বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের বিজ্ঞাপন প্রচারের সহজ মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করছে গাছ। টিনে, কিংবা লেমিনেটিং পেপারে আচ্ছাদিত ডাক্তারদের চেম্বার, চিকিৎসালয়, নতুন, পুরাতন দোকানীর প্রচার, বাড়ি ভাড়া, সাবলেট থেকে শুরু করে ছোট-বড় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন পেরেক ঠুকে লাগানো হয় সড়কের পাশের গাছে। এমন নির্মম আঘাতে অনেক গাছ মারাও গেছে।
গাছেরও প্রাণ আছে। জগৎবিখ্যাত বিজ্ঞানী স্যার জগদীশচন্দ্র বসু উদ্ভিদের প্রাণ আছে তা আবিষ্কার করে চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন। প্রাণীদের মতো উদ্ভিদও আঘাত পেলে কষ্ট পায়- তা তিনি উপলদ্ধি করেছেন। সে জন্য তিনি মহান হতে পেরেছেন। পেরেক ঠুকে গাছের জীবন নাশকারীরা তা উপলব্ধি করা তো দূরের কথা বরং এ নিষ্ঠুর কাজটি নির্দ্বিধায় করেই চলছেন। পেরেক ঠুকে গাছে বিজ্ঞাপন লাগানো আইনত দন্ডনীয় অপরাধ।
আইনটি অনেকেই জানেন না। সম্প্রতি দেশের অনেক স্থানে এই ব্যাপারে কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। আর এসব নির্দেশনায় সংস্লিষ্ট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে খুঁজে বের করে শাস্তির আওতায় আনার আইনগত উদ্যোগের ঘোষণা ও রয়েছে।
সরেজমিন দেখা যায় মীরসরাই উপজেলার বিভিন্ন ডাক্তারদের চেম্বার, কিছু বস্ত্র দোকান, রাজনৈতিক ব্যানার, ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিজ্ঞাপনই সবচেয়ে বেশী চোখে পড়ছে। ছোট ছোট সাইজের পাশাপাশি বড় ও মাঝারি সাইজের বিজ্ঞাপন ও দেখা যায় অনেক স্থানে।
মীরসরাইয়ের পরিবেশ বাঁচাও ফোরামের চেয়ারম্যান প্রফেসর ডাক্তার জামশেদ আলম বলেন, আঘাত পেলে আমাদের যেমন রক্ত বের হয়, তেমনি গাছকে আঘাত করলে এক ধরনের রস বের হয়। এটি একটি অমানবিক কাজ। তাছাড়া গাছের যেখানটায় পেরেক ঢুকানো হয় সেখানটায় ইনফেকশান হয়ে গাছটি বেঁকে দুর্বল হয়ে যায়। আঘাত প্রাপ্ত হয়ে ও ব্যাথা নিয়ে গাছটিকে বাঁচতে হয় এটি খুবই পীড়াদায়ক।
মীরসরাইয়ের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন বলেন, এই বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোন আইন নেই। তবুও এমন অমানবিক কাজের জন্য ন্যুন্যতম আইনগত উদ্যোগ প্রয়োজন। এটি বন্ধে কঠোর আইন হওয়া দরকার। এ ব্যাপারে সবাইকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান নচেৎ যেসব প্রতিষ্ঠান এমন কাজগুলো করছেন তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক উদ্যোগ নেয়া হবে।