যেসব প্রাইমেট পুরুষরা দেখতে আকর্ষণীয়, তাদের অণ্ডকোষ হয়ে থাকে ছোট বলে জানিয়েছে প্রসিডিংস অব দা রয়াল সোসাইটি বি জার্নাল। প্রকাশিত এই গবেষণা বলেছে, মানুষ হিসেবে আমাদের প্রজাতিটি ‘প্রাইমেট’ বর্গের অন্তর্ভুক্ত, যে বর্গে আছে বিভিন্ন ধরনের বানর, গরিলা, হনুমান ইত্যাদি।
তথ্যে বলেছে, আকর্ষণীয় পুরুষের এমন ঘাটতি কেন থাকবে? আসলে কিন্তু বিবর্তনের দিকে দিয়েই এসেছে এ বৈশিষ্ট্যটি। অণ্ডকোষ বড় এবং পুরুষ আকর্ষণীয় হলে অন্য পুরুষরা পাত্তাই পাবে না ওই প্রজাতির নারীর কাছে। এ কারণে যাদের অণ্ডকোষ ছোট, তারা অন্যান্য দিক দিয়ে আকর্ষণীয় হয়ে থাকে।
প্রসিডিংস অব দা রয়াল সোসাইটি বি জার্নালের তথ্য মতে, প্রাইমেট বর্গের প্রাণীদের মাঝে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ‘সেক্সুয়াল কম্পিটিশন’। এ কারণে বিবর্তনের ধারায় পুরুষ প্রাইমেটদের মাঝে শারীরিক বিভিন্ন ‘অর্নামেন্ট’ বা আকর্ষণীয় বৈশিষ্ট্য দেখা যায়। যেমন ওরাংওটাংয়ের মুখের কিছু বৈশিষ্ট্য, প্রোবোসিস মাংকির বড়সড় নাক, এমনকি মানুষের দাড়ি—এ সবই নিজ প্রজাতির নারীকে আকর্ষণ করার জন্য এসেছে।
গবেষকরা এসব আকর্ষণীয় বৈশিষ্ট্য এবং অণ্ডকোষের আকৃতির মাঝে কোনো যোগসূত্র আছে কি না তা দেখার জন্য মানুষসহ আরও ১০৩টি প্রজাতির প্রাইমেটের তথ্য নেন। দেখা যায়, যাদের শরীর, বিশেষ করে মুখে আকর্ষণীয় বৈশিষ্ট্য আছে, তাদের অণ্ডকোষ ছোট হয়।
ব্যাখ্যা করতে গিয়ে গবেষকরা বলেছেন, যেসব প্রাইমেট পুরুষ দেখতে আকর্ষণীয়, তারা এভাবেই নারী সঙ্গী পেয়ে যায় বলে তাদের শুক্রাণু উৎপাদনে বেশি কষ্ট করতে হয় না, তাই তাদের অণ্ডকোষ সাধারণত ছোট হয়। অন্যদিকে যেসব প্রাইমেট দেখতে তেমন আকর্ষণীয় নয়, তাদের বংশবিস্তারের সুযোগ বেশি থাকার জন্য একবারের বেশি পরিমাণে শুক্রাণু নিঃসরণ করার দরকার হয় এবং এ কারণেই তাদের অণ্ডকোষ বড় হতে দেখা যায়।
শুধু তা-ই নয়, এটাও দেখা যায় যে, যেসব প্রাইমেট পুরুষের ক্যানাইন দাঁত বড় হয় (অর্থাৎ সে মারামারি করতে গিয়ে বেশি সুবিধা পায়) তার অণ্ডকোষও বড় হয়। গবেষণার লেখক, ইউনিভার্সিটি অব জুরিখের স্টেফান লুপোল্ড জানান, এককথায় বলতে গেলে, সবচেয়ে আকর্ষণীয় পুরুষের অণ্ডকোষ ছোট হয়।