেয়া যেতেই পারে। আমি জেমস ফস্টারের কথাই বলি এখন, মাত্র খেলা ছাড়লেন ২০১৮ সালে। উনি এখন ১ বছরের মধ্যেই কিন্তু বিপিএলের হেড কোচ। সে সুযোগটা কিন্ত আমাদের ছেলেদের নেই। বিসিবির উচিত, স্থানীয় কোচদের তুলে আনা কাজের সুযোগ করে দেয়া। সেটা জাতীয় দল হতে পারে, এইচপিতে হতে পারে। কারণ অনূর্ধ্ব-১৯ দলেও দেখি বিদেশি কোচ আছে। যদিও গেম ডেভেলপমেন্টের চেয়ারম্যান আমি। দোষটা আমারও কিছুটা আছে। আমি মনে করি এখানেও লোকাল কোচদের নিয়ে চিন্তা করতে পারি, জুনিয়র টিমে কেন নয়?’
তিনি আরও বলেন, ‘পাশের দেশ শ্রীলঙ্কাতেও দেখেন সেখানকার অনেক কোচ বিদেশে কোচিং করাচ্ছে। এখানে কিন্তু আমরা পিছিয়ে আছি। পাকিস্তানে করছে, ভারতে তো করছেই। এখানে আমরা পিছিয়ে আছি। নিজের দেশেই কাজ করার সুযোগ পাচ্ছি না। বাইরে কাজ করার সুযোগটা কীভাবে পাব আসলে। বাংলাদেশের কোচদের তুলে আনার সময় হয়েছে এখন।’