ধর্ষণের অভিযোগে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী এলাকায় অভিযান চালিয়ে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। কর্ণফুলী থানা এলাকায় টানা ১৬ ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে শুক্রবার তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। ঋণের টাকা ফেরত দিতে গিয়ে গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন এক নারী- এমন অভিযোগ পাওয়া পরে বৃহস্পতিবার দুপুর ২টায় অভিযান শুরু করে পুলিশ।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলো- কর্ণফুলী উপজেলার চরলক্ষ্যার নুরুল ইসলামের ছেলে মো. ইলিয়াছ (৩২), জুলধার মো. ইউনুচের ছেলে জনাব আলী প্রকাশ চঙ্কু (৩০), পশ্চিম চরলক্ষ্যার আবুল কালামের ছেলে ইউনুছ (২৫), চরলক্ষ্যার মো. নুরুজ্জামানের ছেলে কামাল উদ্দীন (২৮), চরলক্ষ্যার মো. ইয়াকুবের ছেলে মো. সেকান্দর (৩৩)।
পুলিশ জানিয়েছে, ধর্ষণের আগে ভুক্তভোগী নারীকে মদ খাওয়ায় তারা। এরপর উপজেলার জুলধা ইউনিয়নে একটি পরিত্যক্ত ঘরে নিয়ে গিয়ে বুধবার রাতভর ওই নারীকে ধর্ষণ করা হয়।
কর্ণফুলী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জোবায়ের সৈয়দ জানান, পাঁচজনের মধ্যে ইলিয়াছ ও কামাল তেলের জাহাজে কাজ করে। জনাব আলী ও সেকান্দরের দোকান রয়েছে। ইউনুছ সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক।
তিনি বলেন, ‘বুধবার রাতে পালাক্রমে ধর্ষণের পর মেয়েটিকে ঘটনাস্থলেই ফেলে যায় তারা। ভোরে মেয়েটি সেখান থেকে বেরিয়ে চট্টগ্রাম শহরের পাথরঘাটা এলাকায় তার বাসায় যায়। স্বজনের সঙ্গে পরামর্শ করে বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টার দিকে থানায় এসে অভিযোগ করে।’
বৃহস্পতিবার ওই নারীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে এবং গ্রেপ্তারের পর পাঁচ যুবক ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে, জানান জোবায়ের সৈয়দ।
কর্ণফুলী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মনিরুল ইসলাম রাসেল জানান, ভুক্তভোগী নারীর বাড়ি নোয়াখালী জেলায়। তার বিয়ে হয়েছে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী জেলার দক্ষিণ বন্দর গ্রামে। গ্রাম থেকে নৌকায় করে শহরে আসার পথে ইলিয়াছের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। দু’জন ভাই-বোনের সম্পর্ক পাতেন। সম্প্রতি ওই নারী স্বামী-সন্তানসহ পাথরঘাটায় একটি কলোনিতে বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করেন। মাসখানেক আগে চিকিৎসা করাতে ইলিয়াছের কাছ থেকে ৮শ’ টাকা ধার নেন ওই নারী। বুধবার সন্ধ্যার দিকে টাকাগুলো ফেরত দেওয়ার জন্য ইলিয়াছকে ফোন দেন তিনি। ইলিয়াছ ব্যস্ত আছেন জানিয়ে টাকাগুলো কর্ণফুলী এলাকায় দিয়ে আসতে অনুরোধ জানান। ওই নারী পাতানো ভাইয়ের কথায় সেখানে গিয়ে এই পরিস্থিতির শিকার হন।
তিনি জানান, ওই নারীকে চরপাথরঘাটা এলাকা থেকে রাত সাড়ে ৯টার দিকে অটোরিকশায় তুলে নেয় ইলিয়াছ। অটোরিকশা চালাচ্ছিল ইউনুছ। ইলিয়াছের সঙ্গে ছিল জনাব আলী। তারা অটোরিকশার ভেতরেই জোর করে মেয়েটিকে চোলাই মদ খাওয়ায়। এরপর জুলধা ইউনিয়নে একটি ইটভাটার পাশে পরিত্যক্ত ঘরে নিয়ে যায়। সেখানে সেকান্দর এবং কামালও যোগ দেয়। এরপর রাতভর পাঁচজন মিলে তার ওপর নির্যাতন চালায়।
জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃতরা গণধর্ষণে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে বলে জানান এসআই মনিরুল ইসলাম।