বৃক্ষ নিধন করে ক্রমশ বেড়ে চলেছে বহুতল ভবন নির্মাণ। বাড়তি জনসংখ্যার চাপে নগরে ক্রমাগত বাড়ছে পরিবেশ দূষণ। সময়ের প্রয়োজনে নগরবাসীর দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ঘটছে। শহর অঞ্চলে গাছপালা কম থাকায় অক্সিজেন উৎপাদন কমে যাচ্ছে; অপরদিকে কার্বন-ডাই অক্সাইডের পরিমাণ বেড়ে চলেছে, যা গ্রিন হাউস প্রতিক্রিয়াকে বিশেষভাবে প্রভাবিত করে থাকে।
ছাদকৃষি ধারণার বাস্তবায়ন ঘটিয়ে রাসায়নিক মুক্ত সতেজ শাকসবজি ও ফল উৎপাদনের দিকে ঝুঁকছে অনেকেই। ছাদকৃষির মাধ্যমে পারিবারিক চাহিদা পূরণের পাশাপাশি নগরের পরিবেশ যেমন সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন রাখা যায়; তেমনিভাবে আগামী প্রজন্মের জন্য সবুজ নগরী গড়ে তোলা সম্ভব।
বর্তমানে আধুনিক ছাদকৃষিতে এক নতুন মাত্রা হিসেবে যুক্ত হয়েছে একুয়াপনিক্স প্রযুক্তি; যেখানে একইসঙ্গে সবজি ও মাছ চাষ করা যায়। একুয়াপনিক্স পদ্ধতিতে মাটি ও সারের দরকার হয় না। এ পদ্ধতিতে মাছের এমোনিয়া গঠিত বর্জ্য গাছের সার হিসেবে ব্যবহৃত হয়। নগরীর বহুতল ভবনগুলোকে ছাদকৃষির উপযোগী করে নির্মাণ করা হলে খাদ্যের জন্য গ্রামের উপর নির্ভরশীলতা হ্রাস পাবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই।
ছাদকৃষিতে আলাদা জমির প্রয়োজন হয় না বরং ছাদের অব্যবহৃত জায়গার সদ্ব্যবহার নিশ্চিত হয়। তাছাড়া কৃষি শ্রমিকের প্রয়োজন হয় না; পরিবারের সদস্যরাই গাছপালার যত্ন নিতে পারে।
বাংলাদেশের মাটি ও জলবায়ু সবজি ও ফল চাষের জন্য উপযোগী হওয়ায় বাসার ছাদ ও বারান্দার রৌদ্রোজ্জ্বল স্থানে টবে বা ড্রামে সহজেই সবজি চাষ করা যায়। ছাদে বেড তৈরি করে কিংবা টব, হাফ ড্রাম স্থাপন করে সহজেই চাষাবাদ করা সম্ভব। অবসর সময়ে সামান্য পরিচর্যায় ছাদকৃষি থেকে পাওয়া যায় পুষ্টিগুণে ভরপুর সতেজ শাকসবজি ও ফল।
খাঁচায় কবুতর, টার্কি, কোয়েল ও শৌখিন জাতের মুরগি পালন করা সম্ভব, যা ডিম ও মাংসের চাহিদা পূরণে বিশেষ ভূমিকা রাখতে সক্ষম।