চট্টগ্রাম বন্দরে
দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে পণ্য খালাস বন্ধ রয়েছে। শুক্রবার তৃতীয় দিনের মতো পণ্য খালাস বন্ধ ছিল। এতে আমদানি পণ্য বোঝাই জাহাজের অপেক্ষার সময় বাড়ছে। লোকসানের মুখে পড়েছেন আমদানিকারকরা।
সংশ্লিষ্টরা জানান, বর্তমানে বহির্নোঙরে প্রায় ১৫ লাখ টন পণ্য নিয়ে ৫০টি মাদার ভেসেল অপেক্ষা করছে। এগুলো থেকে তিন দিনে প্রায় ২ লাখ টন পণ্য খালাস হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় তিতলির প্রভাবে সাগর উত্তাল থাকায় অভ্যন্তরীণ রুটের পণ্যবাহী লাইটারগুলো বহির্নোঙরে যেতে পারেনি। পণ্য খালাস করাও সম্ভব হয়নি। তবে জেটিতে কনটেইনার ওঠানামা স্বাভাবিক রয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় চলে গেলেও এর প্রভাবে সাগরে প্রতিকূল আবহাওয়া বিরাজ করছে। এতে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালার সৃষ্টি হয়েছে। চট্টগ্রামসহ দেশের চার সমুদ্রবন্দরে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত তিন নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত বহাল রাখে আবহাওয়া অধিদফতর।
চট্টগ্রাম বন্দর সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বন্দর চ্যানেলের গভীরতা কম হওয়ায় ১৯০ মিটার দৈর্ঘ্য ও সাড়ে ৯ মিটার গভীরতার বড় জাহাজ জেটিতে ভিড়তে পারে না। তাই বড় আকারের মাদার ভেসেলগুলো পণ্য নিয়ে বহির্নোঙরে অপেক্ষা করে। সেগুলো থেকে ক্রেনের সাহায্যে পণ্য অভ্যন্তরীণ রুটে চলাচলকারী অপেক্ষাকৃত ছোট আকারের পণ্যবাহী জাহাজে (লাইটার) বোঝাই করে আনা হয়। সাধারণত তিন নম্বর সিগন্যাল জারি থাকলে দুর্ঘটনার আশঙ্কায় লাইটারগুলো বহির্নোঙরে যায় না।
লাইটার চলাচল নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেলের যুগ্ম সচিব আতাউল করিম রঞ্জু শুক্রবার জানান, বুধবার থেকে কোনো লাইটার বুকিং নেয়নি। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় এগুলো বহির্নোঙরে যেতে না পারায় মাদার ভেসেল থেকে পণ্য খালাসও হয়নি। বন্দরের বহির্নোঙরে প্রায় ৫০টি মাদার ভেসেল পণ্য নিয়ে অপেক্ষা করছে। এগুলোতে ভোগ্যপণ্য, স্ক্র্যাপ লোহা, সিমেন্ট ক্লিংকারসহ বিভিন্ন ধরনের ১৫ লাখ টন পণ্য রয়েছে। এ ছাড়া আরও জাহাজ পণ্য নিয়ে আসছে। এ অবস্থায় জাহাজজট সৃষ্টি হতে পারে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক জানান, তিন নম্বর সতর্ক সংকেত থাকলে বহির্নোঙরে কাজ হয় না। এ সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কায় ছোট জাহাজগুলো বহির্নোঙরে যেতে পারে না। এ কারণে তিন দিন ধরে বহির্নোঙরে পণ্য খালাস ব্যাহত হচ্ছে। অপরদিকে জেটিতে খোলা পণ্য খালাসও বিঘ্নিত হচ্ছে। খোলা পণ্য ওঠানো-নামানোর সময় বৃষ্টিতে পণ্য নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে বলে আমদানি-রফতানিকারকরা ঝুঁকি নিতে চান না।