ফিফথ ওয়ার্ল্ড কনফারেন্স অন মিডিয়া অ্যান্ড মাস কমিউনিকেশন (মেডকম-২০১৯) এর বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের সমন্বয়ক নির্বাচিত হয়েছেন গবেষক ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সরোজ মেহেদী। এক অফিসিয়াল চিঠিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন দ্য ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নলেজ ম্যানেজমেন্ট (টিআইআইকেএম) এর ব্যাবস্থাপনা পরিচালক ইসানকা পি. গমেজ।
দ্যা ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নলেজ ম্যানেজমেন্ট (টিআইআইকেএম)এর ব্যাবস্থাপনা পরিচালক ইসানকা পি. গমেজ এক অফিসিয়াল চিঠিতে মেহেদীকে এ পদে নিয়োগ দেন।
২০১৯ সালের ৫ থেকে ৭ এপ্রিল মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে কনফারেন্সটি অনুষ্ঠিত হবে। এতে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, ভারতসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মিডিয়া বিশেষজ্ঞরা অংশ নেবেন।
এ নিয়োগের ফলে বাংলাদেশে টিআইআইকেএম ও মেডকম-২০১৯ সংক্রান্ত যাবতীয় কাজের তদারকির দায়িত্ব পালন করবেন মেহেদী। বাংলাদেশ থেকে অংশগ্রহণে যে কেউ সরোজ মেহেদীর সাথে যোগাযোগ করে বিশেষ ছাড়ে কনফারেন্সে যোগদান করতে পারেন। পাশাপাশি সমন্বয়কের সুপারিশে রয়েছে স্কলারশিপের সুবিধাও।
এ ব্যাপারে তরুণ এ সাহিত্যিক ও গবেষক বলেন, মিডিয়া আমার ধ্যান ও জ্ঞান। আমরা ছোট্ট এ জীবনের যত কাজ করি, তার প্রায় সবই মিডিয়াকেন্দ্রিক। বিশ্বের বাঘাবাঘা গণমাধ্যম বিশেষজ্ঞদের সামনে নিজের দেশের প্রতিনিধিত্ব করবো, ভাবতেই ভালো লাগছে। নিজের জায়গা থেকে যতটা সম্ভব কাজ করে যাওয়ার চেষ্টা করবো।
গত ১৬-১৮ মার্চ মালয়েশিয়ার সানওয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত কমনওয়েলথ ইয়ুথ সামিটে নির্বাহী সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সরোজ মেহেদী। ২৫ থেকে ২৮ সেপ্টেম্বর ভারতের নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত ‘মহাত্মা গান্ধী ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন মাল্টিডিসিপ্লিনারি স্টাডিজে’ গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন তিনি।
এছাড়া ২০১৬ সালে দ্য বিথ ইউনিভার্সিটি অব অ্যাপলায়েড সায়েন্স-বার্লিন, জার্মানি, আকদেনিজ ইউনিভার্সিটি ও খোজায়েলি ইউনিভার্সিটি অব টার্কির যৌথ আয়োজনে সেকেন্ড ইন্টারন্যাশনাল কনগ্রেস অন মিডিয়া স্টাডিজে ‘অটপসি অব নিউ মিডিয়া ফ্রম আসপেক্ট অব স্যোশাল মিডিয়া’ শীর্ষক গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মেহেদী। একই বছর স্লোভাকিয়ার কনস্টানটাইন দ্য ফিলোসোফার ইউনিভার্সিটি থেকে ‘দ্য এফেক্ট অব ইন্ডিয়ান পপ কালচার অন বাংলাদেশ’শীর্ষক গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশিত হয় তার।
২০১৭ সালে ওআইসির অর্থায়নে সুদানের খার্তুমে অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড মুসলিম ইয়ুথ সামিট অ্যান্ড এক্সিবিশানে ‘রোল অব ইয়ুথ ইন স্যোশাল মুভমেন্ট অ্যান্ড স্যোশাল মিডিয়া’ এবং একই বছর ইস্তানবুলের গেলিশিম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক আয়োজিত থার্ড ইন্টারন্যাশনাল নিউ মিডিয়া কনফারেন্সে ‘স্যোশাল মিডিয়া অ্যান্ড ইটস ইমপোরটেন্স ইন মডার্ন এরা’ শীর্ষক গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মেহেদী।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সাবেক চেয়ারপারসন ও সোশ্যাল সায়েন্স ফ্যাকাল্টির সাবেক ডিন অধ্যাপক ড. হেলেনা ফেরদৌসীর সঙ্গে যৌথভাবে ‘রাশিয়া-টার্কি ক্ল্যাশ অ্যান্ড মিডিয়া ইন ২০১৫: এ স্টাডি অন বাংলাদেশি জার্নালিস্টস’ শিরোনামে একটি গবেষণাকাজ রয়েছে তার।
গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা ও যোগাযোগ বিভাগের শিক্ষক সরোজ মেহেদী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতায় পড়ার সময় দৈনিক ইত্তেফাকের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি হিসেবে কাজ শুরু করেন। ২০১৪ সালে দৈনিক যুগান্তরের স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে কাজ করার সময় তিনি তুরস্ক সরকারের বৃত্তি নিয়ে ইস্তানবুল বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতায় উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে যান। পরে তিনি ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের ফান্ড নিয়ে হাঙ্গেরির প্যাননিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও তুরস্কের কাদির হাস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইউরোপিয়ান স্টাডিজের ওপরে দু’টি ক্রেডিট প্রোগ্রাম সম্পন্ন করেন। ২০১৮ সালে ফেব্রুয়ারিতে দেশে ফিরে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতার পাশাপাশি বেশ কিছু প্রাইভেট ইন্সটিটিউটে প্রশিক্ষক হিসেবে ক্লাস নেন মেহেদী।
২০১৭ সালে জার্মানির অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থায়ন ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আমন্ত্রণে বার্লিনে একটি আন্তর্জাতিক সিম্পোজিয়ামে যোগ দেন তিনি। এছাড়া মেহেদী বেলজিয়াম, হাঙ্গেরি, অস্ট্রিয়া, ইউক্রেন, মালয়েশিয়া, তুরস্ক, ভারত প্রভৃতি দেশে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রোগ্রামেও যোগ দিয়েছেন।