প্রায় মাসখানেক যাবত উচ্চ মূল্য স্থিতিশীল থাকা পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমলেও ধর্মঘটের কারণে ফের বেড়ে গিয়েছিল দাম। তবে সপ্তাহের ব্যবধানে ফের কেজিতে ৫ টাকা কমেছে পেঁয়াজের দাম।
আজ শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার, হাতিরপুল বাজার, মিরপুর -৬ নম্বর বাজার ও মোহাম্মদপুর টাউন হল বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে পেঁয়াজের দাম উচ্চমূল্যে স্থিতিশীল থাকলেও আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজের দাম কমায় পেঁয়াজের কিছুটা কমতে শুরু করেছে। এছাড়া ধর্মঘটের সময় পণ্য পরিবহনে কিছুটা সমস্যার কারণে বেড়েছিল পেঁয়াজের দাম। তবে এখন পণ্য পরিবহন স্বাভাবিক হওয়ায় ফের কমতে শুরু করেছে দাম। তাছাড়া সামনে নতুন পেঁয়াজ বাজারে উঠলে পেঁয়াজের দাম আরো কমতে পারে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়। যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকায়। আর প্রতি কেজি আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২৫-৩০ টাকায়। যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকায়।
পেঁয়াজের দাম কমার কারণ জানতে চাইলে কারওয়ানবাজারের ব্যবসায়ী নজরুল বিডিমর্নিংকে বলেন, পরিবহন ধর্মঘটের সময় বাজারে পর্যাপ্ত পরিমাণ পেঁয়াজের সরবরাহ ছিল। যারাই বেশি দামে বিক্রি করেছে তারা মূলত অধিক মুনাফার আশায় এ কাজটি করেছে।
তিনি বলেন, সামনে নতুন পেঁয়াজের মৌসুমে দাম আরও কমবে। এদিকে দাম কমেছে শীতের আগাম সবজির। ধর্মঘটের প্রভাবে দাম বাড়লেও ধর্মঘট প্রত্যাহার হওয়ার পর কমেছিল শিমের দাম। বাজারে প্রতি কেজি শিম বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকায়। এ প্রসঙ্গে কারওয়ানবাজারের সবজি বিক্রেতা আলানুর বিডিমর্নিংকে বলেন, শীত পড়তে শুরু করেছে তাই সরবরাহ বেড়েছে শিমের। আর সরবরাহ বাড়ার কারণেই কমতে শুরু করেছে শিমের দাম। শীতের অন্যান্য সবজি টমেটো, ফুলকপি, পাতাকপি ও লাউ বিক্রি হচ্ছে গত সপ্তাহের দামেই।
বাজারে প্রতি কেজি টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকায়। প্রতি পিস ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকায়। প্রতি পিস পাতাকপি বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকায়। আর প্রতি পিস লাউ বিক্রি হচ্ছে ৩০-৫০ টাকায়। এদিকে গত সপ্তাহের মত স্থিতিশীল অবস্থায় অছে অন্যান্য সবজির দাম। বাজারে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ২২-২৬ টাকায়, ধুন্দল ৪০-৫০ টাকা, ঝিঙ্গা ৪০ টাকা। এছাড়া প্রতি কেজি পটল, ঢেঁড়স, ওস্তা, কাকরোল, মোগল শিম বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকায়। আর প্রতি হালি কাঁচা কলা বিক্রি হচ্ছে ২৫-৩০ টাকায়।
এদিকে অপরিবর্তীত রয়েছে মাংসের দাম। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১২৫-১৩০ টাকায়। আর প্রতি পিস কর্ক মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২২০-২৪০ টাকায়। এছাড়া বাজারে মুরগির দাম কম থাকলেও এখনো কমছে না ডিমের দাম। প্রতি ডজন ডিম আজও বিক্রি হচ্ছে ১০৫ টাকায়। ডিমের দাম কমার সম্ভাবনা আছে কিনা জাওতে চাইলে ডিম ব্যবসায়ী হামিদ বিডিমর্নিংকে বলেন, চাহিদার সাথে সরবরাহের সমন্বয় না ঘটলে কমার সম্ভাবনা নেই ডিমের। তিনি বলেন, কেবল চাহিদা মাফিক সরবরাহ বাড়লেই কমবে ডিমের দাম। অন্যদিকে আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে গরু ও খাসির মাংস। বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৪৭০ থেকে ৫০০ টাকায়। আর প্রতি কেজি খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭২০-৮০০ টাকায়।
কারওয়ান বাজারে করতে আসা দিনমজুর বাতেন বিডিমর্নিংকে বলেন, দিন দিন সব কিছুর দামই বাড়তেছে। যেভাবে সব কিছুর দাম বাড়তেছে সেভাবেতো আমাদের মজুরি বাড়ে না। আসছিলাম ফুলকপি অন্যান্য সবজি কিনতে। কিন্তু ফুলকপির যে দাম মনে হয় না কিনতে পারবো। হাতিরপুল বাজারে বাজার করতে আসা গৃহিনী বাবুনি রহমান বিডিমর্নিংকে বলেন, হাতিরপুল বাজারে সারা বছরই দাম বেশি থাকে। কিন্তু কি আর করার বাসার পাশের বাজার আর অন্যান্য বাজার থেকে টাটকা সবজি পাওয়া যায় বলেই এখান থেকে বাজার করা।