Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৮ রবিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৫ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

গাজীপুর-৫: ভোটযুদ্ধ হবে আ’লীগ-বিএনপির মধ্যেই, জয়ে ফিরতে চায় জাপাও

সোহেল আহমেদ খান, কালীগঞ্জ (গাজীপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৪ নভেম্বর ২০১৮, ০২:১৯ PM
আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০১৮, ০২:১৯ PM

bdmorning Image Preview


গাজীপুর জেলায় পাঁচটি সংসদীয় আসন রয়েছে। এর মধ্যে জাতীয় সংসদের ১৯৮ নম্বর আসনটিকে ধরা হয়ে থাকে গাজীপুর-৫ আসন। আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে এ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে। তবে এদের মধ্যে দুই একজনের পোস্টার, ব্যানার দেখা গেলেও মূলত স্থানীয়ভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেই বেশি সরব মনোনয়ন প্রত্যাশীদের পক্ষের লোকজন।

তারা নানা গুণকির্তন সমৃদ্ধ স্ট্যাটাসের মাধ্যমে পোস্ট দিয়ে তাদের পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। তৃণমূল নেতাদের সমর্থন আদায়ে প্রার্থীরা নানা তৎপরতা শুরু করেছেন। মনোনয়ন পেতে এলাকায় দৌড়ঝাঁপের পাশাপাশি এসব প্রার্থী দলের হাইকমান্ডের সঙ্গেও যোগাযোগ করছেন বলে জানা গেছে। তবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্র কর্তৃক মনোনীত প্রার্থী যেই হউক গত ৫ বারের মত আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তারা তাদের আসনটি ধরে রাখতে মরিয়া।

অন্যদিকে এ আসনে গত ৪ বারের বিজয়ী বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) চায় আসনটি পুনরুদ্ধার করতে। জয়ের ধারায় ফিরতে চায় এ আসনটিতে একবার জয়লাভ করা জাতীয় পার্টিও। তবে কার্যত এ আসনে ভোটযুদ্ধ হবে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যেই।

কালীগঞ্জ পৌরসভা, উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন এবং গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ৩৯, ৪০, ৪১, ৪২ এই ৪টি ওয়ার্ড ও গাজীপুর সদর উপজেলার বাড়িয়া ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত গাজীপুর-৫ (কালীগঞ্জ) আসন। এ আসনে হালনাগাদ ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৪ হাজার ১৩৪ জন। এরমধ্যে নারী ভোটারের সংখ্যা ১ লাখ ৫০ হাজার ৬১৫ জন ও পুরুষ ১লাখ ৫৩ হাজার ৫১৯ জন। আর ওই সংখ্যক ভোটারদের মন জয় করতে আওয়ামী লীগ থেকে যেমন একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রার্থীর নাম শুনা যাচ্ছে, তেমনি শুনা যাচ্ছে বিএনপি থেকেও।

আওয়ামী লীগ বা ১৪ দলীয় মহাজোট: ১৪ দলের প্রার্থী হিসেবে বর্তমান মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি এমপি আবারো প্রার্থী হতে চান। তিনি ২০০৮ সালে নবম ও ২০১৪ সালে দশম সংসদ নির্বাচনে এ আসন থেকে সরাসরি এমপি নির্বাচিত হন। পরে তিনি মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। এর আগে তিনি গাজীপুর ও নরসিংদী জেলার সংরক্ষিত নারী আসনে মহিলা এমপি ছিলেন।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মো. মাজেদুল ইসলাম সেলিম, মেহের আফরোজ চুমকি তার নির্বাচনী এলাকার ব্যাপক উন্নয়ন করছেন। তার প্রচেষ্টায় দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা এশিয়া মহাদেশের সর্ববৃহৎ মসলিন কটন মিলস হা-মীম প্রুপের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বর্তমানে এখানে পোশাকশিল্প কারখানার মাধ্যমে স্থানীয় হাজার হাজার লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে। এক সময়ের ঝিমিয়ে পড়া কালীগঞ্জ বর্তমানে কর্ম চাঞ্চল্য ফিরে পেয়েছে। উন্নয়ন হয়েছে রাস্তা-ঘাট, মসজিদ-মাদ্রাসা, স্কুল-কলেজেরও।

প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, তাঁর বাবা শহীদ ময়েজউদ্দিন এ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক এবং বৃহত্তর ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ১৯৮৪ সালে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে অংশ নিতে গিয়ে তিনি শহীদ হয়েছিলেন।

চুমকি বলেন, বাবার আদর্শ বুকে ধারণ করে তিনি এলাকা ও এলাকার মানুষের জন্য কাজ করে চলেছেন। নারী ও যুব সমাজের ক্ষমতায়নে কাজ করছেন। আধুনিক ও উন্নত কালীগঞ্জ গড়তে সড়ক যোগাযোগ, স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ, অবকাঠামোসহ সব ক্ষেত্রে উন্নয়নকাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। শিল্প-কারখানা স্থাপন ও কর্মসংস্থানে ভূমিকা পালন করছেন। অবহেলিত কালীগঞ্জে এখন একের পর এক স্থাপিত হচ্ছে শিল্প-কারখানা। আগামী নির্বাচনেও তিনি দলীয় মনোনয়ন চাইবেন। বিগত দিনের মত এ আসনটি ধরে রাখতে স্থানীয়ভাবে সাংগঠনিক ভিত্তি মজবুত করতে পাড়ায়-মহল্লায় উঠান বৈঠক শুরু করেছেন এবং তৃণমূল নেতৃবর্গের সাথে যোগাযোগ বাড়িয়েছেন তিনি। তাই আশা করছেন প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় সভানেত্রী তাকেই মনোনয়ন দেবেন।

এ ছাড়া ডাকসুর দুইবারের সাবেক জিএস, একবারের ভিপি, ও সাবেক সংসদ সদস্য এবং বর্তমান গাজীপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মো. আখতারউজ্জামানও মনোনয়ন চাইবেন এ আসনে। তিনি ১৯৯৬ সালে ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।

আখতারউজ্জামান বলেন, ১৯৯৬ সালে তিনি জয়লাভ করেছিলেন। আওয়ামী লীগ আগামী নির্বাচনে সৎ ও জনপ্রিয়তা দেখে প্রার্থী মনোনয়ন দেবে। তাই সাধারণ মানুষ আসন্ন নির্বাচনে তাঁকে প্রার্থী হিসেবে দেখতে চাইছে। দল তাঁকে মনোনয়ন দেবে বলে তিনি আশাবাদী।

এ আসনে বাংলার মিয়া ভাই খ্যাত চিত্রনায়ক আকবর হোসেন পাঠান (চিত্রনায়ক ফারুক)ও আওয়ামী লীগের প্রার্থী হতে পারেন এমন কথাও তার কর্মী-সমর্থকদের মুখে শোনা যাচ্ছে।

চিত্রনায়ক ফারুক বলেন, ৪শ বছর ধরে এই এলাকায় আমার বাপ-দাদারা বসবাস করে আসছেন। সবার আগে এখানে নির্বাচন করার অধিকার আমারই রয়েছে। বঙ্গবন্ধু এ এলাকায় এসেছিলেন বলে আমার বাবা ‘বঙ্গবন্ধু’ বাজার নামে একটি বাজারের নামকরণ করে রেখে গেছেন। যেখানে ৫৭ বছর ধরে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ লালন করে আসছি, সেখানে নতুন করেন নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়ার কিছু নেই। এ দেশের সকল শ্রেণিপেশার মানুষ আমাকে চেনেন। তাই নেত্রী যদি মনে করেন আমাকে এখানে মনোনয়ন দিবেন তাহলে আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে দলের জন্য কাজ করতে চাই।  
    
বিএনপি বা ২০ দলীয় ঐক্যজোট: ২০ দলীয় ঐক্যজোটের প্রার্থী হিসেবে সাবেক ছাত্রদল নেতা, সাবেক সংসদ সদস্য, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল কেন্দ্রয় কমিটির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও গাজীপুর জেলা বিএনপি’র সভাপতি এ.কে.এম ফজলুল হক মিলনের নামই নেতা-কর্মীদের মুখে মুখে রয়েছে। তিনি ২০০১ ও ২০০৬ সালের নির্বাচনে এ আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। তাই সাবেক এই সংসদ সদস্য নিজের মতো করেই এলাকা গোছাচ্ছেন। এতে করে এ আসনে উভয় জোটেই হেভিওয়েট প্রার্থী রয়েছে।   

বিএনপির নেতাকর্মীরা জানায়, ফজলুল হক মিলন আগামী নির্বাচনে এ আসন থেকে নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। উপজেলার সব শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে রয়েছে তাঁর নিবিড় সম্পর্ক। তাঁর বড় গুণ এলাকার মানুষকে গভীরভাবে ভালোবাসেন তিনি। বিপদে, সমস্যা ও দুর্দিনে কাছে ছুটে যান। পাশে থাকেন।

বিএনপি নেতাকর্মীরা দাবি করে, ক্ষমতাসীন দলের নানা কর্মকাণ্ডে মানুষ অসন্তুষ্ট। আগামী নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু হলে মানুষ মিলনকেই নির্বাচিত করবে।

ফজলুল হক মিলন বলেন, বিএনপি সহায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে। বর্তমানে তাঁরা দলের চেয়ারপার্সনের মুক্তির আন্দোলন নিয়ে ব্যস্ত। দলীয় প্রধান ছাড়া তাঁরা নির্বাচনে অংশ নেবেন না দলে এমন সিদ্ধান্ত রয়েছে। নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হলে তিনি এ আসন থেকে নির্বাচন করবেন। নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে আসনটি পুনরায় উদ্ধারের সব প্রস্তুতি তাঁদের রয়েছে।

তবে বিএনপি থেকে এ আসনে আরো দুই প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে তাদের কর্মী সমর্থকদের কাছে। একজন হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মনির হোসেন অন্যজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সভাপতি আহমেদ সাইমুম।

আহমেদ সাইমুম বলেন, দীর্ঘদিন দলের সাথে আছি এবং কাজ করছি। দলের যে কোন ক্রান্তি লগ্নে ঝাঁপিয়ে পড়েছি। এখন দল যদি মনে করে আমাকে এ আসন থেকে মনোনয়ন দিবে তবে আমি প্রস্তুত। আবার আমাকে না দিয়ে দলের প্রয়োজনে সিনিয়র কাউকে দিলেও আমি দলের হয়ে তার পক্ষে কাজ করতে প্রস্তুত। কারণ সবার আগে আমি দলের সিদ্ধান্তকেই প্রাধান্য দেব।

মনির হোসেন বলেন, আসলে বিএনপির তৃণমূলের প্রত্যাশা আমি এ আসনে বিএনপির হয়ে নির্বাচন করি। তাই তৃণমূলের প্রত্যাশা পূরণ করতে এ আসনে আমিও নির্বাচন করতে মনোনয়ন চাইব। আশা করি দল বিবেচনা করবে। কারণ এই ক্রান্তি কালে দলে যাদের গেইন ইমেজ আছে, তৃণমূলে গ্রহণ যোগ্যতা আছে বর্তমান প্রেক্ষাপটে দল ওই ধরণের সিদ্ধান্তই নিবে আশা করি।  

জাতীয় পার্টি: জাতীয় পার্টির (এরশাদ) প্রেসিডিয়াম সদস্য আজম খান এ আসনে জাতীয় পার্টি থেকে প্রার্থী হবেন বলে শোনা যাচ্ছে। আবার জাতীয় পাটির স্থানীয় নেতৃবৃন্দের কেউ কেউ বলছেন জাপা নেতা আজম খান গাজীপুর-৪ (কাপাসিয়া) অথবা নরসিংদী-২ (পলাশ) আসনে জাতীয় পার্টির হয়ে লড়বে। সেক্ষেত্রে এ আসনে আজম খানের স্ত্রী উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি এবং বাংলাদেশ জাতীয় ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি রাহেলা পারভীন খান শিশির এ আসনে জাতীয় পার্টির হয়ে লড়বেন।

অন্যদিকে জাপা (কাজী জাফর) প্রেসিডিয়াম সদস্য আনোয়ারা বেগমের নাম শোনা যাচ্ছে। আনোয়ারা বেগম এ আসনে ১৯৮৬ সালে সংরক্ষিত মহিলা সংসদ সদস্য ছিলেন। বর্তমানে তার শারীরিক অবস্থা  খুব একটা ভাল না। সেক্ষেত্রে তিনি নির্বাচন নাও করতে পারেন।  

আজম খান বলেন, তিনি আগামী নির্বাচনে গাজীপুর-৫ ও নরনিংদী-২ আসন থেকে দলের কাছে মনোনয়ন চাইবেন। নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য সব প্রস্তুতি তাঁর রয়েছে।
 
অন্যান্য: অন্যদিকে বিগত দিনগুলোতে এ আসনে জামায়াত-শিবিরের কোন কার্যক্রম না থাকলেও সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য, গাজীপুর জেলা জামায়াতে ইসলামী সাধারণ সম্পাদক ও জেলা ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি মো. খাইরুল হাসান এ আসনে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের হয়ে লড়বেন বলে ফেজবুকে ভাইরাল হচ্ছে।

কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, গাজীপুর জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও কালীগঞ্জ উপজেলা কমিটির আহ্বায়ক এ্যাডভোকেট আতিকুর রহমান ভূইয়া এ আসনে দলটির প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে লড়বেন বলে শোনা যাচ্ছে। এ্যাডভোকেট আতিকুর রহমান ভূইয়া বলেন, কেন্দ্র থেকে দলীয় হাই কমান্ড চাইলে অবশ্যই তিনি দলের ডাকে সারা দিয়ে নির্বাচনে যাবেন। আর নির্বাচনে যাওয়ার জন্য তার সব ধরণের প্রস্তুতি আছে বলেও জানান এ কেন্দ্রীয় নেতা।

এ আসনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমানকে প্রার্থী হিসেবে অতি সম্প্রতি উপজেলার আরআরএন পাইলট সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের এক জনসভায় দলটির আমির চরমোনাই পীর মাওলানা সৈয়দ রেজাউল করিম ঘোষণা দিয়ে গেছেন।  

একই আসনে জাকের পার্টি বাংলাদেশের প্রার্থী হতে চান দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য, কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক, ঢাকা বিভাগীয় যুগ্ম মহাসচিব, গাজীপুর মহানগর ও জেলা কমিটির সভাপতি এ্যাডভোকেট এএনএম মনিরুজ্জান লাল মিয়া, ছাত্রফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক মো. আমিনুল ইসলাম মাহমুদ, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক কমিটির সহ-সভাপতি এবিএম জিয়াউর রহমার ওরফে ফেলু হাজি।

১৯৭৩-২০১৪ সাল ফিরে দেখা: ১৯৭৩ সালে প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন বর্তমান মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি এমপির পিতা, বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ময়েজউদ্দিন আহমেদ। তিনি ১৯৮৪ সালে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে নিজ সংসদীয় এলাকায় আততায়ীদের হাতে নিহত হন। ১৯৭৯ সালে দ্বিতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির টিকিটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন মোখলেছুর রহমান জিতু মিয়া। তৃতীয় সংসদ নির্বাচনে মোখলেছুর রহমান জিতু মিয়া বিএনপি থেকে মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়ে জয়লাভ করেন। পরে অবশ্য তিনি বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় হউন। চতুর্থ সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি থেকে এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন হাছিউদ্দিন দেওয়ান। ১৯৯১ সালে পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের টিকিটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন প্রয়াত ডাক্তার আসফার হোসেন মোল্লা। ১৯৯৬ সালের ষষ্ঠ সংসদ নির্বাচনে ডাকসুর দুইবারের সাবেক জিএস, একবারের ভিপি ও বর্তমান গাজীপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আখতাউজ্জামান আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে সাংসদ নির্বাচিত হন। ২০০১ সালে সপ্তম ও ২০০৬ সালে অষ্টম সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি, বিএনপির ঢাকা বিভাগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি এ.কে.এম ফজলুল হক মিলন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০০৮ সালে নবম ও ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় বীর প্রয়াত ময়েজউদ্দিন আহমেদের কন্যা মেহের আফরোজ চুমকি আওয়ামী লীগ তথা ১৪ দলীয় জোটের মনোনয়ন নিয়ে পরপর ২ বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। বর্তমানে তিনি মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মতো অতি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। 

Bootstrap Image Preview