জামালপুরে মাদারগঞ্জ উপজেলার আদারভিটা ইউনিয়নের নগর গ্রামের বধ্যভূমির ওপর পাকা সড়ক নির্মাণের ফলে ৬ জন শহীদের গণকবর চাপা পড়ে গিয়েছে। ১৯৯০ সালে একটি বহুজাতিক দাতা সংস্থা সড়কটি নির্মাণ করে।
জানা যায়, শহীদ পরিবার ও এলাকাবাসীর বাধার মুখেও সড়কটি নির্মাণে সায় দেন ওই ইউনিয়নের তৎকালীন সাবেক চেয়ারম্যান ঈসমাইল হোসেন।
উপজেলার নগর গ্রামের রশিদ মিয়াসহ অনেকে জানান, ১৯৭১ সালের সেপ্টেম্বর মাসের কোনো এক দিন উপজেলার আদারভিটা ইউনিয়নের নগর গ্রামে ঢোকে পাক বাহিনী। এ সময় তারা জিপ থামিয়ে উর্দুতে ওই গ্রামের বাকপ্রতিবন্ধী মেছের আলীকে মাদারগঞ্জ সদরের যাওয়ার রাস্তা জানতে চায়। মেছের ভাষা বুঝতে না পেরে চুপ থাকায় এক পাকসেনা তাকে চড় মারে। এতে ক্ষুব্ধ মেছের তাদের জিপে ইট ছোঁড়ে। সঙ্গে সঙ্গে পাকসেনারা জিপ থেকে নেমে তাকে ব্রাশ ফায়ারে হত্যা করে।
পরে গ্রামের আ. গনি, কদ্দুছ, নুর হোসেন, ঘোতা মিয়া ও ভোলা মিয়া এগিয়ে আসেন। ঘটনার প্রতিবাদ করলে তাদেরও হত্যা করা হয়। এ দৃশ্য দেখে লোকজন ওই গ্রাম ছেড়ে পালায়। এরপর হানাদাররা গ্রামে ঢুকে ব্যাপক ধ্বংসলীলা চালায় এবং অগ্নিসংযোগ করে পুরো গ্রাম জ্বালিয়ে দেয়। দু-তিন দিন পর অন্য গ্রাম থেকে লোকজন এসে ওই ছয় শহীদের লাশ একটি ডোবা থেকে তুলে রাস্তার পাশে কবর দেয়।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর আওয়ামী লীগের তৎকালীন এমপি করিমুজ্জামান তালুকদার এবং আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রফিক উদ্দিন তালুকদারসহ প্রশাসনের লোকজন গণকবরটি পরিদর্শন করেন। তারা স্থানটি বধ্যভূমি হিসেবে চিহ্নিত করেন। কিন্তু রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর থেকে স্থানটি অরক্ষিত ও অযত্নে পড়ে থাকে, ঝোপ ঝাড়ে ভরে যায়।
এলাকাবাসীর দাবি, অবিলম্বে বধ্যভূমিটি সংরক্ষণ করে এখানে স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হোক।