প্রতিদিনই কয়েক কাপ চা পান না করলে যেন দিনটাই পানসে হয়ে যায় আমাদের। আর চা পানের ক্ষেত্রে টি-ব্যাগটাও একটা বড় ভূমিকা রাখছে এখন।
চা শরীরের জন্য বেশ উপকারি হলেও যে টি-ব্যাগ ব্যবহার করি আমরা, তা কিন্তু স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ক্ষতির কারণ হতে পারে।
সকলেই তো জানি টি-ব্যাগ কাগজের তৈরি। তবে চায়ের সঙ্গে প্লাস্টিক শরীরে যাচ্ছে কীভাবে? কিন্তু সকলেই যা জানি না তাহলে, টি-ব্যাগ কাগজের তৈরি হলেও সেটি সিল করা হয় পলিপ্রোপাইলিন দিয়ে। এই পলিপ্রোপাইলিন এক ধরনের প্লাস্টিক।
কানাডার ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয় এই নিয়ে গবেষণা শুরু করে চমকে ওঠেন। তারা দেখতে পান, চায়ের সঙ্গে আসলেই ‘বিষ’ পান করছে মানুষ। এখন কোনো কোনো কোম্পানি আবার নেটের টি-ব্যাগ তৈরি করে। কিন্তু সেই নেটের অন্যতম উপাদানও প্লাস্টিক। সুতরাং এই টি-ব্যাগগুলোও একই রকম ক্ষতিকর।
এক কাপ গরম পানিতে টি-ব্যাগ ডোবালে কতটা প্লাস্টিক মিশছে, তা জানতে একটি পরীক্ষা করেন ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা। তারা বাজার থেকে কেনেন চার রকমের টিব্যাগ। পরে টি-ব্যাগগুলো কেটে চায়ের গুঁড়ো বের করে নেন।
তারপর ফুটন্ত গরম পানিতে সেই খালি ব্যাগটি ফেলে দেন। অনুবীক্ষণ যন্ত্রে তারা দেখেন, এক–একটি টি-ব্যাগ থেকে ১১৬০ কোটি মাইক্রোপ্লাস্টিক খণ্ড এবং ৩১০ কোটি ন্যানো প্লাস্টিক খণ্ড পানিতে মিশছে। দেখে তো রীতিমতো গবেষকরা চমকেই ওঠেন।
গবেষক নাথালি তুফেঙ্কজি জানিয়েছেন, টেবিল সল্টে মাইক্রোপ্লাস্টিক মিশে থাকে। এক গ্রাম লবণে ০.০০৫ মাইক্রোগ্রাম প্লাস্টিক মিশে থাকে। সেখানে এক কাপ চায়ে ১৬ মাইক্রোগ্রাম প্লাস্টিক মেশে।
এই প্লাস্টিক শরীরে কতটা ক্ষতি করছে, তা জানার জন্য আরো একটি পরীক্ষা করেন গবেষকেরা। কয়েকটি মাছিকে এই টি-ব্যাগ ডোবানো পানি পান করানো হয়। এতে তারা যদিও মারা যায়নি, তবে তাদের ব্যবহারে দারুণ পরিবর্তন দেখা যায়। এই নিয়ে আরো গবেষণা চলছে।
টি-ব্যাগ ডোবানো এক কাপ চা মুখে তোলার আগে এখনই সতর্ক হোন। মুহূর্তের মধ্যে শরীর চাঙ্গা করে দেয়া টি-ব্যাগ ভবিষ্যতে আপনার জন্য মৃত্যু ডেকে আনছে কিনা, তা কে জানে!